somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশে মান্না দে'র শেষ সাক্ষাৎকার

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১০:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



গানই আমার জীবন – মান্না দে

আধুনিক গানের কিংবদন্তি শিল্পী মান্না দে ২০০৯ সালে সর্বশেষ বাংলাদেশে এসেছিলেন। ঢাকায় তাঁর এ সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন উৎপল শুভ্র

শুভ্রঃ প্রথম প্রশ্নটা গান নিয়ে নয়, আপনার বয়স নিয়ে। এই যে প্রায় ৯০ বছর বয়সেও আপনি দেশে-বিদেশে ঘুরে গান গেয়ে যাচ্ছেন। কীভাবে পারেন, বলুন তো!

মান্না দেঃ গান আমার একটা প্যাশন। গানই আমার জীবন। এ কারণেই হয়তো পারি। এই বয়সেও গান করতে পারার পেছনে আর একটা ব্যাপারও হয়তো আছে। আমি স্পোর্টসম্যান ছিলাম। কুস্তিটুস্তি করে নামও করেছিলাম। সেই জন্য আমার শরীরটার বাঁধুনি শুরু থেকেই একটু শক্ত ছিল। আমার বাবাকেও কৃতিত্ব দেব এ জন্য। তিনি আমাদের শিখিয়েছিলেন, শরীর ভালো রাখতে হলে শরীরের যত্ন করতে হবে। যতটুকু খাওয়া দরকার, ততটুকু খাবে। সময়মতো খাবে, সময়মতো শোবে, সময়মতো এক্সারসাইজ করবে, সময়মতো কাজ করবে। জীবনের এই ডিসিপ্লিনটা আমাকে খুব সাহায্য করেছে। এ কারণেই আমি ৯০ বছর বয়সেও গান করতে পারছি। এখনো প্রতিদিন সকালে আমি দু ঘণ্টা রেয়াজ করি। রেয়াজ করতে না পারলে মনে হয় দিনটাই খারাপ গেল। এখনো কানটাকে সব সময় ভীষণ টিউন করে রাখি যে, কে ভালো গাইছে এবং তাদের কাছে কিছু শেখার আছে কি না! আমি বিশ্বাস করি, যত দিন শেখা যায়, শেখা উচিত। আমি এখনো শিখছি।


শুভ্রঃ এখনো শিখছেন! তা কত বছর হলো এই ‘শিক্ষাজীবন’?

মান্না দেঃ ষাট বছর। ষাট বছরই আমার সংগীতজীবন। লেখাপড়া ভালোভাবেই করেছিলাম। তবে গ্র্যাজুয়েট হওয়ার পর সিঙ্গার হওয়াটাকেই আমি আমার জীবনের লক্ষ্য ঠিক করে নিই। কারণ ছিল হয়তো এটাই যে, কৃষ্ণচন্দ্র দে ছিলেন আমার কাকা। কাকা বিয়েটিয়ে করেননি, নিজের ছেলের মতো মানুষ করেছিলেন আমাদের। কাকার দৌলতে ভারতবর্ষের সেরা সেরা গাইয়ে-বাজিয়ে আমাদের বাড়িতে আসতেন, পারফর্ম করতেন। বাড়িতে বসেই আমরা তাই ভারতবিখ্যাত সব শিল্পীর গান শোনার সুযোগ পেয়েছিলাম। সা-রে-গা-মা-পা-ধা-নি-সা আমি শুনতে শুনতে নিজেই শিখেছিলাম। পড়াশোনা শেষ করার পর কাকা আমাকে শেখাতে শুরু করলেন। শিক্ষক হিসেবে কাকা ছিলেন খুব কড়া। কাকা কখনো দুটো মেডেল আর একটা কাপ পাওয়ার জন্য গান শেখাতেন না, কাকার তত্ত্বাবধানে শুরু করার পর আমি কাকার ওস্তাদ দবীর খাঁ সাহেবের কাছে গান শিখলাম। এরপর কাকার হাত ধরে বোম্বেতে যাওয়ার পর ওখানে কাকা আমাকে বড় বড় ওস্তাদের কাছে দিয়ে দিলেন, এর পাশাপাশি ফিল্মেও কাজ করতে লাগলাম। ভেতর থেকে একটা তাড়না ছিল, আমাকে সর্বভারতীয় গাইয়ে হতেই হবে। আমি শুধু বাংলা গান করতে চাই না, ভারতবর্ষে যত রকম গানবাজনা আছে আমি তা করতে চাই। আর বোম্বে ছিল এমন এক জায়গা, যেখানকার মূলমন্ত্র হলোঃ সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট। নিজেই নিজেকে প্রমাণ করতে হবে। আমি চ্যালেঞ্জটা নিয়েছিলাম।


