somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেজিক্যাল ক্যালেন্ডার

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বুধবার ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে নতুন একটি বছর, ২০১৪ সাল। আর যে ক্যালেন্ডার বা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী এ বছর গণনা তাকে আমরা সাধারণত ইংরেজি ক্যালেন্ডার বলেই জানি। তবে মজার বিষয় হলো, বিশ্বব্যাপী বহুল ব্যবহৃত এ ক্যালেন্ডার বা বর্ষপঞ্জি, যাকে আমরা ইংরেজি ক্যালেন্ডার বলতেই পছন্দ করি তা কিন্তু আসলেই ইংরেজি ক্যালেন্ডার নয়। কোন ইংরেজ এ ক্যালেন্ডার প্রণয়নও করেনি। এমনকি ইংল্যান্ড বা বৃটেনেও এ ক্যালেন্ডার প্রথম চালু হয়নি। কয়েক হাজার বছর আগে এ ক্যালেন্ডার প্রণয়ন এবং প্রচলন হলেও ইংল্যান্ডে এর প্রচলন হয়েছিল মাত্র ২৬২ বছর আগে। অর্থাৎ ১৭৫২ সালে ইংরেজরা প্রথম তাদের দেশে এ ক্যালেন্ডারের প্রচলন করেছিল।
বিশ্বব্যাপী বহুল ব্যবহৃত ক্যালেন্ডারের যে রূপ বা সংস্করণটি আমরা এখন দেখি, শুরুতে তা এ অবস্থায় ছিল না। এটা পর্যায়ক্রমে সংশোধন ও পরিমার্জন হতে হতে আজকের এই রূপটি লাভ করেছে। বর্তমান রূপটি প্রবর্তন করা হয়েছিল আজ থেকে ৪৩১ বছর আগে। ১৫৮২ খ্রিস্টাব্দে ক্যাথলিক মতবাদে অনুসারী খ্রিস্টানদের ত্রয়োদশ ধর্মগুরু পোপ গ্রেগরিয়ান এ ক্যারেন্ডারটির প্রবর্তন করেছিলেন। তবে পোপ গ্রেগরিয়ান নতুন কোন ক্যালেন্ডার প্রবর্তন করেননি। বরং তিনি খ্রিস্টপূর্ব ৪৬ অব্দে রোম সম্রাট জুলিয়াস সিজার প্রবর্তিত ক্যালেন্ডারের কিছু অসঙ্গতি সংশোধন করেছিলেন। আবার জুলিয়াস সিজারের অনেক আগেই রোমানরা এ ক্যালেন্ডার আবিষ্কার করেছিল এবং তারা সেটা ব্যবহারও করত। কিন্তু তখনকার ক্যালেন্ডারে মাস এবং বছরের হিসাব ততটা সূক্ষ্ম ছিল না। যার ফলে প্রকৃত সৌরবৎসরের সাথে ক্যালেন্ডারের বছরের সমন্বয় ছিল না। এটা জানতে পেরে সম্রাট জুলিয়াস সিজার ক্যালেন্ডার সংশোধন করে সৌরবৎসরের সাথে সমন্বয় করেন। ১৫৮২ খ্রিস্টাব্দে জুলিয়ান ক্যালেন্ডার, পোপ গ্রেগরিয়ান কর্তৃক সংশোধীত হওয়ায় পোপের সম্মানে ক্যালেন্ডারের সর্বশেষ এ সংস্করণের নাম রাখা হয় গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার। এখন আমরা সাধারণত যাকে ইংরেজি ক্যালেন্ডার বলে থাকি তাই হচ্ছে সেই গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার।
গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের দিন, সপ্তাহ, মাস এবং বছরের সংখ্যাগুলো পারস্পারিক সম্পর্কের মধ্যে বেশ কিছু মেজিক্যাল বিষয় লুকিয়ে আছে। আর এসব বিষয় জানা থাকলে এ ক্যালেন্ডারের হিসাবটাও সহজে অনুধাবন করা যায়। মাসের দিন সংখ্যা মনে রাখার ইংরেজি রাইমসটার কথা নিশ্চয় মনে আছে-

Thirty days hath September,
April, June and November.
All the rest have thirty-one,
Excepting February alone,
Which hath twenty-eight days clear,
And twenty-nine in each leap year.

এই রাইমসটাও ক্যালেন্ডারে ব্যবহৃত সংখ্যাগুলোর মধ্যে মেজিক্যাল সম্পর্ক থেকেই তৈরি। তেমনি আরো কিছু বিষয় আছে যেমন- প্রত্যেক বছরের এপ্রিল এবং জুলাই মাস সপ্তাহের একই দিন থেকে গণনা শুরু হয়। অর্থাৎ কোন বছরের এপ্রিল মাস বুধ বার শুরু হলে ওই বছরের জুলাই মাস অবশ্যই বুধ বার থেকে শুরু হবে। এমনকি লিপ ইয়ার বা অধিবর্ষের ক্ষেত্রেও এই নিয়ম ঠিক থাকে। একই সম্পর্ক আছে সেপ্টেম্বর এবং ডিসেম্বর মাসের মধ্যে; মার্চ এবং নভেম্বর মাসের সম্পর্কও তাই।
লিপ ইয়ার বা অধিবর্ষ ব্যতিত অন্যান্য বছরে জানুয়ারি এবং অক্টোবর মাসের দিন তারিখ হয় একে অপরের কার্বন কপির মত। অর্থাৎ হুবহু মিল থাকে। মার্চ এবং নভেম্বর মাসের মধ্যেও একই সম্পর্ক বিদ্যমান। আর মার্চ এবং নভেম্বরের প্রথম ২৮ দিনের সাথে ফেব্রুয়ারি মাসের ২৮ দিনের সাথে মিলটাও একই। আর ফেব্রুয়ারি মাস ২৯ দিনে হলে অর্থাৎ অধিবর্ষের ক্ষেত্রে জানুয়ারি এবং জুলাই মাসের দিন এবং তারিখ পরস্পরের কার্বন কপির মত মিল থাকে।
অধিবর্ষ বা লিপ ইয়ার ব্যতিত প্রতিটা বছর সপ্তাহের যেই দিন শুরু হয়, সেই দিনেই বছর শেষ হয়। আর অধিবর্ষের ক্ষেত্রে বছর সপ্তাহের যেই দিন শুরু হয়, শেষ হয় তার পরের দিন। অর্থাৎ মঙ্গলবার ছিল ২০১৩ সালের শেষ দিন, এর মানে হলো ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসের ১ তারিখও ছিল মঙ্গলবার। অধিবর্ষ ব্যতিত প্রত্যেক বছরের দিন তারিখগুলো একদিন করে এগিয়ে যায়। এর মানে হলো ২০১০ সালের ১ জানুয়ারি ছিল শুক্রবার, ২০১১ সালের ১ জানুয়ারি শনিবার এবং একইভাবে ২০১২ সালের জানুয়ারির ১ তারিখ ছিল রোববার। তবে ২০১২ সাল অধিবর্ষ হওয়ায় ২০১৩ সালের জানুয়ারির প্রথম দিন সোম বার না হয়ে মঙ্গল বার হয়েছে। একই কারণ মঙ্গলবারেই শেষ হলো ২০১৩ সাল। এবার ২০১৪ সাল শুরু হলো বুধবার, শেষও হবে বুধবার। তাহলে ২০১৫ সালের শুরু হচ্ছে কী বারে? ক্যালেন্ডারের সংখ্যা এবং দিনগুলোর মধ্যে লুকিয়ে আছে, এমন আরও অনেক মজার মজার তথ্য।
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×