১। আমি আর থাকবো না
আমি আর থাকবো না
ব্যথার প্রদীপ জ্বেলে
অন্তরে মন্তরে জ্বলবো না
নিভে যাক প্রদীপ শিখা
জ্বলে পুড়ে ভস্ম হোক
ঘুনে ধরা সংসার
ঘরদোর চাল চুলো।
আমি থাকতে চাই না এ ভড়ং মহলে
মঞ্চনাটকের শেষ কুশীলব হয়ে
যবনিকা হোক পর্দা খসে পড়ুক
বিদীর্ণ হয়ে যাক ছলাকলার বীজমন্ত্র।
বন্ধ করো অশ্লীল রাত্রিযাপন
বন্ধ করো বেহায়া নর্তন কুর্দন
যত্রতত্র অশালীন করমর্দন
বন্ধ করো পাগলা কুত্তার জলাতঙ্ক
বন্ধ করো গোয়ার্তুমি ঘেউ
বন্ধ করো লাল পানির ঢেউ।
আমার সামনে পিছনে ডানে বামে
ভেসে উঠছে নীল রঙের জোয়ার
উপচে উঠছে ভয়ংকর জলস্তম্ভ
ভেঙ্গে পড়ছে ভয়ংকর জলস্তম্ভ
আমি আকাশ আর মাটির ত্রিসীমানায় নেই
আমি অবাঞ্ছিত কারো দৃষ্টি সীমায় নেই।
আমি সব জরা ক্লিষ্ট বেদনাকে
অদৃশ্য বস্তা বন্দী করেছি
আমি সব অবিচার ব্যভীচার লুটপাটকে
অদৃশ্য শেকলে বেঁধেছি
আমি সব অনিয়ম অনাচারকে
পিঞ্জরে আবদ্ধ করেছি
আমি ছুটছি এক নক্ষত্র গতিতে
এই পৃথিবী ও সৌরজগতের বাইরে
অজানা এক গ্যালাক্সী পথে।
আমার চারিদিকে স্বর্গের ওম
আমার দশদিকে দোযখের যম
আমি সব দিক তছনছ করে
কাল থেকে কালান্তরে
ঘূর্ণিপাকে ঘুরতে ঘুরতে
কোথায় যাচ্ছি নিজেই জানি না।
(পাদটীকা: কবিতাটির কোথাও কোথাও
জয় গোস্বামীর---“আমাকে যদি জিগ্যেস করো” কবিতার ছায়া লেগে গেছে)
২। আমি লিখে যাচ্ছি
আমি লিখে যাচ্ছি চলে যাওয়ার গান
লিখতে হয় তাই লিখছি আপ্রাণ
আমি লিখে যাচ্ছি বলপয়েন্টে ছাই
আগ পিছ মাথা মুন্ডু নাই
আমি লিখে যাচ্ছি অভ্যাসবশত
আমি লেখার কাছে যেন অবনত
আমি লিখে যাচ্ছি শৈশব ধারাপাত
আমার লেখায় শুধুই বারিপাত
আমি লিখে যাচ্ছি যৌবনের গান
লিখতে হয় তাই লিখছি ফুলের ঘ্রান
লিখতে হয় তাই লিখছি পাখির স্বরলিপি
আমি লিখে যাচ্ছি বেদনার দিনলিপি
আমি লিখে যাচ্ছি চলে যাওয়ার রীতি
লিখতে হয় তাই লিখছি পুরনো স্মৃতি
চারিদিকে চলছে যখন
ভাঙ্গা গড়ার নিত্য প্রেম প্রীতি।
৩। আমাকে আর দেখি না
ডুবে ছিলাম কবিতার খাতায়
যেন একটা নদী বহুমূখী
শব্দেরা আমার হাত ছেড়ে বহুগামী
স্তুতি পারি না সে জানে আমার অন্তর্যামী।
নদী সাঁতরে এ কোন ঘাটে
মুখ তুলে চেয়ে দেখি সূর্য পাঠে
আমাকে আর পাই না কোন তল্লাটে
আমাকে আর দেখি না কবিতার হাটে।
ছবিঃ নিজস্ব এ্যালবাম। (ডুলাহাজরা সাফারী পার্ক)
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৩০