অর্কের মন খারাপ। শায়লার সঙ্গে ঝগড়া হয়েছে। শায়লার অনেক গুণ সেই তুলনায় অর্ক কিছুই নয় । সেটা সে ভাল করেই জানে। অবশ্য অর্ক শায়লার লেখাপড়া ক্যারিয়ার নিয়ে কখনো ভাবেনি বা ভাবার চেষ্টাও করেনি । সে যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়া শেষ না করে থাকে কিংবা অতীতে কোন মানুষের সঙ্গে গভীর প্রেমও থেকে থাকে সেসব নিয়ে মোটেই চিন্তিত বা বিচলিত নয় অর্ক । অর্কর শ্রেফ একই কথা শায়লা হলো তাই অর্কের পরাণও যাহা চায় ।
শায়লা নিজে থেকেই বলেছে শায়লার অনেক কথাবার্তা কর্মপদ্ধতি অর্কের সঙ্গে হুবহু মিলে যায় । মনের দিক থেকে তারা পুরোপুরি এক। তবে শায়লার পর্যবেক্ষণ অর্কের বাহ্যিক ব্যাপার স্যাপরের কোনটাই তার সঙ্গে মিলে না । অর্কের সীমাহীন নির্ভরতা শায়লার উপর। অপরদিকে শায়লাকে ধরি মাছ না ছুঁই পানি টাইপ বলে আশঙ্কা হয় অর্কের । যদিও পৃথিবীর সব মানুষ কিছু বললে শায়লা তার বিপরীত বললে অর্ক শায়লার টাই বিশ্বাস করবে । অর্ক জানে প্রেমের ক্ষেত্রে অনেক সময় নিজের চোখ কান এমনকি বাড়ির দেয়ালও বাধার সৃষ্টি করে।অর্ক কোন বাধা মানতে নারাজ । আর শায়লা অর্কের নির্বুদ্ধিতায় বিরক্ত হয়। যদিও সে জানে অর্ক যা করে কমপক্ষে শায়লার ভাল বিবেচনা করেই করে ।
তবে শায়লার মধ্যে প্রায়ই এম্বিশন ব্যাপারটা মাথা চারা দিয়ে ওঠে । তখন অর্ককে নেহায়েত নগন্যই মনে হয়। ঝগড়াঝাটির ক্ষেত্রে শায়লা বরাবরই ডমিনেট। তার জীবনের অন্যতম ইচ্ছা প্রিয় মানুষটার সঙ্গে একটু সুখের খুনসুটি করবে কিন্তু অর্ক একেবারে সব্জি লেভেলে নিরামিষ ঝাগড়াটে ।শায়লা বলে আর সে শুনে। ভুলক্রমে অর্ক দুই একটি কথা বলে বসলেই শায়লা অর্কের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দেয় । সম্প্রতি ঝগড়ার সময় অর্ক শায়লার প্রফেশন নিয়ে কটাক্ষ করে বেশ বেকায়দায় পড়েছে । অর্ক জানে শায়লা শখের বশেই বাচ্চাদের স্কুলের শিক্ষিকা ।তারপরও কোন দূর্বলতা না পেয়ে ওখানেই বোকার মত আঘাত করে । আর শায়লাও ঘিয়ে বেগুনে জ্বলে ওঠে।
অাদতে শায়লা হলো সেগুণ তার গুণের শেষ নেই । শিশুদের প্রতি তার অগাধ ভালবাসা মুগ্ধ করে অর্ককে । অর্ক অবশ্য মনে মনে আশায় বুক বাঁধে ।যদিও এখনকার মেয়েরা জন্মনিয়ন্ত্রণে বেশ সচেতন । ছেলে হোক মেয়ে হোক একটি সন্তানেই খুশি । অর্কর ইচ্ছা একটা ক্রিকেট টিম গঠন করার । এটা অবশ্য সম্প্রতি ঝগড়ার আগেই অর্ক শয়লাকে বলেছিল । সহজভাষায় বলতে গেলে অর্কের স্বপ্ন অর্ক -শায়লা এগার সন্তানের বাবা মা হবে ।
কিন্তু শায়লা ক্রিকেট খেলা মোটেও পছন্দ করে না । তবে তার স্বপ্ন একটা পরীর মত ফুটফুটে মেয়ে হবে । অর্ক তার ইচ্ছাতে খুশিই হয়। যতদিন মেয়ে না হবে ততদিন সন্তান নিতে কার্পন্য করবেনা শায়লা । এভাবে যদি এগারোটা ছেলের পরে একটা মেয়ে হয় তাহলে আর আপত্তি কি?
