somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দুঃখ পল্লীর নাম বানীশান্তা

২৪ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ৭:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বানীশান্তা নামটা শুনেছি অনেক আগেই, তবে প্রথম যেবার সুন্দর বনে গেলাম, সেবার লঞ্চের সারেংকে জিজ্ঞেস করেছিলাম নদীর পারে ঐযে সারি সারি কুঁড়ে এটা কোন এলাকা। তিনি জবাব দিয়েছিলেন ওটা খারাপ এলাকা, নাম বানীশান্তা। হুট করে মনে পড়ে গেল বানীশান্তা নিয়ে কোথাও পড়েছিলাম। আর তারপর থেকে বানীশান্তার বাসিন্দাদের সাথে পরিচিত হওয়ার ইচ্ছেটা মনের ভেতর পুষে রেখেছিলাম।
বানীশান্তা এক সময় দেশের সবচেয়ে বড় পতিতা পল্লী হিসেবে স্বীকৃত ছিল। ১৯৫৪ সালে যখন মংলা সমুদ্র বন্দর গড়ে ওঠে তখন থেকেই এই পতিতা পল্লীর যাত্রা। এটি তখন আজকের জায়গাটিতে ছিল না। ছিল মংলা শহরতলীর কুমারখালী খালের উত্তরে। প্রথমে ২০/২৫ যৌন কর্মী নিয়ে পতিতা পল্লীর যাত্রা শুরু হয়েছিল। তারপর যখন ব্যাপ্তি বাড়তে থাকে মংলা বন্দরের শহর বড় হয়, লোকসংখ্যা বাড়ে তখন পতিতা পল্লীটিও পশুর নদীর পশ্চিম পাড়ে স্থান্তরিত হয়।

তো আমার মনে কোথাও যাবার ইচ্ছে থাকলে সেটা কোন না কোন ভাবে পুরণ হয়েই যায়। বানীশান্তার ইচ্ছেটাও একদিন পুরণ হলো। বাগের হাটে গেলাম খানজাহান আলীর মাজারে তারপর গেলাম মংলা বন্দর দেখতে। মংলা থেকে ট্রলারে করে বানীশান্তা অনায়াসেই যাওয়া যায় জেনে আর দেরি করলাম না। ছুটলাম ট্রলার ভাড়া করে বানীশান্তার উদ্দেশ্যে। বানীশান্তা নিয়ে খুব বেশি তথ্য আমার কাছ থেকে পাওয়া যাবেনা, এটা মুলত একটা ছবি ব্লগ।


(২) মংলা থেকে ট্রলার নিয়ে ছুটছি বানীশান্তার উদ্দেশ্যে।


(৩) খাবারের সন্ধ্যানে একটা বক।


(৪) পশুর নদীতে জাল ফেলছে একজন জেলে।


(৫) দূর থেকে দেখা যাওয়া পানির তীরের এই গোল পাতায় ছাওয়া ঘরগুলোই আমাদের গন্তব্য।


(৬) কাছে আসতেই দেখা গেল তীরে উঠার জন্য বাঁশ কাঠের সেতু তৈরী করে রাখা আছে।


(৭/৮) আমাদের ট্রলার তীরের দিকে আসতে দেখেই কেউবা হাত ইশারায় কেউবা নেচে গেয়ে দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছে।




(৯) অবশেষে আমাদের ট্রলার পৌছাল বানীশান্তার ঘাটে।


(১০/১১) প্রথমেই চোখে পড়ল বেশ কিছু ছোট ছোট দোকান ঘর। মূলত এই ঘরগুলো থেকে এই পল্লী পরিচালিত হয়। প্রতিটা দোকানীর আছে বেশ কিছু ছোট ছোট খুপরী ঘর, যাতে রয়েছে ছোট্ট একটা খাট, কমদামী কিছু প্রসাধনী, ছোট্ট একটা আয়না আর রয়েছে একটা স্যাতস্যাতে পরিবেশ। পশুর নদীর তীরে হলেও নদীর নির্মল বাতাসের ওখানে প্রবেশ নিষেধ।
কয়েকটি দোকানে বসে যা শুনলাম তার সারমর্ম হলো এরকমঃ এখানে এখন তীব্র মন্দাভাব। এক সময় এখানে প্রচুর বিদেশী জাহাজ আসত, তখন ওরা পেত কড়কড়ে ডলার আর বিদেশী বোতল। তখন তারা স্থানীয় জেলেদেরকে কমই পাত্তা দিত। এখন বিদেশীরা আর এদিকটা মারায় না, আর রাক্ষুসে নদীর ভাঙ্গনে ক্রমান্নয়ে ওদের স্থলভুমি কমে যাচ্ছে বলে অনেকে স্থান পরিবর্তন করে অন্যত্র চলে যাচ্ছে।




(১২) নদীর পাড়ের রাস্তা ধরে এমাথা ওমাথা ঘুরে আরো কিছু ছবি তুললাম।


(১৩/১৪) অপেক্ষা কার জন্য এটা তাদের জানা নাই।




(১৫/১৬) জীবন কোথাও থেমে থাকে না।




(১৭) পৃথিবীর সর্বত্র মায়েরা একই রকম।


(১৮) ভাঙ্গন ঠেকিয়ে এই পল্লী আর খুব বেশী সময় টিকে থাকতে পারবে বলে মনে হয় না।


(১৯) পল্লীর পাশে পশুর নদীতে বিশাল জাহাজ ছোট কার্গোগুলোতে মাল খালাস করছে।


(২০) এবার ফেরার পালা। (আলোর বিপরিতেই সবগুলো ছবি উঠাতে হয়েছে বলে ছবিগুলোর মান ভালো হয়নি)।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:০০
২৬টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×