শুভ্রঃআপনার ঘনিষ্ঠজনদের কাছে শুনেছি, আপনি নাকি এখনো নিজের সব কাজ নিজেই করেন। বাজার করা, কাপড়চোপড় কাচা পর্যন্ত...।

মান্না দেঃ হ্যাঁ, আমি আমার নিজের কাজ নিজেই করতে ভালোবাসি। আমি খুব সেলফ-সাফিশিয়েন্ট। আমি আতিশয্যে বিশ্বাস করি না। আর্টিস্ট হয়েছি তাতে কী, আমি খুবই প্র্যাকটিক্যাল লোক। আমি জানি, নিয়মিত রেয়াজ না করলে আমি ভালো করে গাইতে পারব না। আমি তাই রেয়াজ করি। জানি, না শিখলে আমি এগোতে পারব না। আমি শিখি। কম খেলে শরীর ভালো থাকবে। আমি কম খাই। সব মিলিয়ে আমি খুবই ডিসিপ্লিনড মানুষ।


শুভ্রঃ জীবনে কিছু যা পাওয়া সম্ভব, নাম-খ্যাতি, মানুষের ভালোবাসা...সবই তো আপনি পেয়েছেন। এর মধ্যে নিজে সবচেয়ে বড় পাওয়া মনে করেন কোনটিকে?

মান্না দেঃ আমার জীবনে সক্কলের চাইতে বড় পাওয়া আমার স্ত্রী। ও কেরালার মালাবারের মেয়ে। উচ্চশিক্ষিত, বোম্বে ইউনিভার্সিটি থেকে ইংরেজি ভাষায় এমএতে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট। ওকে দেখে প্রথম দর্শনেই প্রেম বলতে যা বোঝায়, তা-ই হয়েছিল আমার। এরপর আমরা একে অন্যকে জানলাম, বিয়ে করলাম। এই ৫৫ বছরের বিবাহিত জীবনে সব সময়ই ওকে আমার সঙ্গী হিসেবে যেমন সেরা মনে হয়েছে, তেমনি বন্ধু হিসেবেও সেরা, যেকোনো কিছু নিয়ে আলোচনা করার জন্য সেরা। ও শুধু আমার স্ত্রী-ই নয়; আমার ফ্রেন্ড, ফিলোসফার অ্যান্ড গাইড। আমার সবচেয়ে বড় সমালোচকও।


শুভ্রঃ এটা তো পুরো জীবনের পাওয়া। শুধু সংগীত জীবনটা যদি আলাদা করে নিই, তাহলে সবচেয়ে বড় পাওয়া মানেন কোনটিকে?

মান্না দেঃ সেই চাওয়া-পাওয়ার তো আর শেষ নেই। আমি যা হতে চেয়েছিলাম, সেই সর্বভারতীয় টপ সিঙ্গার হতে গেলে গোটাকতক জিনিস দরকার। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, আমি কোন অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব করছি। আমি প্রতিনিধিত্ব করছি বাংলাদেশকে। বাংলাদেশের যে গানবাজনা-রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলগীতি, অতুলপ্রসাদের গান, বাউল, ভাটিয়ালি-এগুলো তো সর্বভারতীয় হয় না। আমার সমসাময়িক যাঁরা ছিলেন-মোহাম্মদ রফি, মুকেশ, লতা মুঙ্গেশকর, আশা ভোঁসলে-সবারই এমন একটা পরিমণ্ডলে জন্ম হয়েছিল, যেখানে সর্বভারতীয় গানবাজনা হতো। ওঁরা সেখানেই জন্মেছিলেন বলে ওঁদের একটা অ্যাডভান্টেজ ছিল। একটা বাঙালির ওঁদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করাটা খুব মুশকিল ছিল।

তা সত্ত্বেও আমি সহজে হার মেনে নিইনি, ভালো ভালো ওস্তাদের কাছে শিখেছি। এ কারণেই আমি একটু অন্যভাবেও গাইতে চেয়েছি। আমার যে গায়কি, তাতে সব সময়ই একটা ক্লাসিক্যাল বেজ থাকত। বাংলা গানেও আমি এসব ইন্ট্রোডিউস করেছি। সুখের কথা, আমার বাঙালি শ্রোতারা সেটি দু হাত ভরে গ্রহণ করেছে। বাংলা ভাষাতে আমি যত শক্তই গান করি, সে গানগুলো পপুলার হতো ও লোকে গ্রহণ করত। তবে এটা হিন্দি ফিল্ডে হয়নি। কারণ হিন্দি ফিল্ডে আই ওয়াজ অ্যান আউটসাইডার। একজন বাঙালি, যে হিন্দি বা উর্দু গান গাইছে। সেখানে যাদের এটি নিজেদের ভাষা, তারা অনেকটাই এগিয়ে ছিল।

