somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গহীনের ভালোবাসা

০৫ ই মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৪:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


দীর্ঘ আড়াই বছর প্রেমের পর এক জোছনা রাতে ধুমধাম করে বিয়ে করল অন্নি আর রাতুল। এই আড়াই বছরে তাদের প্রেমে কোন বিবাদ ছিল না, কোন সন্দেহ ছিল না। যাকে বলে একেবারে বিশুদ্ধ প্রেম!
উভয় পরিবারই বিয়েতে রাজি ছিল। রাতুল অবশ্য বিয়ে করতে চায় নি। কারন হিসাবে সে "অন্নিকে বলেছিল আর মাত্র কয়েকটা মাস অপেক্ষা করো! আমি ব্যবসা নিয়ে একটা অবস্থানে আসি"। অন্নি মানে নি। অন্নির কথা একটাই আমার তোমাকে চাই! যা করবে আমাকে সাথে নিয়ে করবে। রাতুল কৌতুক করে বলেছিল "আমি তো সৌদির ভিসার জন্যও চেষ্টা করতেছি! তোমার জন্যেও একটা দেখবো নাকি?"

রাতুল আর অন্নি ছোটবেলার বন্ধু। একসাথে দুজনে বড় হয়েছে। লেখাপড়া করেছে। স্কুলে গিয়েছে। বিকেলবেলা মাঠে গিয়ে একসাথে খেলা করেছে। ডানপিটে স্বভাবের কারনে রাতুল অনেকবার বাবা মায়ের হাতে মার খেয়েছে। রাতুল মার খেয়েছে শুনলে অন্নি নীরবে কেদে যেত। হৃদয়ের গভীরে ব্যথা অনুভব করত। অন্নি কোনদিন মায়ের সাথে বেড়াতে গেলে রাতুলের সারাদিন কেটে যেত আনমনা হয়ে।

এভাবে কখন যে দুজনে দুজনার অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গেছে বুঝতেই পারে নি। বুজলো, যখন রাতুল গ্রাম ছেড়ে চাকরীর উদ্দেশ্যে ঢাকা গেল। দুজনে আলাদা হওয়ার পর কারো ভাল লাগে না। রাতে ঘুমাতে গেলেও মনে পড়ে, খেতে বসলেও মনে পড়ে। অবশেষে আর থাকতে না পেরে শহর ছেড়ে আবার গ্রামে চলে এল রাতুল। ঢাকা থেকে অনেক কিছুই আনলো অন্নির জন্য। এক বিকেলে পুকুরঘাটে বসে দুজন দুজনকে ভালোবাসার কথা জানিয়ে দিলো।

বাসর রাতে রাতুল অন্নির হাত ধরে আগের পরিকল্পনা মত ছাদে চলে গেল। তারা ইচ্ছে করেই জোছনা রাতে বিয়ে করেছে যাতে সারারাত জোছনা উপভোগ করে গল্প করতে পারে। শুরু হলো দুজনের কথার ফুলঝুরি। গভীর রাত পর্যন্ত চলল দুজনের গল্প। হাতে হাত রেখে শপথ নিলো দুজনের কেউ কোনদিন হাত ছাড়বে না।

বিয়ের পর একমাসের মধ্যে রাতুলের সৌদির ভিসা হয়ে গেল। রাতুল সৌদি চলে গেল। রাতুল আর অন্নির অনেক স্বপ্ন। তারা যে বাড়িতে থাকে সেখানে রাতুলের ভাগে যায়গা একদম অল্প। তাদের দুজনের স্বপ্ন আলাদা যায়গা কিনে একটা বাড়ী করবে। দুটো বাচ্চা হবে। সুখের একটা সংসার হবে। দুজনে আজ খুব খুশি।

কিন্তু কে জানত নিয়তির নির্মম খেলা। সৌদি গিয়ে তিনটা মাসও থাকতে পারে নি। সড়ক দুর্ঘটনায় দুটো পা হারিয়ে দেশে ফিরে এল রাতুল। রাতুলের পঙ্গুত্বের কারনে অন্নির বাবা মা অন্নিকে নিয়ে যেতে চাইলো। রাতুল মনে মনে খুশি হয়েছিল। একটা পঙ্গু মানুষের সাথে ওর জীবনটা নষ্ট হোক এটা মন থেকে চাচ্ছিল না। সেও পরামর্শ দিলো অন্য কাউকে বিয়ে করে সুখী হওয়ার জন্য। রাতুলের মা, মানে অন্নির শাশুড়ি, ননদ সবাই পরামর্শ দিলো " ফুটফুটে চেহারা আর ভরা যৌবন। যে কাউকে আকৃষ্ট করবে। অন্য কাউকে বিয়ে করে সুখী হও।" বান্ধবীরা একই পরামর্শ দিলো। পারলে এখনি তাকে অন্য কোথাও বিয়ে দিয়ে দেয়। অন্নি সবার কথাই শুধু শুনে যাচ্ছে। কাউকে কিছুই বলছে না।

সবাই অন্নির দিকে তাকিয়ে আছে ওর সিদ্ধান্ত শুনতে চায়। অবশেষে বললো "ভালবেসেছি যাকে বিয়েও করেছি তাকে, সারাজীবন তার সাথেই থাকবো, ভালোবাসার মধ্যে ফিরে যাওয়ার কোন শর্ত থাকে না। ভালোবাসার বসবাস হৃদয়ের গহীনে",,,,,,,
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৪:৫৭
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×