কি আর বলবো ? মনটা খারাপ হয়ে গেল যখন পড়লাম জাফরুল মবীন
ব্লগিং কে গুড বাই জানিয়েছেন ।এমন একটি পোস্ট দিয়ে যেটিতে মন্তব্যের
কোন অপশন রাখেননি।তার মানে উনি আমাদের কথা বলার সুযোগ
দিবেন না ।তারপরও কিছু বলতে যাওয়া মানে অনধিকার চর্চার মতন ।
ঠিক এখনকার গণতন্ত্রের মতন। ভোটাধিকার বন্ধ। তারপরও মাথার
মধ্যে কবিতা ঘুরঘুর করছে।মনের মধ্যে নানা বিষয় ঘুরঘুর করছে।কি
কি কারণে একজন মানুষ ব্লগিং ছেড়ে দিতে চায় বা পারে।নানাবিধ
ব্যাপার মাথায় ঢুকেছে ।বেশিরভাগ ব্লগারই কর্ম ব্যস্ততার কথা বলে ব্লগকে
বিদায় জানান যদিও সেটি অভিমানের কারণে হয়ে থাকে । আমার মাথায়
কবিতার চর্চা চলছিল ।কবিতাটি এমন
যদি এসেই থাকেন
শ্বাপদসংকুল এই বনে
তবে কেন চলে যাবেন
কোন সে অভিমানে!
দোষগুণ মিলেই তো মানুষ লিখা আছে অভিধানে।
তাই বলি কেন চলে যাবেন—বিরহপ্রাণে—অন্যকোনখানে;
আপনার সমীপে,
আমাদের জমেছে অনেক ঋণ;
কিভাবে শোধিব তা বলে দিন?
যদি চলে যান দূরে
অভিমানের অচিনপুরে।
এই কি ঢের ভাল নয়
আমরা থেকে যাই কাঁধে কাঁধ রেখে
সমস্ত প্রতিকূলতায় আত্নবিশ্বাস মেখে।
পাছে লোকে কি বলে
তাতে কি আসে যায়?
আমাদের মন ভরে থাক
শুধু মঙ্গল কামনায়
ধরণীর পরে —যুগযুগ ধরে
তারাই হয়েছেন স্মরনীয়
সকল বাঁধা জয় করে যারা
মঙ্গল দীপ জ্বেলে ভবে, হয়েছেন বরণীয়।
আপনাতে দেখেছি রবির আলো প্রতিদিন
আপনি যে অনণ্য ব্লগার শ্রদ্ধেয় জাফরুল মবীন।
তাই বলি থেকে যান আমাদের মাঝে,
বিলিয়ে যান জ্ঞানের আলো রোজে রোজে,
ভুলে যান বিরহ জ্বালা অপমান;
আমাদের ভালবাসা নিয়ে এখানেই থেকে যান।
ক্ষমার উপর বড় কোন কিছু নেই ভবে
মহত্বের পরিচয় মিশে যদি ক্ষমা করেন তবে ।
যদি এসেই থাকেন কেন যাবেন চলে ?
এখানে থেকে যান মিনতি করি সকলে ।
কবিতার উৎপত্তি হৃদয় থেকে। অবশ্য আমার মত নবীশের কথা উনি
শুনবেন কেন? অনেক বিশাল হৃদয়ের কেউ হলেই কেবল এই অধমের
কথায় তার মন গলতে পারে । সেটি একান্তই তার এখতিয়ার । উনি
অভিমান ভুলে ব্লগে ফিরে আসলে আমার মত অনেকে খুব খুশি হতেন ।
হঠাৎ করে মনে হল প্রচন্ড গরম পড়েছে আজকে । এটা কি মাস? পরক্ষনেই
মনে হল বৈশাখ তো ঢাক ডোল পিটিয়ে তার অস্তিত্ব জানান দিবে ।এখন
বসন্ত চলছে। চৈত্র মাস ।চৈত্র মাস নামের সঙ্গে রবি ঠাকুরের সেই বিখ্যাত
কবিতাংশ
প্রহর শেষে আলোয় রাঙা সেদিন চৈত্রমাস
তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ ।
লোড শেডিং হলো অফিসে। মনে মনে কবিতা ঘুরছে । চৈত্রের কবিতা ।
চৈত্রের দাবদাহে—প্রেম—
উথালি পাথালি হাওয়া;
উদাসী হাওয়ায় ভেসে—মনে
শুধু বসন্তের গান গাওয়া
আহা!
সে কি মায়াবী হাসি ঠোঁটে,
দেখে দেখে বুকে রক্তজবা ফুঁটে।
তার বাঁকা চোখের চাওয়ায়
অনবদ্য সে কবিতার মত
উদাসী বুনো হওয়ায়।
আজ হয়ে যাক প্রেম বনে
চৈত্রের খরতাপে —পোড়ে যাক সবখানে।
মায়ার বাঁধনে হয়ে যাক জোড়া জোড়া
যৌবনের অনুরাগে আজ ফুটুক কৃষ্ণচূড়া।
চৈত্রের লু হাওয়ায়;
আজি ব্যাকুল এ প্রাণ
শুধু তাহারে পাওয়ায়।
আমার চাওয়া না চাওয়ায় তার কি আসে যায় ! সে তো চাঁদ আর আমি
বামন । অবশ্য সর্পকন্যা বলেও তিনি দাবী করে থাকেন । আর আমি
যৎসামন্য একজন মানুষ। তারপরও তো মানুষ । মানুষে মানুষে ভালবাসা
হওয়া অস্বাভাবিক নয় । মনের ভিতরে কবিতা বিদ্রোহ করে বসে । কেমন
জানি একটা নীচু ভাবের কবিতা চলে আসে । অবশ্য আমার নাকি লজ্জা
শরম নাই ।আদতেই আমার কবিতা লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে আমার
মাথায় ঝংকার তুলে
নাগিনীর ডিম্ব প্রসবে
বিস্মিত হয়না জ্ঞানীজন;
বাঘিনীরও পেট ফুলে ওঠে
যৌবনের উন্মাদনা যখন ।
ভালবাসার বাস নয় শুধু বিষুবীয় অঞ্চলে
বরফে ঢাকা সুমেরু মন্ডলে;
পেঙ্গুইন রাজ্যে,
তপ্ত সাহারার বুকে,
এমন কি সমুদ্রের নির্বাসনে সেন্ট হেলেনায়,
সেখানেও ভালবাসা দীপ জ্বেলে যায়।
ভালবাসা বাঁধা পরে না ঋতু পরিক্রমায়
চৈত্রের দাবদাহে— শরতে হেমন্তে বর্ষায়— প্রচন্ড খরায়—
হাড় কাঁপানো শীতে
ভালবাসায় গেয়ে যায় - বাসন্তী সংগীতে।
ভালবাসা থেমে থাকেনা বিত্তের ব্যবধানে।
ভালবাসা ভেঙে ফেলে—বর্লিন প্রচীর
ভালবাসায় ভেঙে যায় বিশ্ববিধাত্রীর
সুরক্ষিত সীমানা ;
ভালবাসা মানে না কোন মানা;
দুর্গম বনেও তার নিত্য আনাগোনা ।
দিনটা কেমন জানি কাটলো ।মনে মনে একটি দাবী ঘুরপাক খেতে থাকে।
ফিরে আসুক জাফরুল মবীন ।সব অভিমান ভুলে । আর এখনও বইছে
বসন্তের মাতাল হাওয়া ।মনে মনে ঘরপাক খাচ্ছে
এসোনা পরী এইখানে
হৃদয় আমার ভরিয়ে দাও
ভালবাসার গানে ।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১:৩২