somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালোবাসার অনুগল্প- অনুরাগের শূন্যতা

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বিকালে বারান্দায় বসে সাফিন। এমনি সময় আফিফা চৌধুরীর ডাকে নিচে যায় সে। উনি যে অনুরোধ করলো সে রকম কাজ সে কোন দিন করেনি। দুজন লোকের সাথে দোতলায় একটি আলমারি তুলতে হবে। অগত্যা যেতেই হলো। নামাতে গিয়ে পায়ের পাতা তলে পড়ে যায়। বের করতে গিয়ে কেটে রক্ত বেরোয়। উনি দেখে অনুশোচনা আর ঘাবড়ানোর পরিবর্তে বাকি লেবার দুটোকে মুখে যাচ্ছেতাই বলে যাচ্ছিলেন আর নামছিলেন অবশিষ্ট মালামাল গুলি আনাতে। সাফিন তখনও উপরে ঠায় দাঁড়িয়ে। দেখে কষ্ট পায় নবনীতা। সেভ্লন হাতে নিয়ে পা ছুঁতে গেলে অমনি কেঁপে ওঠে সাফিন। না, না ছোঁবেন না! আমি করিয়ে নিচ্ছি। নবনীতার মায়ের যে অদ্ভুত আচরণ এই অবস্থায় দেখলে ঝড় কোন দিকে বহে এই ভেবে দ্রুত চলে যায় সে।
সকালে দোতলার বারান্দা থেকে নিচে তাকাতেই নবনীতা দেখে, পা খুঁড়িয়ে হাঁটছে সাফিন। দেখে একটা কষ্ট পায়। সাফিনের গন্তব্যের দিকে অপলক তাকিয়েই থাকে সে। কাল থেকে সাফিনকে মনে করে বুকে একটা কষ্ট অনুভব করে।
ভার্সিটিতে ক্লাস শেষ করে ডিপার্টমেন্টের সামনের বিল্ডিং এ তাকাতেই দেখে সাফিন। দেখে কষ্টে হাটছে। কাছে গিয়ে জিঙ্গাসা করে আনমনে-
কেমন আছেন?
জি এখন একটু ভালো।
আপনি আমাদের ডিপার্টমেন্টে পড়েন? হ্যা....।
ছরি..... আমাদের জন্যই আপনার কষ্ট হচ্ছে।
না- না! ঠিক আছি। ও কিছুনা। পায়ের আঘাতে কাধের ব্যাগটা নিতে সাফিনের খুব কষ্ট হচ্ছে দেখে নবনীতা এগিয়ে যায়-
দিন দিন আপনার ব্যাগটা আমাকে দিন?
আপনার কষ্ট হচ্ছে?
না...না... লাগবেনা! দিন তো? এই বলে অনেকটা জোড় করে ব্যাগটা হাতে নেয় নবনীতা। তারপর কাধে। এরপর দুজন পথ চলতে থাকে। এরপর নবনীতা যেন কথা বলেই চলেছে। মা একটু অন্যরকম! বাবা এ কথা জানলে ভিষন কষ্ট পেত। বাবা কখনো এমনটি করতেন না। মা জোতদার পরিবারের মেয়ে। নানার রক্তের গন্ধটা এখনও লেগে আছে তার কাছে। জানেন, আমার খুব খারাপ লাগে। কখনো নিজের ইচ্ছা গুলোকে পূরণ করতে পারিনা। কষ্ট গুলো আমার বুকে জমাট বাধে। মুহুর্তেই যেন মেঘমালা বয়ে যায় নবনীতার। সাফিন শুধু একবার তাকায় তার দিকে। আবার বলতে শুরু করে- এতো শাসনের মাঝে কেউ চলতে পারেনা এই পৃথিবীতে। এ জন্য বন্ধবান্ধব কেউ নেই আমার। কেউ ফোন করলে, বা কারো সাথে কথা বললে বা যেতে একটু দেরি হলে শাসনের শেষ থাকেনা। এ জন্যই আমার পাশে কেউ থাকেনা। আমার তেজপাতার জীবন। বলতে বলতে অস্ফুট কান্না আসে নবনীতার মনে। সাফিন কি বলবে ভেবে পায়না। এমনকি সান্তনা দেবার ভাষা সাফিনের নেই। এবার একটু দাড়ায় নবনীতা। সাফিনের চোখের দিকে তাকায়।আপনি কে থাকবেন আমার সাথে আমার চলার পথে? শুনে সাফিন যেন একটু দম বন্ধ করে থাকে। শুধু এটুকু বলে, আমার ব্যাগটা কি দেবেন? আমার দেরী হয়ে যাচ্ছে। ব্যাগটা নিয়ে সাফিন সামনের দিকে যাচ্ছে। পেছনে ধপাস করে কিছু পড়ার শব্দ শোনে। উতকন্ঠায় পাশ ঘুরে তার দৃষ্টি ফিরে।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৮
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

দুলে উঠে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৬

দুলে উঠে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

মন খুশিতে দুলে দুলে ‍উঠে
যখনই শুনতে পাই ঈদ শীঘ্রই
আসছে সুখকর করতে দিন, মুহূর্ত
তা প্রায় সবাকে করে আনন্দিত!
নতুন রঙিন পোশাক আনে কিনে
তখন ঐশী বাণী সবাই শুনে।
যদি কারো মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তরে নিয়ে এ ভাবনা

লিখেছেন মৌন পাঠক, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩০

তরে নিয়ে এ ভাবনা,
এর শুরু ঠিক আজ না

সেই কৈশোরে পা দেয়ার দিন
যখন পুরো দুনিয়া রঙীন
দিকে দিকে ফোটে ফুল বসন্ত বিহীন
চেনা সব মানুষগুলো, হয়ে ওঠে অচিন
জীবনের আবর্তে, জীবন নবীন

তোকে দেখেছিলাম,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×