অবশ্য এসব চিন্তা এখন অবান্তর। শায়লা গাল ফুলিয়ে হুপ হয়ে আছে। অর্কের কথায় ফু দিয়ে বেড়াচ্ছে ।অর্ক বলে আমাকে বিশ্বাস কর পরী । শায়লা বলে ফু! অর্ক বলে আই লাভ ইউ পরী অর্ক বলে ফু! অর্ক বলে অর্কের চেহারা সুন্দর ।শায়লা বলে অলে ! অর্ক অবশ্য দুটো ফু আর অলে যোগ করে ফোলে বানিয়ে নেয় । ফুলে বলতে কি বসন্ত বুঝায় কিনা কে জানে !
অর্ক শায়লাকে জিজ্ঞাসা করে শায়লা ফোলে মানে কি? শায়লা বুঝতে পারে না ।পরে যখন অর্ক বুঝিয়ে দেয় শায়লা প্রচন্ড রেগে গিয়ে অর্কের গালে ম্যাও বলে একটা খামচি দিয়ে দেয় । গালকেটে দাগ হয়ে থাকে অর্কের ।পরের দিন সকালে কাটা জায়গা ফোলে ওঠে । আরশিতে চেহারা দেখে চমকে ওঠে গাল ফোলে গেছে। ফোলের মাহাত্ব বুঝতে আর বাকি থাকেনা অর্কের !
অর্ক ভাবে দস্যুরানি ফুলন দেবীর চরিত্রে বেস্ট চয়েস হবে শায়লা ।যার ভয়ে পৃথিবীর সব পুরুষ মাথা নিচু করে ম্যাও ম্যাও করবে । সময় খারাপ যাচ্ছে অর্কের। অর্ক শায়লার প্রেমে কুনজর লেগেছে শয়তানের । তাই আবহাওয়া পরিবর্তনের কথা ভাবতে থাকে অর্ক। দূরে কোথাও বেড়িয়ে আসলে মন্দ হয়না । অর্ককে না পেয়ে ঠিকই শায়লার ভালবাসা ওথলে ওঠবে এটি অর্ক ভালভাবেই জানে । সমস্যা হলো অর্ক শায়লাকে ছাড়া থাকতে পারে না । আর শায়লার ভিতর গভীর প্রেমানুভূতি জন্মানুর একটাই উপায় কয়দিন অনুপস্থিত থাকা । এটা নিয়ে স্রস্টার কাছে প্রার্থনাও করে অর্ক । স্রস্টা যেন তাকে শায়লা থেকে দূরে থাকার শক্তি দান করে । প্রর্থনা কবুল হয়না । দিনকে দিন শায়লার সঙ্গে থাকার এডিকশন বাড়তে থাকে অর্কের । তবে এইমুহুর্তে অর্ক খুব ভয়ে আছে ।
এরকম একটা সময়ে অর্কের ছোট মামার ফোন অর্কের মামাত ভাই এক মেয়ের প্রেমে পড়েছে ।অবস্থা জটিল । তাদের বিয়ে পড়াতে হবে । আর মেয়ের বাড়ি চট্টগ্রাম । সেখানে অর্ককে সঙ্গে থাকতে হবে । কারন অর্কের আছে জটিল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বিশেষ ক্ষমতা । অর্ক অবশ্য বেশ চিন্তিত হয়ে পরে । কোন লেভেলের প্রেম করেছে মামুন কে জানে ? ইপসির পেটে বাচ্চা টাচ্চা বাঁধিয়ে দেয়নি তো । এসব খবর উহ্যই থেকে যায় ।তবে অর্কের মামা আলতাফ সাহেব তার ছেলের বউয়ের চেহারা বিষয়ে বেশ হতাশা ব্যক্ত করে । বারবার বলতে থাকে মামুন ইপসিকে বিয়ে না করে ইপসির মাকে বিয়ে করলেও পারতো ! অর্ক অবাক হয়ে যায় আলতাফ সাহেবের কথায় ।
আলতাফ সাহেব অনেক ধূমধাম করে ছেলের বিয়ে দেয়ার কথা ।অথচ সে কনে পক্ষের বাড়িতে যাওয়ার জন্য ঠিক করেছেন ইউনিক সার্ভিস নন এসি গাড়ি । অর্কের আক্কেল গুড়ুম অবস্থা । যাই হোক শায়লার কাছ থেকে কয়দিন দূরে থাকা হবে এটাই বড় পাওয়া । আলতাফ সাহেবকে সব ক্ষেত্রে নতুন করে চিনছে অর্ক আর অবাক হচ্ছে। বিয়ে বাড়িতে তিনি কি করবেন সেটা নিয়েও ব্যাপক আশংকা কাজ করছে । অালতাফ সাহেব এমন নন।তার ভিতরে প্রচন্ড ক্ষোভ । আর ক্ষোভের কারণ ইপসি অনেক মোটা ।দেখতে নাকি গলাফোলা দৈত্যের মত লাগে । এই মেয়েকে মামুন পছন্দ করলো কিভাবে ?