যেমন রফি ছিলেন পাঞ্জাবি, হিন্দি-উর্দু ওঁর স্বাভাবিকভাবেই আসত। আমি সেটা মেনে নিয়েছিলাম। কারণ রফির মতো গাইয়ে ভারতবর্ষে হয়নি। আমি বলছি লাইট মিউজিকের কথা এতে রফির মতো সিঙ্গার হয়নি। আমি তাই মেনে নিয়েছিলাম, রফির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামলে আমি হয়তো কিছুটা এগোতে পারব, কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারব না।

এ কারণেই বললাম, আমি মেনে নিই। যেমন কিশোর কুমার, ও যদিও বাঙালি, গাঙ্গুলী পদবি, তবে ওর জন্ম মধ্যপ্রদেশে। সেখানে ওদের কথাবার্তা চলত হিন্দিতে। ওই একটা অ্যাডভান্টেজ পেয়ে গেল সে। তার পর ছিল কিশোরের ওই গলা। অদ্ভুত রকমের একটা গলা ভগবান তাকে দিয়েছিলেন। অত বিউটিফুল ভয়েস খুব কম এসেছে।

কিশোর, রফি, বাংলা গানে হেমন্ত-ওঁদের যে ঈশ্বরদত্ত অপূর্ব গলা ছিল, আমি তা পাইনি। আমার গলার মধ্যে অত আকর্ষণীয় কিছু ছিল না। কিশোরের গলা শুনলেই যেমন মনে হতো, ‘হোয়াট আ ভয়েস!’ হেমন্তবাবুর অত মিষ্টি ভয়েস; আর রফি-ওর গায়কি, গান করার ঢং, ওটা ছিল দারুণ। এ কারণেই নিজের জায়গা করে নেওয়ার জন্য আমাকে ক্লাসিকের দিকে ঝুঁকতে হয়েছিল। ভারতবর্ষে যে ক্লাসিক্যাল গানবাজনা, সেটি ভালোভাবে রপ্ত করে আমি ওদের সঙ্গে কমপিট করতে গিয়েছিলাম। যাওয়ার পর যা দেখলাম, আমার জন্য মিউজিক ডিরেক্টররা যে গান তৈরি করতেন, সে গান আমিই গাইতাম, অন্য কাউকে দিয়ে গাওয়ানো যেত না।


শুভ্রঃ যেকোনো শিল্পীর জন্য নিজের ভাষার গান দিয়ে শুরু করাটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু আপনি বাংলা গান করলেন অনেক পরে, বোম্বেতে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর। এটা কেন?

মান্না দেঃ আমার প্রথম বাংলা গান রেকর্ড করার ঘটনাটা খুব মজার। আমি আর লতা অমর ভূপালী বলে একটা ছবির গান করছিলাম। ওই ছবিতে আমি আর লতা যখন গান রেকর্ড করছি, লতা আমাকে বলল, ‘মান্নাদা, আমি বাংলা গানের রেকর্ড বের করতে চাই।’ লতার জন্য গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের লেখা দুটি গান আমি সুর করে লতাকে শেখালাম। এরপর রেকর্ডিংয়ের জন্য তৈরি হলাম। কিন্তু জানি না কেন, লতা গাইতে পারল না অথবা গাইল না। তো আমি গেয়ে দিলাম ওই দুটি গান-’কত দূরে আর নিয়ে যাবে বল’ এবং ‘হায় হায় গো রাত যায় গো’।

ওই দুটি গান শুরুতে তেমন সাড়া না ফেললেও পরে দারুণ হিট হলো। এটাই বাংলা গানে আমার প্রথম পদার্পণ। ওই দুটি গান ভালো চলার পর এইচএমভি আমাকে বলল, প্রত্যেক বছর পুজোয় রেকর্ডিং করতে হবে। আর তখন আমি যে গানেরই সুর করি, দেখি তা হিট হয়ে যায়। আমি ভেবে দেখলাম, আমার সুর করার ধারাটা গতানুগতিক যেটা চলছিল তার চেয়ে আলাদা এবং সেটিই পাবলিক খুব পছন্দ করছে। আমি সর্বভারতীয় একটা টাচ দিয়ে সুর করতাম। লোকেও দেখল, আরে, এর সুরটা বা গায়কিটা তো আলাদা।

