প্রার্থনা ও অভিসম্পাত
মানবতার বিপর্যয় যার হাত ধরে
ভালোবাসবে কে তারে?
কে দেবে সম্মান?
অং সাং সূচী এক কলুষিত অধ্যায়
শান্তির নোবেল ইতিহাসে।
আরাকান রাজ্য থেকে
এখন নারী ও শিশুর রোলাজারি
ভেসে আসে-
ভেসে আসে নিপীরিত শিশুর লাশ
নাফ নদীর তীর ঘেষে।
সেখানে ভীক্ষুদের হাতে
নিহত মায়ের স্তনে নিষ্পাপ শিশুর
দুগ্ধপানের ব্যর্থ প্রয়াস
যেন মানবতার মৃত্যু ডেকে আনে।
জীবহত্যা মহাপাপ বলে যে ভীক্ষু
মুখে ফেণা তোলে;
তারা আজ নির্বিচারে মানুষ হত্যায় নিয়োজিত।
সেখানে মানুষ আজ শকুনের খাবার
শান্তিতে নোবেল পাওয়া কোন রমনীর
হাত আজ কলুষিত নিষ্পাপ নারী ও শিশুর রক্তে।
যে রাষ্ট্র শ্বাপদ সংকুল বন মানুষের জন্য
সে রাষ্ট্র পৃথিবীর বুকে টিকে থাকাই অমঙ্গল।
বুলেট আর বিস্ফোরণ তাদের এক মাত্র ভাষা
তাতে লাশ হয় আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা।
এসব দেখে হাসে অং সাং সূচী
আর তাদের ভিক্ষু বিধাতা।
বিশ্ব মানবতার চোখে —এমন নরখাদকের হাতে
শান্তির পদক বড্ড অশোভন।
আর এমন ভিক্ষুর মুখে
অহিংসা আর শান্তির বাণী
শেলসম বিঁধে বুকে।
এ প্রার্থনা করি —গোরখাদকের হাত থেকে
পরিত্রাণ পায় যেন বিপন্ন মানবতা।
ধ্বংস হয় যেন খুনির রক্ত পিপাসু মন;
আরাকান রাজ্যে মানবাধিকার নিয়ে
বেঁচে থাকুক রোহিঙ্গা জনগণ ।
সুপ্রিয় মিয়ানমার,
সুপ্রিয় মিয়ানমার, তোমার জন্য ফুলেল শুভেচ্ছা
তোমার আরকান রাজ্যে আমি কেবলই রোহিঙ্গা,
রাখাইন হতে পারিনি কোনদিন!
রক্তের হুলি খেলায় তোমার - প্রিয়জনের সক্ষমতা
পাক হানাদার ছাড়িয়ে।
আমার নগ্ন মৃত লাশ
মা-হারা বাবা-হারা শিশুদের ক্রন্দনরোল
মাথা কাটা- হাত কাটা -মৃত দেহ
যেন জেগে ওঠা অচেনা দ্বীপ —সাগরের বুকে;
আমার হৃদয়, যেন পথে ঘাটে পরে থাকা রোহিঙ্গা
প্রিয়াস্পদ ছিলনা কোন দিন —তোমার বিবেচনায়।
রোহিঙ্গা -ললাটে জোটে কেবল সন্ত্রাসীর তকমা!
আজ তোমার চোখে কেবলই সন্ত্রাসী আমি;
আর নরখাদক-গোরখাদক গেরুয়া চাদরে আবৃত ভিক্ষুরা
অত্যাচারিত অথবা সাধু পুরুষ।
তাদের দিয়ে করেছো বিরচন
তোমার শ্বাপদসংকুল বন ।
সুপ্রিয় মিয়ানমার,
তুমি আর্ত পীরিত নারী ও শিশুর
আজীবনের অভিসম্পাত এখন ।
ছবি : গুগুল