একটা সময় ছিল, ২১ ফেব্রুয়ারি সামনে এলেই খোঁজ করতাম কার বাড়িতে ফুল আছে। আর ২০ ফেব্রুয়ারি রাতেই সে ফুলের ... হয়ে যেত। এ কাজে অবশ্য আমি বেশ কাঁচা ছিলাম, তাই আমাকে রাতে খুব একটা বের হওয়ার প্রয়োজন হতো না। কারণ, দলে অভিজ্ঞ লোক ছিল। সকালে সে ফুল দিয়েই স্কুলের প্রাঙ্গণে সদ্য নির্মিত শহিদ মিনারে 'শ্রদ্ধাঞ্জলী' দিতাম।
এখনও দেখি কেউ কেউ তাই করছে!
আমরা যারা 'শ্রদ্ধাঞ্জলী' জানাই, তারা নিশ্চয়ই কবি গুরুর ভক্ত! গুরুর 'গীতাঞ্জলী' থেকেই এই শিক্ষাটা নিয়েছি। সমস্যা হলো গুরুরা যা খুশি হয়তো করতে পারেন, কিন্তু ভক্তজনের তো আর সব করা চলে না। তাই আমাদের শুদ্ধ বানানে 'শ্রদ্ধাঞ্জলি' লেখাই উচিত।
এখানে দেখুন, উনারা 'গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি' নিবেদন করতে এসেছেন।
কিন্তু 'অঞ্জলি' অর্থ 'যুক্তকর', 'করজোড়'...
'শ্রদ্ধাঞ্জলি' হলেও একটা সুন্দর অর্থ দাঁড়ায়। কিন্তু 'গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি'র মানে কী দাঁড়ায়?
১৯৫২ খ্রিস্টাব্দের ২১ ফেব্রুয়ারি যাঁরা ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছেন তাঁদের শ্রদ্ধা জানাতেই যদি আমাদের ভুল বানান, ভুল বাক্য লিখতে হয়, তাহলে তাঁদের প্রতি খুব একটা সুবিচার করা হয় না। আমরা শহিদ মিনারে রাশি রাশি ফুল দেই, কিন্তু যে ভাষার জন্য তাঁরা প্রাণ দিলেন সেই মাতৃভাষা শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিতে চাই না। আর অনলাইনে যারা লেখালেখি করি তারাও অবলীলায় যা খুশি লিখি। বানান ভুল, বাক্য ভুল, শব্দের ব্যবহার ভুল.... ভুলের যেন আর শেষ থাকে না। তবে ইদানীং সচেতনতা বাড়ছে, অনেকেই শুদ্ধ বাংলা লিখছেন, অনেকেই শুদ্ধ লেখার চেষ্টা করছেন, আবার অনেকেই শুদ্ধটা শেখার চেষ্টা করছেন। যারা শুদ্ধ বানান, শুদ্ধ ভাষা শেখার চেষ্টা করছেন তাদের জন্যই কিছু লিংক দিলাম। আশা করি, কাজে লাগবে...
১. কি আর কী নিয়ে বিড়ম্বনা
২. প্রমিত বাংলা বানানের ইতিকথা
৩. বাংলা বানাণ কর্মসালা – আমার বানামে ভূল হয় না
৪. মাতৃভাষা সংকট : বানান সতর্কতা
৫. শুদ্ধ বানান চর্চা (শুবাচ)
৬. কাকতাড়ুয়ার বানান শুদ্ধি অভিযান
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৩৩