এই যে অন্য রকম একটা দিক যোগ করা, এটা আমি জেনে-বুঝেই করেছিলাম। কারণ হেমন্তবাবুর অমন সুন্দর গলা, ভাষাটা এমন সুন্দর বলেন তিনি এবং মিষ্টি মিষ্টি গান করেন, আমি দেখলাম, এই ধারায় আমি তার সঙ্গে কমপিট করতে পারব না। আমাকে যেটা করতে হবে, সর্বভারতীয় সাংগীতিক রূপটাকে এনে গানটাকে পরের ধাপে নিয়ে নিতে হবে। সেটি করেই আমি সফল হলাম।


শুভ্রঃ আমার প্রশ্ন ছিল, শুরুটা কি নিজের ভাষার গান দিয়ে হওয়াটাই স্বাভাবিক ছিল না?

মান্না দেঃ না, আমি কখনোই বাংলা গানের শিল্পী হতে চাইনি। আমার মনে আছে, শচীন কর্তা (শচীন দেব বর্মণ) আসতেন কাকার কাছে গান শিখতে। উনি বহুদিন কাকার কাছে গান শিখেছেন। শচীন কর্তার গান শুনে ভালো লাগত, কেমন অন্য রকম গান করেন। কথার উচ্চারণগুলো নাকে নাকে। আমার খুব পছন্দ হতো। ওগুলো নকল করে করে আমি কলেজে গাইতাম, ‘তুঁমি যে গিঁয়াছ বঁকুল বিঁছানো পঁথে, নিঁশীথে যাঁইও ফুঁলবনে’। তবে তখন আমার সর্বভারতীয় শিল্পী হওয়ার লক্ষ্য। কাকা সবকিছু গাইতেন-ধ্রুপদ, খেয়াল, ঠুমরি, গজল, নাত, কীর্তন। আমাদেরও কাকা সেভাবেই তৈরি করেছিলেন যে, একটা ধ্রুপদ গাইতে হলে ধ্রুপদ গাইতে হবে তোমাকে। খেয়াল গাইতে হলে খেয়াল গাইতে হবে। বাংলা মডার্ন গাইতে হলে গাইতে হবে।


শুভ্রঃ আপনার সমসাময়িক বা আগে-পরে বাংলা গানের যেসব শিল্পী ছিলেন, যেমন সতীনাথ...

মান্না দেঃ না, না, না, সতীনাথ এঁদের ব্যাপারে আমি কিছু বলতে চাই না। এঁদের গানের ব্যাপারেও না। এঁরা পপুলার আর্টিস্ট ছিলেন, পপুলার থাকতে দিন। তবে গান করার যে জায়গাটা, সেখান থেকে আমি এঁদের মোটেই পছন্দ করি না। আমি পছন্দ করতাম হেমন্তবাবুর গান। এত সাদাসিধে গান করতেন আর এমন মিষ্টি গান যেন লোকেদের কাছে আস্তে করে গানটা তুলে দিতেন তিনি আর লোকেরাও দু হাত বাড়িয়ে তা লুফে নিত।


শুভ্রঃ হিন্দি-বাংলা সব মিলিয়ে আপনার সবচেয়ে প্রিয় শিল্পী কে?

মান্না দেঃ মোহাম্মদ রফি আর লতা মুঙ্গেশকর। আমি তো বলব, গানের জগতে মোহাম্মদ রফির থেকে বেটার সিঙ্গার হয়নি। আর ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, লতার মতো আর্টিস্ট আর জন্মাবে না। লতা মুঙ্গেশকর যেভাবে গান করে গেছেন, তাতে তিনি নিজেই একটা ইনস্টিটিউশন। ‘কীভাবে ভালো গাইতে হয়’-বাকি সিঙ্গারদের একটা গাইডলাইনও দিয়ে গেছেন লতা। লতার আগে কত গাইয়ে ছিলেন...জোহরাবাই আম্বেলেওয়ালি, আমিন ভাই কর্নাটকি, পারুল ঘোষ, নূরজাহান, শামসাদ বেগম, গীতা দত্ত...লতা আসার পর সবাই হারিয়ে গেলেন। লতার মতো গাইয়ে...আহ্‌ হা হা...ওই যে বললাম, লতা হচ্ছেন গানের একটা টোটাল ইনস্টিটিউশন। আমার যেটা মনে হয়, শিখে কেউ লতা মুঙ্গেশকর হতে পারে না। এটা ভগবানের অদ্ভুত রকম একটা আশীর্বাদ তার ওপরে। নইলে কী করে একটা মারাঠি মেয়ে এভাবে গান করতে পারে!


