১৯৬৫ সালের যুদ্ধ। ভারত ১৭ বছর ধরে অস্ত্র জমিয়েছিলো পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধ করার জন্য। ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রী ৯ এপ্রিল ঘোষণা দিলো সকাল ১০টার সময় লাহোরের শালিমার বাগানে গিয়ে সকালের নাস্তা হবে। ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানে প্রবেশ করে ৬০০ ট্যাংক নিয়ে।
দেশ বাচাঁতে জেনারেল আইয়ুব খান সেনাদলের সামনে ভাষণ দেয়। ঐ সময় পাকিস্তানের অস্ত্র খুব একটা ছিলো না। ট্যাংক ধ্বংসে একমাত্র উপায় বুকে মাইন বেধে ট্যাংকের নিচে শুয়ে পরা। আইয়ুব খানের ভাষণ শুনে ৬০০ জন রাজী হয়ে গেলো জীবন বিসর্জন দিতে। সেই ৬০০ জনের মধ্যে অধিকাংশ ছিলো ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের মানে বাংলাদেশী।
বাংলাদেশীদের অসীম সাহসীকতায় ধ্বংস হয় ভারতের অধিকাংশ ট্যাংক। ১৭ বছরে জমানো অস্ত্র শেষ হয়ে গেছিলো মাত্র ১৭ দিনে। ভারতের তখন গো-হারার অবস্থা। বাধ্য হয়ে শাস্ত্রী চলে গেলো তাদের গডফাদার, তৎকালীন সুপার পাওয়ার সোভিয়েত ইউনিয়নের কাছে। সোভিয়েতের সরাসরি হস্তক্ষেপে তাসখন্দে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সমঝোতা হয়।
ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ ফাইটার পাইলটদের তালিকায় আছে দুইজন বাংলাদেশীর নাম [ভারতের আছে একজন। পাকিস্তানের কেউ নেই, তবে বাংলাদেশের দুইজনের নাম আছে পাকিস্তানের শিরোনামে]। এরমধ্যে একজন সাইফুল আজম, অন্যজন মুহম্মদ মাহমুদ আলম।
সাইফুল আজম ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ইসরাইলী বিমান ধ্বংস করেছেন। এছাড়া তিনি ১৯৬৫ সালের যুদ্ধে একাধিক ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেন। এজন্য তিনি ১৯৬৬ সালে পাকিস্তানের তৃতীয় সর্বোচ্চ সামরিক সম্মাননা সিতারা-ই-জুরত এ ভূষিত হন।
১৯৬৭ সালে তিনি আরব-ইজরাইল যুদ্ধে উপদেষ্টা হিসেবে যান। তবে তিনি বসে থাকেননি, আকাশে উড়েন। ইরাক এবং জর্দান ফ্রন্টে তিনি একাই অনেকগুলো ইজরাইলি জঙ্গি বিমান ধ্বংস করেন, ভূপাতিত করেন এবং বন্দী করেন বেশ কয়েকজন ইজরায়েলি সেনা।
এই বীরত্ব ও অসীম সাহসিকতারর জন্য জর্দান সরকার তাকে 'অর্ডার অব ইন্ডিপেন্ডেন্স' এবং ইরাক সরকার 'নাত আল-সুজাত' সম্মাননায় ভূষিত করেন।
২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর দেয়া এক সম্মাননায় সাইফুল আজমকে বলা হয় বিশ্বের ২২ জীবিত ঈগলের একজন। (One of the twenty two living Eagles) (১- http://bit.ly/2xxkyIK, ২-http://bit.ly/2xxkyIK)
অন্যজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী স্কোয়াড্রন লিডার এম এম আলম ৬৫ এর যুদ্ধে মাত্র ৩০ সেকেন্ডে ৫টি ভারতীয় বিমান ভূ-পাতিত করেছিলেন।
কয়েকদিন আগে বিডিআর-এর সাবেক মহাপরিচালক আলম ফজলুর রহমান বলছিলেন ২০০০ সালের সীমান্তে মায়ানমারের সাথে যুদ্ধের কথা। মায়ানমারের সেনা সদস্য তখন ২০-৩০ হাজার। সেখান বাংলাদেশের মাত্র আড়াই হাজার। তারপরেও যুদ্ধে ৬০০ বার্মীজ সেনা নিহত, মায়ানমারের সেনাপ্রধান কানে ধরে বলে- বাংলাদশের সাথে যুদ্ধ করা সম্ভব নয়।
বিডিআর ২০০১ সালে পাদুয়াতে ভারতীয় বাহীনিকে কেমন নাকানিচুবানি খাইয়েছিলো সেটা কমবেশি সবার জানা।
যুদ্ধাস্ত্রের উপর ভিত্তি করে গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার র্যাংকিং এ বাংলাদেশ ৫৭ তম আর মিয়ানমার ৩১ তম। কিন্তু ঐ যুদ্ধাস্ত্রগুলো যারা চালাবে তাদের র্যাংকিং এর খবর কিন্তু কারো কাছে নেই।
প্রথমদিকে বিপক্ষে থাকলেও, বাস্তবতা হল মিয়ানমার বেশি বাড়াবাড়ি করছে। সরকারের উচিত তাদের সমুচিত জবাব দেওয়া।
যুদ্ধ চাই...
আজ এক বড় ভাইয়ের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম। ভাই ছাত্রলীগের একজন মোটামুটি বড় নেতা। উনিও বললো, মিয়ানমার যা করছে; আমার কাছে যদি একটা একে ৪৭ থাকতো, ওদের সেনা ক্যাম্পে ঢুকে ব্রাশ ফায়ার করতাম। নিজে মরলেও, ওদের ১০/১৫ টাকে মারতাম।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:৩০