পথিমধ্যে অবশ্য কুমিল্লার রসমালাই খেতে ভুল করেনা অর্ক । পুরো আধা কেজি পরিমান রসমালাই সে একাই খেয়ে বসে । আলতাফ সাহেব গল্প জুড়ে দেন অর্কের ছোট বেলার কথা। অর্ক নাকি বেশ মোটাসোটা স্বাস্থ্যবান ছিল । এক সঙ্গে এক কেজি মিষ্টি খেয়ে ফেলতো । এক বল পোলাও খেয়ে ফেলতো । গল্পের সময় অর্ক বিড়বিড় করে সে শায়লাকে বিয়ে করবে শুধু মজার মজার খাবার জন্য । আলতাফ সাহেব তাকে জিজ্ঞাসা করে অর্ক কি বলছো । অর্ক বলে কিছু না মামা । আলতাফ সাহেব তার ভাতিজা ছিপছিপে গড়নের লোকমানের প্রশংসা করে বলে এটা হলো মজবুত ফিগার। অবশ্য লোকমান আলতাফ সাহেবের প্রশংসার তোয়াক্কা না করে গাড়িতে বমি করে ফেলে । আরও দুজন তার সঙ্গী হয় ।সন্ধ্যায় যন্ত্রণাদায়ক ভ্রমনের শেষ হয় । মেয়ে পক্ষ থেকে কয়েকটি হাইস পাঠানো হয়েছে । বরযাত্রী সবাই একে একে সেগুলিতে চড়ে বসে । গাড়ি প্রায় ঢাকা শহরের মত জ্যাম আর গরমের মধ্য দিয়ে চলতে থাকে ।
কনে বাড়িটা হালদা নদী পার হয়ে পল্লিবিদ্যুতের একটা কোয়ারটার ।বরযাত্রী প্রবেশ করা মাত্র কনে ইপসি পাশের বাড়ি চলে যায় । তার ছাত্রীকে ইংরেজী পড়াতে। অর্ক বিস্মিত হয় ।বিয়ের আগের রাত্রে পড়াতে যেতে হবে ! অতি গুরুত্পূর্ণ পরীক্ষা হলেও তো ওরকম হওয়ার কথা নয়। এ নিয়ে সবাই ব্যাপক সমালোচনা শুরু করে ।
অর্ক অবশ্য এর চেয়ে বড় বড় বিস্ময় কল্পনা করে বসে আছে। এতে বেশ সুবিধা আছে বড় ধরণের অঘটন ঘটলেও তা সহজভাবে মেনে নেয়া যায় । চিন্তাগুলি এমন , বরযাত্রীদের সবাইকে প্যাদানী দিয়ে থানায় সোপর্দ করা হলো । কিংবা আলতাফ সাহেব সেনলেস হয়ে গেলেন ।তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলো । তার দেখাশুনার দায়িত্ব পরলো ইপসির উপর । জ্ঞান ফিরে ইপসিকে দেখে আবার সেন্সলেস হলেন আলতাফ সাহেব । বা হতে পারে অপমান সইতে না পেরে ইপসি আর মামুন তাদের বাসার ছাঁদ থেকে লাফিয়ে পরে মরে গেল । অবশ্য এক্ষেত্রে পরে গিয়ে না মরে হাত পা ভেঙ্গে ল্যাংড়া লুলা পঙ্গু হলে ট্রাজেডি ভয়াবহ মাত্রা নিতে পারে । এভাবে ভেবে রাখলে ছোট খাটো ঘটনা যাই ঘটুক সহজে মেনে নেয়া যায় । আর ঠান্ডা মাথায় সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যায় ।আর সেজন্যই তো অর্ক আধামহাপুরুষ। তবে সে শায়লাকে বিয়ে করে পুরুপুরি পুরুষে মানে মানুষে পরিণত হতে ইচ্ছুক । আর সে কখনোই এটা ভেবে রাখবেনা যে শায়লার সঙ্গে তার বিয়ে হবে না । বরঞ্চ সে এটা ভেবে রাখবে শায়লা আর সে মিলে একটা ক্রিকেট টিম গঠন করবে । এতে ভবিষ্যৎ পরিণতি জাহান্নাম হয়ে যাক তাতে অর্কের কিছুই যায় আসে না ।
