দুনিয়ার মানুষগুলোর কী হল কে জানে? সবকিছু সংক্ষিপ্ত আর ছোট করে ফেলছে। এই যেমন প্রথমে মেমোরী কার্ড বড় থেকে ছোট হল তারপর এখন সিমকার্ড ছোট করার প্রায় হিড়িক পড়ে গেছে।তাই বলে কি মানুষের নামও ছোট করে ফেলবে? ডাঃ গুলব উদ্দিন কিছু ভেবে পান না। দুনিয়ার মানুষের বুদ্ধিশুদ্ধি কোথায় গেছে? তার বাবা শখ করে নাম রেখেছিলেন গুলজারে আলম মোঃ বাছির উদ্দিন। নবম শ্রেণীতে পড়ার সময় রেজিশট্রেশন করতে গিয়ে হেডস্যারের রামধমকে তখনই নাম বদলে হয়ে গেল গুলব উদ্দিন। আজকাল মানুষ এই নামটাও সংক্ষিপ্ত করে গুলবুদ্দিন ডাকে।
কেউ কেউ আবার গুল বলেও ডাকে। গুলবুদ্দিন শুনলেই তার পিত্তি জ্বলে যায় তার উপর যখন কেউ গুল বলে ডাকে তখন তাকে ধরে আচ্চা করে রাম থাপ্পড় দিতে ইচ্চে করে। আর কয়দিন পরে গুল থেকে সংক্ষিপ্ত হয়ে যেটা হবে আপাতত সেটা নিয়ে বিরাট টেনশানে আছেন।
চেম্বারে বসে বসে পত্রিকায় চোখ বুলাচ্ছেন ডাঃ গুলব উদ্দিন। খুব একটা পড়তে পারলেন না। রোগী এসেছে। পত্রিকা পড়ার সময় যত ঝামেলা। সারাদিন বসে বসে মাছি তাড়ালেও রোগীর দেখা মিলে না। একমুহুর্তের জন্য পত্রিকা হাতে নিলেই গায়েব থেকে রোগী নাজিল হয়। আপাতত রোগীর দিকেই মনযোগ দিলেন।
- আপনার সমস্যা বলুন!
- জ্বী, আমার সমস্যা হল পাতলা পায়খানা। কয়েকদিন থেকে খুব বেশী হচ্ছে।
- কতদিন থেকে হচ্ছে?
- যেদিন থেকে শক্ত পায়খানা বন্ধ হল সেদিন থেকেই হচ্ছে।
- কতদিন থেকে সেটা আমি বুঝব কী করে? আচ্চা ঠিক আছে, কিরকম পাতলা পায়খানা হয়?
- হলুদ রংয়ের।
- আপনি কি আমার কথা বুঝেন না? না বুঝলে বলবেন। উত্তর দেবেন না। কেমন পাতলা পায়খানা হয়?
- বুঝি নাই স্যার।
ডাক্তার এবার রেগে গেলেন, কটমট করেই বললেন।
-আপনার সমস্যা আপনি বুঝেন না?
- সমস্যা না স্যার আপনার প্রশ্ন।
- আমি জানতে চাচ্ছি পাতলা পায়খানা কতটুকু হয়?
- গোসলের মগ দিয়ে প্রায় একমগ হয় হয়।
- আপনাকে নিয়ে তো মহা মুশকিলে পড়লাম। আমি জানতে চাচ্ছি পাতলার পরিমাণটা। কতটুকু পাতলা?
এবার রোগী চিন্তায় পড়ে গেল। এমনিতেই ডাক্তার রেগে গেছে। আর কিছু উল্টাপাল্টা বললে আরও রেগে যাবে। কি করা যায়? অনেক চিন্তা করে অবশেষে বলল,
- এত বেশী পাতলা যে মুখে নিয়ে আপনি কুলি করতে পারবেন।
ডাঃ গুলব উদ্দিনের নিজের উপর খুব রাগ হচ্ছে কেন যে ডাক্তারী নামক পাগলের. বিদ্যা শিখতে গেলেন। (চলবে)