শুভ্রঃআপনি যতই সর্বভারতীয় শিল্পী হয়ে থাকুন, হিন্দি-মারাঠি-গুজরাতি গান গেয়ে থাকুন না কেন, বাংলাদেশে কিন্তু আমরা আপনাকে বাংলা গান দিয়েই চিনি। তার চেয়ে বেশি চিনি রোমান্টিক গান দিয়ে। আমাদের কয়েক প্রজন্মের তারুণ্য-যৌবন তো মান্না দেময়। প্রেমে পড়লেও মান্না দে, প্রেমে ব্যর্থ হলেও। গানগুলোকেও অনেকে আপনার কথা বলেই ধরে নেয়। আপনি হয়তো গাইছেন, ‘ও কেন এত সুন্দরী হলো’, লোকে আপনাকে জিজ্ঞেস করছে, এই ‘ও’টা কে? অথচ গানটা তো আপনি লেখেননি!

মান্না দেঃ খুব সত্যি কথা। সব সময় এটাই হয়। একটা গান গাইলে ‘কিয়া গানা গায়া মান্না দে’। আরে, মান্না দে কিয়া গায়া? গানটা যদি কেউ না লিখত, যদি ওইভাবে সুর না হতো, তো মান্না দে কী গাইত!
আমার ওসব গানের জন্য আমি কৃতিত্ব দিই পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ও যেভাবে গান লিখেছে’এ তো রাগ নয়, এ যে অভিমান। এ শুধু তোমায় কাছে পাওয়ার ছল ভরা গান।’ যখন এইভাবে কথা লেখা হয়, তখন সেটিতে সুর করতে বসলে তা বুকের ভেতর থেকে উঠে আসে। আমি এই গানটার সুর করেছি একটু ক্লাসিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ড রেখে। এটাই আমার গানের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক। সব গানের পেছনে একটু ক্লাসিক্যাল কিছু থাকবেই।


শুভ্রঃ আমরা যেমন আপনার অনেক গানই গুনগুন করি, আপনি নিজে সবচেয়ে বেশি গুনগুন করেন কোন গান?

মান্না দেঃ রবীন্দ্রসংগীত। শুধুই রবীন্দ্রসংগীত।


শুভ্রঃ আপনার আত্মজীবনীতে রবীন্দ্রসংগীত নিয়ে যা লিখেছেন, সেটি আমার খুব পছন্দ হয়েছে। রবীন্দ্রসংগীত নিয়ে ওই ‘গেল গেল’ রব তোলার সংকীর্ণতা না থাকলে এটি আরও বেশি গণমানুষের গান হতে পারত।

মান্না দেঃ খুব সত্যি কথা। ওরা এই যে রবীন্দ্রসংগীতকে একটা নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে ধরে রেখেছেন না, ধরে রেখে খুব অন্যায় করেছেন। আরে বাবা, এটা কেমন নিয়ম যে রবীন্দ্রনাথের গান গাইতে গেলে ও রকম গলা চেপে চেপে গাইতে হবে। কেন? বাংলা ভাষায় লেখা গান, আমরা লেখাপড়া শিখেছি, গানবাজনা শিখেছি, নোটেশন পড়তে পারি, রবীন্দ্রনাথ যেভাবে অসাধারণ সুন্দর সুর করেছিলেন, সেভাবে গাইতে পারি। তাহলে এভাবেই গাইতে হবে নিয়ম কেন?

‘স্বপনে দোঁহে ছিনু কী মোহে, জাগার বেলা হলো।’ (প্রচলিত রাবীন্দ্রিক ঢঙে গেয়ে) এটা এইভাবে গাইতে হবে কেন? ‘ওই যে ঝড়ের মেঘের কোলে, বৃষ্টি আসে মুক্তকেশে আঁচলখানি দোলে।’ এটা কেন (গলা চেপে গেয়ে) ওই যে ঝড়ের, আরে ননসেন্স... ঝড় কি ওইভাবে আসে? (গলা ছেড়ে গাইতে গাইতে) আহ্‌ হা...বৃষ্টি আসে মুক্তকেশে আঁচলখানি দোলে...কী....কী লিখেছেন! রবীন্দ্রনাথের কল্পনার পাখায় উড়ে যাওয়ার যে ক্ষমতা আর সেটিকে তিনি যেভাবে কথা আর সুরের মেলবন্ধন দিয়ে ব্যক্ত করেছেন....আমি এমন জিনিয়াস আর দেখিনি। আমি এত লোকের গান শুনেছি, এত গানবাজনা শুনেছি, গান নিয়ে এত লেখাপড়া করেছি, রবীন্দ্রনাথের ধারেকাছে ঘেঁষতে পারে এমন কারও দেখা আমি পাইনি।

