গত দুই দিনব্যাপী সারা দেশের মানুষের মাঝে শেখ হাসিনা- খালেদা জিয়ার ফোনালাপ নিয়ে যে উত্তেজনা ও উৎকণ্ঠা ছিল তার অবসনা হলেও সমস্যার তিলার্ধ সমাধান হয় নি। ফলে ‘যে লাউ সেই কদুই’ থেকে গেছে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির।
শনিবার রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে হরতাল প্রত্যাহার করে সোমবার রাতে গণভবনে নৈশভোজের আমন্ত্রন জানান। বেগম জিয়া সেই আমন্ত্রনে কিঞ্চিৎ সারা দিয়ে বলেন, তাঁদের জোটের হরতাল কর্মসূচি থাকার কারণে ২৮ অক্টোবর নয়, ২৯ অক্টোবরের পর যে কোনদিন তিনি সংলাপে বসতে প্রস্তুত আছেন। এদিকে শেখ হাসিনার আমন্ত্রনের খবর নিমিষেই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচারিত হয়েছে। ফলে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সরকারের ইতিবাচক মনোভাবের চিত্র ফুটে উঠেছে।
আপরদিকে আলোচনা যাই হোক কেন বিএনপি যদি হরতাল প্রত্যাহর করে শেখ হাসিনার দাওয়াতে পরিপূর্ণভাবে সারা দিতো। তাহলে তাদের ভাবমূর্তি দেশের জণগণের কাছে বাড়তো বৈকি কমতো না। তখন খালেদা জিয়া তথা ১৮ দলের নেতাকর্মীরা বলতে পারতেন, আমরা তো সংলাপ ও সমঝোতার জন্য বসেছিলাম কিন্তু আওয়ামী লীগের একঘেঁয়েমি স্বার্থপর সিন্ধান্তে তাদের প্রস্তাব পত্যাখান করতে বাধ্য হয়েছি।
রাজনীতিতে ‘পলিটিক্যাল গেম’ বলে একটা কথা থাকে সেটিকে কাজে লাগিয়ে আরো কঠোর কর্মসূচী দিতে পারতো বিএনপি। শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে সাড়া না দিয়ে চরম এক সুযোগের হাতছাড়া করলো বিএনপি।
পক্ষান্তরে আওয়মী লীগ সেই সুযোগ কাজে লাগাবে তাদের বক্তৃতা-ভাষণে অথবা জনগণ শাসণে। তাই বোঝা যাচ্ছে সংলাপ বা সমঝোতা নয় সংঘাতেই পথই এখন পযর্ন্ত প্রশস্ত। সংঘাতের পথ প্রশন্ত বলে আমেরিকান রাজনীতিক টামাস পেইনের কথা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে কি? আজ থেকে ২০০ বছর আগে টমাস পেইন বলেছিলেন, `The harder the conflict the more glorious the triumph’ আথ্যার্ৎ, ‘সংঘাত যত কঠিনতর তার বিজয় তত গৌরমময়য়’|
এদেশের মানুষ বহু সংঘাত দেখেছে, অপমৃত্যু, নৃশংস হত্যা-খুন দেখেছে, লুটতরাজ, দুর্নীতি-ভণ্ডামি দেখেছে। এখন তারা ক্লান্ত। নাটোরের বনলতা সেনের ছোঁয়ায় কবি জীবনানন্দ দাশ দু-দণ্ড শান্তিতে যেমন সিক্ত হয়েছিলেন।
এদেশের জনগণও তেমনিভাবে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে দু-দণ্ড শান্তির খোজেঁ সিক্ত হতে চান। সেটি যে পদ্ধতিতেই হোক না কেন..?
সজিব তৌহিদ