যেখানে তুমি নেই,
সে শহর আমাকে কখনও টানতে পারেনি প্রেমিকার মতন!
শুধু কাজের জন্যে থাকা হয়েছে ভালবাসা হয় নি।
যে শহরে তুমি নেই,সে শহরের গোলাপ বাগানকে মনে হয় আমার সিটি কর্পোরেশনের ডাস্টবিন
আমি এক সকালে তোমার শহরে ছুটে যাবই,
এ গল্প বলে মনকে প্রবোধ দিই রাতভর!
আমি তোমার চোখের সমুদ্রে শরীর চুবিয়ে রেখেছিলাম কবেই!
নিজের মনকে বলেছি আমার নেশাগ্রস্থ হতেই হবে তুমি নামক নিকোটিনে।
অসহ্য একাকিত্বে শান্তি দিয়েছিলো তুমি নামক একটি মেয়ে;
এই যে শূন্যতায় আজন্মকাল হাহাকার করেছি,
তাতে রঙ লাগাত পারে একমাত্র তোমার অনাদায়ী প্রেম !!
যে শহরে তুমি নেই
সে শহরে আমি বসে আছি প্রণয়ের হাত খুলে।
তুমি এসে বুকে মাথা রাখবে এমন এক বৈকালের আশায়।
প্রতিক্ষার দৃষ্টি পেতে বসে আছি তোমার আশায়!
আমি দেখছি, আমি মহাকাল ধরে দেখছি,
বসে আছি খালি তোমার ওড়নায় ঘাম মুছিয়ে দিবে এমন প্রত্যাশায় !!
যে শহরে একটা তুমি নেই,
এমন শহরে বেঁচে থাকাও কঠিন অসুখ!
তুমি নামের প্রেম কড়ানাড়ে জড়িয়ে থাকা আমার হৃদয়ের কার্ণিশে!
আমি একবার ভালবেসে তোমাকে অনুভব করেছিলাম,
তারপর থেকে তোমাকে খুঁজে ফিরে বাম বুকের মৃদু কম্পন!
তোমার গলা গড়িয়ে যে ঘাম নামে তাতেই খুঁজে পাই এক মিষ্টি অমৃত!
তোমার যৌবন পুকুরে ডুব দিয়ে পূর্ন করেছি আমার আধ ভেজা বাসনার স্বাদ,
এভাবেই পূর্ণ করি আমার পরিণয়ের পান্ডুলিপি ।
যে শহরে তুমি ছিলেনা,
সে শহরে এনে নিজেকে বন্দি করেছি একটি খাঁচায়!
আমি শুধু তুমি নামের স্বপ্ন দেখি, খালি আকাশ আমার দেখা হয় না!
দেখা হয় না তোমার বুকে কয়েকটা এঁকে দেয়া
আমার বিশুদ্ধ কামড়ের ক্ষত অথবা তোমাকে
দেখাতে পারি না কতটা বসন্ত,
কতটা একান্তে তোমার চুমুর অভাবে কতটা অভুক্ত আমি!
তোমার শরীরে যে আতরের ন্যায় ঘ্রান তার অভাবে পার করেছি কয়েকটি মাঘী পূর্নিমা!
যে শহরে তুমি থাকো না,
সে শহরের চাঁদ কি জানে তোমার শূন্যতায় কতটা দীঘল হয় আমার সময় ?
কতটা রক্তাক্ত হয়, আকুল এই হৃদয় ?
প্রাত্যহিকতার আমি যেন তোমার কেন্দ্রমুখী সুতোতে গাঁথা,ঘুরে ফিরে সেই একই তুমি;
তুমি যেনো এক গোলকধাঁধা!!
যে শহরে তুমি নেই,
সে শহরে আহত হচ্ছে বিকেলগুলো,
মনটা ডুব দিয়েছে অরণ্য বিষাদে!
তোমার শাড়ির আঁচলে আমার ফোঁড় ও ফোঁড় হৃদয়,
তুমি আমার রক্তে চির প্রবাহকাল!
তোমার অস্ত্র লাগে না! বুলেট লাগে না!
তোমার চোখ দুটোই ভয়ঙ্কর সুন্দর এক অস্ত্র!
টলমল করতে থাকা মায়াটুকুই লক্ষ বুলেট এর মত!
তুমি শুধু একটিবারের জন্য তাকাও,
চোখের উপরে চলে আসা অবিন্যস্ত চুলগুলো যত্ন করে দুই আঙ্গুল দিয়ে সরিয়ে রেখ।
একটিবার আমার দিকে তাকাও, তোমার চোখের কোণে লেপ্টে যাওয়া কাজল টুকুর কসম!
অথচ আমার এ আশার চিঠিগুলো তোমার ডাকবাক্সে পৌঁছায়নি! বলা হয়নি!
এ আকুতি তোমাকে জানানো হয়নি,
এ শহরে সবাই ভালো আছে,শুধু ভালো নেই আমি আর আমার এ শহর!
যে শহরে তুমি নেই-
সে শহরে ঘর নেই,আমার নেই ঘরে ফেরার টান!
তোমার কপাল থেকে একটুখানি সরে যাওয়া টিপের কসম!
ঐ অসহ্য সুন্দর চোখের ইশারার কসম!
আমার এ শহর তুমিহীনা এক রত্তি ও সুখ নেই!
একবার তুমি এ শহরে আসলে,
আমি রাখবো জীবন বাজি,
ঐ মায়াবী মারণাস্ত্রের নিশানায় আমি ঝাঁঝরা হতেও রাজি !!
এ শহরে অনেকেই আসে তাদের মত করে,
শুধু তোমার মত কেউ আসেনা,তুমি আসোনা!
যে শহরে তুমি নেই সে শহর,শহর থাকে না!
আমি ওভাবেই ভালোবাসি তোমাকে,যেভাবে তুমিও আমাতেই মজে থাকবে।
তাই আরণ্যক বসু'র মত আত্ম-হাহাকারে তোমায় বলি-
"আমি হবো উড়নচন্ডি এবং খানিক উস্কোখুস্কো
এই জন্মের পারিপাট্য সবার আগে ঘুচিয়ে দেব,
তুমি কাঁদলে গভীর সুখে
এক নিমেষে সবটুকু জল শুষে নেব,
মনে থাকবে?"
সানবীরের দ্বিতীয় অধ্যায়
২৬.৬.১৮
আগাঁরাগাও,ঢাকা
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৩:০১