কী গানের কথা! কী করে লিখে গেছেন প্রেমের গান ওই রকম-’তুমি একটু কেবল বসতে দিয়ো কাছে, আমায় শুধু ক্ষণেক তরে আজি।’ আহ্‌ হা, আহা, কী কথা! ‘হাতে আমার যা কিছু কাজ আছে, আমি সাঙ্গ করব পরে।’ আহ্‌ হা, কী কথা-আমি ভীষণ ইমোশনাল হয়ে যাই রবীন্দ্রনাথের গানের কথা উঠলে। আমি বাড়িতে বসে সব সময় রবীন্দ্রসংগীত গাই। আমার বউকে শেখাই, দুজন একসঙ্গে গাই।


শুভ্রঃ আর কী লেখেননি! ‘আমরা দুজন’ শুনেই যেমন মনে হলো, ‘আমরা দুজনা স্বর্গখেলনা রচিব না ধরণীতে।’ আমার এক বন্ধু প্রেমে পড়ল, মেয়ে পাত্তা দেয় না। ও আমাকে বলল, তোর রবীন্দ্রনাথ নাকি সবকিছু নিয়েই গান লিখেছেন! এই পরিস্থিতির কী গান? আমি বললাম, তাও আছে-’ভালোবাসিলে যদি সে ভালো না বাসে, কেন সে দেখা দিল। মধু অধরের মধুর হাসি, প্রাণে কেন বরষিল।’

মান্না দেঃ একদম সত্যি কথা। এমন কোনো পরিস্থিতি নেই, যাতে রবীন্দ্রনাথ তার ছোঁয়া দেননি। আমার তো রবীন্দ্রনাথের সব গানই মুখস্থ। ওই যে একটা গান’কাল রাতের বেলা গান এল মোর মনে, তখন তুমি ছিলে না গো ছিলে না, তখন তুমি ছিলে না মোর সনে। যে কথাটি বলব তোমায় বলে কাটল জীবন নীরব চোখের জলে।’ আবার দেখুন-’সেই কথাটি লাগল না সেই সুরে যখন তুমি আছ আমার সনে।’
মাই গড! হাউ কুড হি সে দিস্‌! হাউ কুড হি সে দিস্‌! ‘সকরুণ বেণু বাজায়ে কে যায় বিদেশি নায়ে/তাহারি রাগিণী লাগিল গায়ে।’ কীভাবে বলেছেন উনি! আর কেমন সুর করেছেন! যেন ওই কথার জন্য অন্য কোনো সুর হলে হতোই না।

একটা ঘটনা বলি। একবার বোম্বের খুব বড় একজন মিউজিক ডিরেক্টর আমাকে বললেন, ‘আরে মান্নাদা, টেগোর সাব কা গানে মে অ্যাই রোনা-ধোনা বনধ্‌ নেহি হোতা হ্যায়? এ ক্যায়সা লাগা আপ কো?’ আমি বললাম, ‘রোনা-ধোনা কিস্‌কা গানা শোনা আপনে?’ উনি বললেন, ‘এসব যো গাতা হ্যায় টেগোর সংস্‌’। সবাই তো আসলে ওভাবেই গান করে, ন্যাকার মতো ক্যা-ও-ও করে। আমি উনাকে বললাম, ঠিক আছে, আমি আপনাকে একদিন টেগোরস্‌ সং শোনাব, তবে দু ঘণ্টা সময় করতে হবে। ‘দো ঘণ্টা?’ আমি বললাম, ‘আরে, দুই ঘণ্টায়ও কি টেগোরস্‌ সংস্‌ হয়!’

একদিন বসে তাঁকে শুনিয়েওছিলাম। ওঁর মুখ দিয়ে কিছুক্ষণ কথা বেরোয়নি। তারপর বললেন, ‘এ কী জিনিস বাঙালি পেয়েছে!’ রবীন্দ্রসংগীতের শুধু কি কথা? সুর, রাগরাগিণী, তাল-লয় কীভাবে যে রবীন্দ্রনাথ ওসব করেছেন!