পরের দিন দুপুর বেলা দাওয়াত। মামুনের বউয়ের জন্য বিয়ের সাজ কিছুই কেনা হয়নি । আলতাফ সাহেব দুটো ক্রয় কমেটি গঠন করে দ্রুত ক্রয় কর্মসূচী কম্প্লিট করার কথা বললেও উদ্ভট কর্মকান্ড ঘটতে থাকে ।অর্ক তার নির্ধারিত জিনিস সময়মত কিনে ফেললেও অন্য কমিটি কেনা শুরু করে তিনটার পর । তাদের কেনাকাটা শেষ হতে হতে সন্ধ্যা । দুপুরের দাওয়াত মিস । মামুন ক্রয়কমিটিতে থাকাতে সেও নেই । এটা পুরোপুরি চক্রান্ত ।সরাসরি হীনমন্যতা । সন্ধ্যায় বিয়ে বাড়িতে ফিরে যথারীতি হইচই। খাবার কই খাবার কই । অর্ক নিজেকে কীটপতঙ্গ ভাবতে থাকে । নিজেরাই দোষী আবার অপরের গায়ে দোষ চাপানো হচ্ছে ।অবশ্য অর্কের ভাবনা জুড়ে থাকে শায়লা। মনের ভিতরে শায়লা শায়লা সঙ্গীত চলছে সেই সঙ্গে চলছে আলতাফ সাহেবের নতুন রূপের ছোটলোকি কাজকারবার ।
মামুনের জন্য সামান্য একটি পাগড়ীর ব্যবস্থা হয়নি । এমন কি দেনমোহর ধার্য করা হলো তিন লক্ষ টাকা মাত্র ।কনে পক্ষ খুব অপমানিত বোধ করলেন । অবশ্য অর্ক এটাকে স্বাভাবিক ভাবে নিলেন । দেনমোহরের টাকার সঙ্গে মান সম্মান বিষয়ক কোন কিছু জড়িত নয় । বেশি দেনমোহর দিয়ে বরকে আটকে রাখার কায়দাটা বরঞ্চ অধিকতর খারাপ।তারপরও যে ছেলের জন্য দেনমোহর ধার্য করবেন ২০ লক্ষ টাকা সেখানে ৩ লক্ষ টাকাতো অপমান জনকই । এরপর গেট ধরার পালা । অর্কের হাতে একহাজার টাকার একটি নোট ধরিয়ে দিয়ে আলতাফ সাহেব বলে দিলেন এটা দিয়ে ফিতা কাটো !অর্কের মাথা হেট হলো ।
ব্যাপক শোরগোলের মধ্যে দিয়ে ধাক্কা ধাক্কির মধ্যে দিয়ে অর্ক পকেট থেকে চার হাজার টাকা ভরে দিয়ে তবেই ফিতা কাটা হলো । ফিতা কাটা হলে কি হবে ? আলতাফ সাহেব রেগে গেলেন অর্কের উপর ।কারণ তিনি এই বিয়েতে নিজেও খরচ করবেন না ; কাউকে খরচ করতেও দিবেন না ।
তবে অর্ক খুশি ।বিয়ে আর যাই হোক থানা পুলিশ পর্যন্ত গড়ায়নি । বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে । পরের দিন সকালবেলা মামুনকে রেখেই বিদায় নেয়ার সিদ্ধান্ত হলো । পতেঙ্গা ভ্রমনের ব্যাপারটি বাতিল হলো । সারা রাাস্তা চললো মামুনের শ্বশুরবাড়ির সমালোচনা । আলতাফ সাহেবের স্ত্রী ব্যাপক গোস্বা । সকাল বেলা তার ছেলের বউ তাকে আর আলতাফ সাহেবকে পা ছুঁয়ে ছালাম করেনি । ছালাম করবে কি ? সারারাতের দারুন পরিশ্রমের ভালবাসবাসিতে শ্রান্ত কপোতকপোতি চাদর মুড়ী দিয়ে বেঘুরে ঘুমুচ্ছিল ।
