আজ ছিল ৫ ই জুন, বিশ্ব পরিবেশ দিবস। ছোট বেলায় সমাজ বইয়ে পড়েছি, "আমাদের চারপাশে যা কিছু আছে তাই নিয়েই পরিবেশ।"
পরিবেশের জন্য কিছুই করা হয় না। দোতলা বাসায় গাছ পালাও বেশি লাগানো যায় না।
দু 'বছর আগে ক্লাশ ফাইভে পড়ুয়া ছেলের সখ হলো পাখি পোষবার। বাঁধা দিলাম না, কারণ এই সখ আমারও ছিলো।
জন্ম দিনে এক জোড়া লাভবার্ড গিফট করলাম।
এই গিফট পেয়ে সে কি যে খুশী হলো!
খুব যত্ন করে পাখি দুইটা পোষতে লাগলো, আমিও মাঝে মাঝে যত্ন করি।
দু'বছর পরে আজ আমার ছেলের পাখি প্রায় পঞ্চাশ জোড়.......! সাথে আবার সিলভার ডাভ ও প্রিন্সবার্ড ও আছে।
করিডোরের একটা পাশ পুরোটা পাখির ঘর করে দিয়েছি।
এখন আর আমার সকালে উঠতে এলার্মের প্রয়োজন হয় না। ভোর হতেই পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে ঘুম ভাঙ্গে.....
ধন্যবাদ দেই আমার ছেলেকে, তার জন্য আমি আজ আমার বাসায় একটা পাখির সংসার গড়ে তুলেছি।
গরম কালে ফ্যান চালিয়ে রাখতে হয় কারণ পাখিদেরও গরম লাগে। শীতকালে ঢেকে রাখতে হয় কারণ পাখিদেরও শীত লাগে।
আর এই পাখিগুলো বন্য নয়, ওদের খাঁচায় জন্ম খাঁচায় বড় হওয়া...
ওদের নিজেদের খাবার, ক্যালসিয়াম, আয়রনের পাশাপাশি শাক-সবজি ও ফলমূলও খাওয়াতে হয় পুষ্টির জন্য।
আজকাল একেবারে গ্রাম ছাড়া এই রুদ্ধ শহুরে পাখপাখালি ততটা দেখা যায়না। আমার ছোট্ট ছেলের বদৌলতে আজ আমি পরিবেশের এত সুন্দর একটা দৃশ্য আমার ঘরের কোণে দেখতে পাচ্ছি....
রাত হোক আর দিন, খাঁচার সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই ওরা কিচিরমিচির থামিয়ে স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে, যেন চিনতে পেরেছে। হঠাৎ রাতে যদি তারা কিচিরমিচির করে উঠে, দৌড়ে গিয়ে লাইট জ্বেলে দাঁড়িয়ে থাকি, যেন তাদের অভয় দিচ্ছি।
এতদিন যাবৎ পরিবারের মত থেকে, পাখিগুলো এখন আমার পরিবারের সদস্য হয়ে গেছে........
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২১