শুভ্রঃ আপনার গাওয়া বাংলা গান থেকে যদি প্রিয় দশটা গান বেছে নিতে বলি!

মান্না দেঃ এ তো মহা মুশকিল। গান হচ্ছে আমার বাচ্চার মতো। আমি এত ভালোবেসে গানে সুর করেছি। নিজেও ভাবতে পারিনি যে, সেসব গান এত হিট করবে। ‘তীর ভাঙা ঢেউ আর নীড় ভাঙা ঝড়, এরই মাঝে প্রেম তবু গড়ে খেলাঘর।’ গৌরী (গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার) বলল, ‘মান্নাদা, এই দুটো লাইন লিখেছি, শুনুন না একটু’। আমি বললাম, কী লাইন? ‘তীর ভাঙা ঢেউ আর নীড় ভাঙা ঝড়, তারই মাঝে প্রেম তবু গড়ে খেলাঘর।’ বহুত আচ্ছা ভাই। গৌরী বলল, ‘তাহলে সুর করুন।’ তখন কেমন গান হতো জানেন তো ’পূর্ণিমার চাঁদ আনে জোছনা গানে, নীড় কুমুদীর গানে সেই বারতা।’ সে সময় এই গান বিরাট ব্যাপার!

তবে এটা হচ্ছে টিপিক্যাল কমার্শিয়াল গান। আমাকে এখন এই গান করতে বললে আমি গাই না। আমি বলি, এ তো বাচ্চাদের গান। হ্যাঁ, আমার তেমন গান যদি শুনতে চান, তাহলে শুনুন, আমার নিজেরই সুর করা, ‘আমি আজ আকাশের মতো একেলা, কাজল মেঘের ভাবনায় বাদলের এই রাত ঘিরেছে ব্যথায়।’ সুর করার সময় আমি একেবারে গানের কথার মধ্যে ঢুকে গিয়েছিলাম। এমন গান শুনতে চান, শোনাতে পারি। কিন্তু ওই যে টিপিক্যাল কমার্শিয়াল গান, ওসব তো রেকর্ড বিক্রি করার জন্য।


শুভ্রঃ তার পরও আপনার প্রিয় কয়েকটা গান বেছে নেওয়া কি সম্ভব? আমার পছন্দগুলো বলে সাহায্য করব নাকি-’আমি নিরালায় বসে’, ‘চাঁদের আলোয় নিভিয়েছিলাম’, ‘ললিতা গো’

মান্না দেঃ ‘ললিতা, ওকে আজ চলে যেতে বল্‌ না।’ এই গানটা কিন্তু টিপিক্যাল বাংলা গান নয়। ওই গানটার একটা ইতিহাস আছে। আমি কাকার কাছে শিখেছিলাম একটা ঠুমরি-’শ্যাম ঘুংঘট কে পট খোলো।’ ‘পট খোলো’র মধ্যে যে একটা লচক্‌ না, পুলক ধরেছিল এটাকে। ও বলল, ‘দাদা, এই সুরটার মধ্যে একটা কিছু আছে।’ আমি বললাম, কী আছে? পুলক বলল, ‘ওই যে কী রকম একটা ঘুং ঘটপট খোলো।’ আমি বললাম, ঘটপট না, ঘুংঘট কে পট খোলো, মানে ঘোমটাটা খোলো। সুরটাতে ‘খোলো’র ওপর যে একটা ঝটকা, ওটা নিয়েই ও লিখে ফেলল, ‘ওকে আজ চলে যেতে বল্‌ না অন্য ঘাটে চল্‌ না’! ‘ঘুংঘট কে পট খোলো’র সঙ্গে মিলিয়ে ‘বল্‌ না, চল্‌ না’!