আলতাফ সাহেবের সাধের ইউনিক সার্ভিস স্টেশনে দেখা গেল মামুন আধাঘুম মুখ নিয়ে হাজির ।আলতাফ সাহেব বিয়েতে কতটা অসনতুষ্ট সেটি প্রমানের যে অংশটুকু বাকিছিল সেটি প্রমান করলেন গাবতলী বাসষ্টান্ডে এসে । ড্রাইভার বেচারা কাঙ্খিত জায়গার দুশো ফুট আগে থামানো নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত । আলতাফ সাহেব ড্রাইভারের কলার চেপে বকাঝকা করছেন । লোক জড়ো হয়ে গেছে । একজন বিশাল দেহি লোক ড্রাইভারের পক্ষ নিয়েছেন । আলতাফ সাহেব অর্ককে দেখিয়ে চেচাচ্ছেন ওকে চিনিস । অর্ক ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে এগিয়ে যায় । এই ড্রাইভার তুমি কি বলছো মামাকে । দৈত্যাকার লোকটিও না বুঝেই ড্রাইভারের উপর চড়াও হল । "এই ব্যাটা পায়ে ধরে মাফ চা ।তোরই দোষ ।" ভ্রমনের বলতে গেলে এখানেই পরিসমাপ্তি ।অর্ক ছোট বেলার কথা ভাবতে থাকে। বলাবাহুল্য এই প্রথম সেই শায়লাকে ভাবছেনা । অর্কের মনে ভেসে ওঠে অলতাফ সাহেব অর্কের মাথায় আদর করে বলছে "অর্ক গাড়ীতে ঝামেলা করাবনা । প্রয়োজনে দুইটাকা বেশি ভাড়া দিবা।দরিদ্র মানুষ খারাপ মানুষ ওরা যদি গায়ে হাত দেয় তাহলে ব্যাপারটা জঘন্য হবে "। সেই আলতাফ সাহেবের এই হিংস্রতা !
আসলে যারা প্রচন্ড রাগী তার বোধ হয় এধরণের অড সিচোয়েশনে পরেন বলেই ক্ষিপ্ত ভাব নিয়ে থাকেন । লোকমানের শখের সেল ফোন খানা হারিয়ে গেছে। ঝগাড়ার জটলায় সুযোগ সন্ধানি কেউ তার পকেট থেকে সেল ফোন নিয়ে ভেগেছে ।
অর্ক সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে আলতাফ সাহেবকে বাড়ী পর্যন্ত দিয়ে আসে ।কারণ পরাজিত আলতাফ সাহেব ব্যাপক মনক্ষুন্ন। কি করতে কি করে বসেন তার কোন ঠিক নেই । অর্কও শায়লার কাছে পরাজিত প্রায়! তাতে অবশ্য অর্কের কিছু যায় আসে না ।অর্ক পরাজয় বরণ করতে শিখে গেছে । হারতে শিখে গেছে । আর যে হারতে শিখে যায় কষ্ট দুঃখ কখনোই তাকে স্পর্শ করতে পারেনা । তবে এটা অর্ক মনে প্রাণে বিশ্বাস করে অর্কের হেরে যাওয়া মানে শায়লারও হেরে যাওয়া। সত্যিকারের প্রেম বঞ্চিত মানুষ বিজয়ী নয় কোন মতে ।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ২:১৭