somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিয়োটো প্রটোকল

০৩ রা মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে জাতিসংঘের উদ্যোগে গঠিত শিল্পোন্নত দেশগুলো গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন বাধ্যতামূলকভাবে হ্রাসকরণের আন্তর্জাতিক চুক্তি হচ্ছে কিয়োটো প্রটোকল। ভয়ংকর পরিবেশ বিপর্যয় প্রতিরোধ ও মোকাবিলা করার জন্য ১৯৯৭ সালের ১১ ডিসেম্বর জাপানের প্রাচীন রাজধানী কিয়োটোতে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি স্বাক্ষরের সাত বছর পর ২০০৫ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়। জাতিসংঘের তথ্য মতে, ১৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে শিল্প কল-কারখানাবিষয়ক কার্যক্রমে পরিবেশদূষণের জন্য মূলত দায়ী উন্নত দেশগুলো।

ওই সম্মেলনে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নসহ ১৯২টি দেশের মধ্যে কানাডা, দক্ষিণ সুদান ও যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া জাতিসংঘের অন্তর্ভুক্ত ১৯১টি দেশ উপস্থিত ছিল। কিয়োটো চুক্তির ভিত্তিতে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন ২০১২ সালের মধ্যে ৫.২ শতাংশ কমানোর বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। চুক্তি বাস্তবায়নের শর্ত অনুযায়ী বিশ্বের মোট গ্রিনহাউস গ্যাসের ৫৫ শতাংশ উৎপাদনকারী দেশগুলোর স্বাক্ষরের প্রয়োজন ছিল। প্রাথমিক পর্যায়ে নিজ নিজ দেশে উৎপন্ন গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিমাণ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

চুক্তিভুক্ত দেশগুলো যে ছয়টি গ্যাস নিঃসরণ কমানোর উদ্যোগ নেয় সেগুলো হলো কার্বন ডাই-অক্সাইড, মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইড, হাইড্রোফ্লোরোকার্বন, পারফ্লোরোকার্বন ও সালফার। চুক্তিমতে, যুক্তরাষ্ট্র ৭ শতাংশ, ইউরোপীয় দেশগুলো ৮ শতাংশ, জাপান ৬ শতাংশ, কানাডা ৬ শতাংশ গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ করবে বলে অঙ্গীকারবদ্ধ ছিল। কিন্তু বাস্তবে খুব বেশি ভূমিকা পালন করেনি। বরং সবচেয়ে বেশি গ্যাস নির্গমনকারী দুটি দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া কিয়োটো প্রটোকলের বিরোধিতা করেছে। যুক্তরাষ্ট্র প্রথমে সেই চুক্তিতে স্বাক্ষর করলেও প্রেসিডেন্ট ডাব্লিউ বুশ ২০০১ সালে অর্থনৈতিক কারণ দেখিয়ে চুক্তি থেকে সরে আসে। যুক্তরাষ্ট্র সরে আসার কারণে চীন ও ভারত চুক্তিতে স্বাক্ষর করা থেকে বিরত ছিল।

কিয়োটো প্রটোকলের অংশ হিসেবে অনেক উন্নত দেশ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাসকরণের জন্য নৈতিকভাবে দুটি পর্যায়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়। প্রথম প্রতিশ্রুতির সময় ২০০৮-২০১২ এবং দ্বিতীয়টি ২০১৩-২০২০ সাল পর্যন্ত। প্রথম চুক্তির মেয়াদ ২০১২ সালে শেষ হলে দ্বিতীয় দফায় সেই চুক্তি সংশোধন করে ২০২০ সাল নাগাদ বর্ধিত করা হলেও এখন পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন কাজ শুরু হয়নি।

ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ২৮টি দেশসহ অস্ট্রেলিয়া, বেলারুশ, কাজাখস্তান, লিচেনস্টাইন, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড, ইউক্রেনসহ ৩৭টি দেশ দ্বিতীয় চুক্তিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। সংশোধিত দ্বিতীয় চুক্তির লক্ষ্যমাত্রা থেকে সম্ভবত বেলারুশ, কাজাখস্তান ও ইউক্রেন তাদের নাম প্রত্যাহার করে নেবে। প্রথম কিয়োটো চুক্তিতে জাপান, নিউজিল্যান্ড ও রাশিয়া অন্তর্ভুক্ত থাকলেও দ্বিতীয় মেয়াদের চুক্তিতে তারা অংশগ্রহণ করেনি।

বাংলাদেশ কিয়োটো প্রটোকল চুক্তির অন্তর্ভুক্ত হয় ২০০১ সালের ২২ অক্টোবর এবং কার্যকর হয় ২০০৫ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৪২.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়ে বিগত ৫৪ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। প্রচণ্ড দাবদাহে মানুষ হাঁপিয়ে উঠেছে। আবার বর্ষা মৌসুমে অতিবৃষ্টির কারণে মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। আবহাওয়া, পরিবেশে ও জলবায়ুর এই ভারসাম্যহীন আচরণের কারণ হিসেবে উন্নত দেশগুলোর কিয়োটো প্রটোকল চুক্তি ভঙ্গকেই দায়ী করা হয়ে থাকে।

- সজিব তৌহিদ
- See more at: Click This Link
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×