পুলক ওয়াজ গ্রেট। ও এত সুন্দর সুন্দর গানের কথা আমাকে দিয়েছে। এই যে ‘ও কেন এত সুন্দরী হলো’ গানটা। আমি গান গাইতে সিন্ধ্রি নামে একটা জায়গায় গেলাম, ও-ও সঙ্গে গেল। যেখানে আমরা ছিলাম, সেখানে সামনের বাড়িতে একটা মেয়েকে দেখে এই গানটা লিখে ফেলল। আমি ও পুলক ছাদে বসে চা-টা খাচ্ছিলাম, এর মধ্যে ওই মেয়েকে দেখে পুলক লিখে ফেলল, ‘ও কেন এত সুন্দরী হলো, অমনি করে ফিরে তাকাল, দেখে তো আমি মুগ্ধ হবই। আমি তো মানুষ।’ এই যে ডাউন টু আর্থ কথাটা’আমি তো মানুষ, আমি তো মুগ্ধ হবই’আমি ওইভাবেই সুরটা করলাম। পুলক আমাকে বারবার বলেছিল, ‘মান্নাদা, কীভাবে সুর করলেন?’ আমি বলেছিলাম, ‘আপনি যেভাবে লিখেছেন আমি ওইভাবেই সুর করেছি।’ গানের কথা আমার হৃদয়ের তারে টোকা না দিলে আমি সুর করিনি।

কথা আর সুরে সামঞ্জস্যটা তো তখনই হয় (গেয়ে শোনালেন) রিমঝিম ঝিম বৃষ্টি আমার কাছে অনেকে এসে গান শিখতে চায়। কী শিখবে? বলে, আপনার ওই গানটা। আমি বলি, ওটা কি তুমি শিখতে পারবে? চাইলেই এভাবে (গেয়ে উঠে) ‘রিমঝিম-রিমঝিম’ বলতে পারবে? ওই যে ‘বর্ষা তুমি ঝোরো না গো এমন জোরে, কাছে সে আসবে বল কেমন করে রিমঝিম ঝিম ঝিম’ এই রিমঝিম ঝিম ঝিম কথাটা তুমি এভাবে কেমন করে বলবে? তুমি তো পারবে না। যাও, ভালো কোনো ওস্তাদের কাছে গিয়ে সারেগামা, সুর-তাল-লয় এসব শেখো। এসব রপ্ত করে বছর পাঁচেক পর এসো। তখন গান শেখাব।


শুভ্রঃ কী বলছেন? এখন তো ফাস্ট ফুডের যুগ। এত শেখার সময় আছে নাকি কারও? পাঁচ বছরে তো দশটা ক্যাসেট বের করে ফেলা যায়!

মান্না দেঃ ঠিকই বলেছেন। সত্যি, গানবাজনার স্তরটা খুব নেমে গেছে। অত্যন্ত নিচে চলে গেছে। আমি এখনো গান করছি। সারা পৃথিবীতে গান করছি। যারা ভালো গান শুনতে চায়, তারা আসে। একটু বয়স্করাই আসে। ইয়াংরা তো একদমই শুনতে চায় না। ওরা কী সব ব্যান্ড শুনছে, র‌্যাপ শুনছে। রাবিশ!


শুভ্রঃ অবসরে গল্প-উপন্যাস পড়েন?

মান্না দেঃ তা তো পড়িই। আমি ক্লাসিক বেশি পড়ি। ইংরেজিই বেশি। বাংলা তেমন পড়ি না।


শুভ্রঃ প্রিয় লেখক কে?

মান্না দেঃ সমারসেট মম। এখন আসলে পৃথিবীটা এমন হয়েছে, সব সময়ই কিছু না কিছু হচ্ছে। এসব জানতে আমি খুব জার্নাল পড়ি। নিয়মিত ম্যাগাজিন-ট্যাগাজিন পড়ি।


শুভ্রঃ অনেক বছরই তো আপনার বেঙ্গালুরুতে নিবাস, তাই না?

মান্না দেঃ হ্যাঁ, বেঙ্গালুরুতে অনেক বছরই হয়ে গেল।


শুভ্রঃ রেয়াজ দিয়েই তো দিন শুরু হয় বললেন। এর বাইরে প্রোগ্রাম-ট্রোগ্রাম না থাকলে আপনার ডেইলি রুটিনটা কী?

মান্না দেঃ কী আর করব! টিভিটুভি দেখি। আজকাল অবশ্য যেসব অসভ্য জিনিস দেখায়, ওসব দেখতে ভালো লাগে না। স্পোর্টস দেখতে খুব ভালো লাগে। স্পোর্টসটা আমি সব সময় খুব ফলো করি। টেনিস, ক্রিকেট, ফুটবল মূলত এই তিনটাই। আজকাল আবার ব্যাডমিন্টনে ভারতের মেয়েরা খুব ভালো খেলছে। ছোটবেলা থেকেই স্পোর্টস আমার খুব প্রিয়। আমার বাবা খুব নামকরা ফুটবলার ছিলেন। গান আর স্পোর্টস-এই দুটোই আমার জীবন।

সূত্রঃ প্রথম আলো, মার্চ ০৫, ২০০৯
৪টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×