somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালবাসার আনন্দ

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঘড়িতে ৪.৩০ বাজে। ছুটির দিনে সকালবেলা জম্পেশ ঘুম হয় আমার। দরজা বন্ধ করে মোবাইল সাইলেন্ট করে মরার মত ঘুম। এত সকালে উঠার প্রশ্নই আসে না। আজ এত সকাল ঘুম থেকে উঠার কারন বউয়ের নির্দেশ!

গতরাত দুইটা পর্যন্ত মহারাণী আমাকে ঘুমাতে দেন নাই। আজ সকালে তাঁর অফিসের কলিগদের সাথে শহীদ মিনারে ফুল দিতে যাবে। রাত জাগার কারনে সকালে উঠতে পারবে না। আমার দ্বায়িত্ব হচ্ছে তাঁকে ঘুম থেকে ডেকে তোলা।

যথাররিতী ডেকে দিলাম। আবছা অন্ধকারে চলে গেল ফুল দিতে। মনে মনে একটু আফসোস করলাম। এ জীবনের কী দাম? তার চেয়ে আরেকবার যদি ভাষা আন্দোলন হত। যুদ্ধ করে মরে যেতাম। অন্তত বছরে একবার প্রভাতে ফুল দিয়ে নিজ ইচ্ছায় না হোক, অফিসের চাপেও শ্রদ্ধা জানাত! কী এক বউ পাইলাম! একটুও শ্রদ্ধা নাই স্বামীর প্রতি। সারাক্ষণ ডিউটি করায়!

হঠাৎ মোবাইলটা বেজে উঠল। বউয়ের এক কলিগের স্বামী। ফোনটা রিসিভ করে জিজ্ঞেস করলাম,
"এত সাত সকালে ফোন দিলেন। কী ব্যাপার ভাই?"

কান্নাভেজা কন্ঠে বললেন,
"ভাই আমার বউ রাতে কোথায় চলে গেছে আমারে একলা রাইখা।"

"হাহাহাহাহাহা..."

"হাসবেন না ভাই আমার একটা বাচ্চা নিয়া কোথায় যাব আমি? আমি মানুষকে মুখ দেখাব কেমনে?"

অনেক কষ্টে হাসি থামিয়ে বললাম,
"ভাই আপনি আসেন আমার বাসায়, দুজনে মিলে বুদ্ধি করি কী করা যায়!"

ফজরের আজান হয়ে গেছে। ফোন রেখে নামাজ পড়ে বিছানা গুছিয়ে চা করলাম। এরই মধ্যে উনি চলে এসেছেন। দুজনে মিলে চা পান করলাম। চা খেতে খেতে বললাম,
"আজ একুশ ফেব্রুয়ারি। প্রভাতফেরীতে শহীদ মিনারে ফুল দিতে গেছে আমার বউ। এজন্য বাসা এখন খালি।"

এতক্ষণে উনার কাছে ব্যাপারটা ক্লিয়ার হয়েছে। বিজয়ীর একটা হাসি দিয়ে বললেন,
"ও তাহলে তো আমার বউও শহীদ মিনারে গেছে"

আবার হাসলাম। এবার একা না। দুজনে মিলে বেশ কিছুক্ষণ হাসলাম।

সব শেষে উনার প্রশ্ন,
"এই প্রভাতফেরী দুপুরবেলা করা যায় না?"

আরেকবার হাসলাম প্রাণ খুলে। ছুটির দিনের শুরুটা হল আনন্দ দিয়ে। এতক্ষণের চাপা ক্ষোভ আর কষ্ট নিমিষেই উদাও হয়ে দেখা দিল ফুরফুরে এক ধরণের আনন্দ। কেউ ফুল দিয়ে আনন্দ পায় কেউ ফুল দেওয়া মানুষগুলোকে নিয়েই আনন্দে কাটায়। সবই আনন্দ! ভালবাসার আনন্দ!
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:২২
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×