অঘটনের রাতে ব্রাজিল ড্র করেছে। এটাই ছিলো চূড়ান্ত ফলাফল। তবু আরও কথা আছে।যাদের সঙ্গে ড্র করেছে সেই সুইজারল্যান্ড বিশ্বের ৬ নম্বর দল। গায়ের জোরে ফুটবল খেলেছে। তাদের ফা্উলের প্রধান লক্ষ্য নেইমার জুনিয়র। স্বাভাবিকভাবে রেফারিং এর উদারতা খেলোয়াড়দের বেশি ফাউলে উদ্বুদ্ধ করে। এ খেলায় তার বতিক্রম হয়নি। সুইসদের ফাউল করার প্রবণতা ছিলো চোখে পড়ার মতো। অযথা নেইমারকে পিছন থেকে মুখে ধরে ফেলে দিল, পায়ে আঘাত করলো, হাঁটুতে আঘাত করলো, পায়ের গোড়ালিতে বুটের ডগা মেরে দিলো, পেছন থেকে জার্সি টেনে ধরে হেচকা টানে মাঠের মধ্যে ফেলেই দিলো; ব্রাজিলের যে খেলোয়াড়ই সুইসদের বিপদ সীমায় পৌঁছে গেছে তাকে ফাউল করে রুখে দিয়েছে শক্তিশালী সুইস খেলোয়াড়রা।
গ্যাব্রিয়েলা জেসুসকে পেনাল্টি বক্সের ভিতরে একেবারে ধরে ছুঁড়ে ফেলে দেয়া হলো। অবধারিত পেনাল্টি রেফারি দিলেন না। পেনাল্টি হলেই যে গোল সুনিশ্চিত নয় সেটি মেসি মিস করে বুঝিয়ে দিলেও নেইমার হয়তো মিস করতেন না। খেলার প্রথম দিকে নেইমারকে করা কঠিন ফাউলগুলো রেফারি আমলেই নিলেন না। ফলে ফাউলপ্রবণতা বেড়ে গেল।
এমনকি জুবের (১৪ নম্বর জার্সি) কর্ণার থেকে পাওয়া বল হেড দিয়ে জালে পাঠানোর আগে ব্রাজিলের ডিফেন্ডারকে ধাক্কা মেরেছেন সেটিতে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই রেফারির।
কোটিনহো, পাউলিনহো, মার্সেলো ভালো খেলেছেন। ব্রাজিলের রক্ষণভাগও ছিলো অসাধারণ। গোল দেয়ার পর কিছু সময় ব্রাজিলের সব খেলোয়াড় অনেক ডিপেনসিভ হয়ে গিয়েছিলেন। তাদের সবাই মাঠের নিজেদের অর্ধেকেই থেকেছেন কেউ মাঝমাঠ অতিক্রম করেননি। ব্যাপারটি ভালো লাগেনি আমার।
আহত ব্যাঘ্র নেইমার বিপক্ষ শিবিরের জন্য ছিলেন রীতিমত আতঙ্ক। অনেক সময়ই দেখা গেছে চারজন সুইস খেলোযাড় তাকে আটকে রেখেছেন। শতভাগ ফিট না হলেও নেইমার পুরো ৯০ মিনিট খেলেছেন। তাকে ফাউলের পর ফাউল করার পরও মাঠ ছাড়েননি। ভাগ্যদেবীর সহায়তা থাকলে হয়তো গোলও করে বসতেন।
নেইমার মাঠে থাকলে ব্রাজিল হারেনা। এটা এখন প্রবাদের মতো। বিশ্বের ৬ নম্বর দলের পাওয়ার ফুটবলের সঙ্গে ১ নম্বর দল ড্র করেছে রেফারিং এর আনুকূল্যে। তাই হতাশ হবার মত পারফরমেন্স এটি নয়। যেখানে অঘটনের রাতে জার্মানরা মেক্সিকোর কাছে ১-০ গোলে বিধ্বস্ত সেখানে ব্রাজিল দল তাদের শক্তিমত্তার প্রমান ঠিকই দেখিয়েছেন।
সুইজারল্যান্ড তো আর আইসল্যান্ড নয় যে বিশ্বকাপে প্রথম খেলছে। কোটিনহো ডি বক্সের বাইরে থেকে ২য় বারে যে গোলটি করলেন সেটি অনন্য হয়ে থাকলো। এই ব্রাজিল তারুন্যনির্ভর দল। যদিও গ্যাব্রিয়েলা জেসুস নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। এই দল বিশ্বকাপে চূড়ান্ত সফলতা লাভ করার শক্তি রাখে। বিশ্বকাপে ছোট দলকেও হেয় করার সুযোগ নেই। নইলে হোঁচট খাওয়ার চান্স।এটা মনে রাখতে হবে।
ব্রাজিল শক্তিশালী গ্রুপে আছে। এখান থেকে দু’টি দল সেমিফাইনালে উঠলে অবাক হবোনা। সর্বিয়া দারুন খেলছে। শক্তির বিচারে তারাও কম নয়। তাদের হারাতে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হবে ব্রাজিল দলের। খেলা হচ্ছে মস্কোতে এটাও মাথায় রাখতে হবে। রাশিয়া নিজেদের মাঠে দারুন খেলেছে। দিনগড়ার সাথে সাথে ব্রাজিল টিমের সমন্বয় বাড়তে থাকবে বোঝাপড়াটা বাড়তে থাকবে। যা বিশ্বকাপে ব্রাজিলকে সাফল্য এনে দিতে সহায়ক হবে। জয়তু ব্রাজিল!!!!
জানি তুমি আছো মোর পাশে,
আর কিছু নাহি চাই,
তুমি থাকিলে ভরসা আছে প্রাণে
শত ঝড় ঝঞ্জায়,
জানি জীবন নৌকো পৌঁছে যাবে
স্বপ্নের ঠিকানায়।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুন, ২০১৮ দুপুর ১২:১৪