somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিলাইদহে রবি ঠাকুরের কুঠিবাড়ি

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ৭:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


শিলাইদহ কুঠিবাড়ি রবীন্দ্রস্মৃতি-বিজড়িত একটি ঐতিহাসিক স্থান ও পর্যটনকেন্দ্র। ১৮০৭ সালে রামলোচন ঠাকুরের উইলসূত্রে রবীন্দ্রনাথের দাদা দ্বারকানাথ ঠাকুর এ জমিদারির মালিক হন। রবীন্দ্রনাথ জমিদারি দেখাশোনার দায়িত্ব নিয়ে প্রথম শিলাইদহে আসেন ১৮৮৯ সালের নভেম্বর মাসে।

কবির যখন ভরা যৌবন এবং কাব্য সৃষ্টির প্রকৃষ্ট সময়, তখনই তিনি বিচরণ করেছেন শিলাইদহে। কখনও একাকী, কখনও স্ত্রী, পুত্র-কন্যা নিয়ে এসেছেন শিলাইদহে, পেতেছেন ক্ষণিকের সংসার; ঘুরে বেড়িয়েছেন বোটে, পালকিতে। যে লেখার মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ বিশ্ব দরবারে পরিচিত হন; নোবেল পুরস্কার পান, সেই লেখার স্থান শিলাইদহ হওয়ায় কুষ্টিয়াবাসী তথা দেশবাসী আজ গর্বিত। শিলাইদহে বসে রবীন্দ্রনাথ যেসব গান-কবিতা লিখেছেন, তার মধ্যে কুঠিবাড়ির পাশে বকুলতলার ঘাটে বসে লেখা “যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে” গড়াই নদীতে বোটে বসে লেখা “সীমার মাঝে অসীম তুমি বাজাও আপন সুর” “শিলাইদহে বসে লেখা “আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ”, “কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি” প্রভৃতি। কবিগুরু শিলাইদহে ছিলেন ১৯২২ সাল পর্যন্ত। এই সুদীর্ঘ ৩০ বছর এখানে অবস্থানকালে তিনি সৃষ্টি করেছেন সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ।

১৯৫৮ সাল থেকে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের ব্যবস্হাপনায় শিলাইদহ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়িটি গৌরবময় স্মৃতিরূপে সংরক্ষিত আছে । ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর কুঠিবাড়িটি গুরুত্ব অনুধাবন করে কবির বিভিন্ন শিল্পকর্ম সংগ্রহপূর্বক একে একটি জাদুঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয় । পুরো ভবনটি এখন জাদুঘর হিসেবে দর্শকদের জন্যে উম্মুক্ত । জাদুঘরের নীচ ও দ্বিতীয় তলায় ১৬টি কক্ষেই কবি রবীন্দ্রনাথ, শিল্পী রবীন্দ্রনাথ, জমিদার রবীন্দ্রনাথ, কৃষক বন্ধু রবীন্দ্রনাথ অর্থাৎ নানা বয়সের বিচিত্র ভঙ্গির রবীন্দ্রনাথের ছবি । বাল্যকাল থেকে মৃতু্শয্যার ছবি পর্যন্ত সংরক্ষিত আছে । তাছাড়াও রয়েছে শিল্পকর্ম এবং তাঁর ব্যবহার্য আসবাবপত্র দিয়ে পরিপাটি দিয়ে সাজানো।


(২) কুষ্টিয়া শহর থেকে শহর থেকে শিলাইদহ যেতে পাড়ি দিতে হয় গড়াই নদী। গড়াই নদীর মাঝ খানে বালির চর থাকায় প্রথমে এক ট্রলার দিয়ে নদীর মাঝখানে নামতে হয়। পরে অন্য ট্রলার দিয়ে বাকী অর্ধেক পার হয়ে উপারে যেতে হয়। এখানে আমরা মাঝ নদীর বালুচরে নামছি।


(৩) মাঝ নদী থেকে দ্বিতীয় ট্রলারে চড়ছি। অবশ্য অন্য পাশ দিয়া নদী পার হওয়ার জন্য ব্রীজও আছে।


(৪) এমন রাস্তা দিয়ে সিএনজি নিয়ে ছুটে গেছি আমরা শিলাইদহের দিকে।


(৫) রাস্তার পাশে কখনো দেখেছি এমন ফুলে ভরা ডোবা, কখনো ধান ক্ষেত। মূলত এটা একটা নিরেট গ্রাম।


(৬) গ্রামের বাড়ি ঘর গুলো প্রায় এমনি।


(৭) এক সময় আমরা পৌছে গেলাম কুঠিবাড়ির দরজায়।


(৮/৯) লনের ঘাস ও রঙ্গন বনে খেলা করছিল প্রজাপতিরা। কবি এসব দেখলে হয়তো সৃষ্টি হতো আরো কিছু কাব্য গ্রন্থ।




(১০) এমন পাকা রাস্তা প্রায় ১১ একরের পুরো কুঠি বাড়ি ঘুরে দেখার জন্য বিস্তৃত।


(১১) পুকুরের মাঝে ডুবে আছে একটা বোট, যদিও এটা আসল বোট নয়। রবিন্দ্রনাথের মূল পদ্মা বোটের ডামি হিসাবে বানানো হয়েছিল। এই কুঠিবাড়ি ও পদ্মা বোটে বসে রচিত হয় রবীন্দ্রসাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফসল সোনার তরী, চিত্রা, চৈতালী, কথা ও কাহিনী, ক্ষণিকা, নৈবেদ্য ও খেয়ার অধিকাংশ কবিতা, পদ্মাপর্বের গল্প, নাটক, উপন্যাস, পত্রাবলী এবং গীতাঞ্জলি ও গীতিমাল্যের গান।


(১২) ডাব গাছ, সুপারি গাছ, কাঠ বাদাম গাছ যেন, মিলেমিশে আছে ওরা আত্মীয় হেন।


(১৩) রবিন্দ্রনাথের সময়ের একটা পুরোনো আম গাছ, তার ফাঁকে দেখা যাচ্ছে রবিন্দ্র কুঠিবাড়ি।


(১৪) রবিন্দ্রনাথের আমলের পুরোনো অনেক আম গাছের সাথে নতুন আমের গাছও লাগানো হয়েছে প্রচুর। তার মাঝখান দিয়া চলাচলের জন্য নির্মিত পাকা রাস্তা।


(১৫) একটা ছোট বসন্ত বাউরি অন্য পুকুরটার অশথ্থের ডালে বসে উঁকিঝুঁকি মারছিল।


(১৬) এবার ঢুকে গেলাম বাড়িটির ভেতরের রবিন্দ্র সংগ্রহশালায়। এই সিন্দুকটি বরি ঠাকুর নিজে ব্যবহার করতেন।


(১৭) রবি ঠাকুরের সময় ব্যবহৃত আট বেহারার পালকী।


(১৮) এই ডিম্বাকৃতির টেবিলটি রবি ঠাকুর নিজে ব্যবহার করতেন।


(১৯) রবি ঠাকুর কর্তৃক ব্যবহৃত সোফা।


(২০) ইঞ্জিন চালিত স্পিডবোট (চপলা)। এটি রবি ঠাকুর নিজে ব্যবহার করতেন।


(২১) কুঠিবাড়ির দোতলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে তোলা বাড়ির সামনের দিকের ছবি।


(২২) সব শেষে কুঠিবাড়ির গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে আমি।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ৭:১১
৩৬টি মন্তব্য ৩৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×