প্রচন্ড মন খারাপ। গত দুইদিন ধরে কেবল হাঁটাহাঁটি করি। কবিগুরু চাঁদের আলো খেতেন। আর আমি নিয়নের আলো খাই। তারপর পরোপকার থেমে নেই। আমার মামাতো বোনের ছেলের জন্য হোস্টেল সিট ম্যানেজ করতে হবে। একজন পুরোনো বন্ধু দায়িত্ব নিয়েছেলেন। তিনি একটি রাজনৈতিক দলরে কেন্দ্রীয় নেতা। অনেক দিন আমার সঙ্গে দেখা নেই। আমার সঙ্গে দেখা হওয়াতে তার আনন্দের শেষ নেই। এসেই তার সঙ্গের লোকজনের সঙ্গে গল্প জুড়ে দিল। মামুন ভাইয়ের অভিশাপে দলের এই অবস্থা। হাওয়াভবন তাকে জেলে বন্দী করলো বিনা দোষে। বেচারা কষ্টে মরে গেল। আর আমাকে দেখিয়ে বললো এই যে আমার বন্ধু মামুন ভাইয়ের যে কোন মুভমেন্টের সিপাহসালার। তখন আমি বললাম মামুন ভাই মারা যাওয়ার পর আমি আর রাজনীতি করিনা। বন্ধু খুব জুরাজুরি শুরু করলেন তার সঙ্গে খেতে হবে। আমি বললাম আমি খাওয়াতে পারি। সে আমাকে খাওয়াবেই পরে ব্যস্ততার কথা বলে সরে আসলাম। তবে একদিন খেতেই হবে তার সাথে। আরও বলে দিলেন অন্য কেউ হলে আমি এই কাজ করতাম না। তোমারটা অবশ্যই করবো। আমি নিজে স্যারের সঙ্গে দেখা করে করে দেব। এই একটা কাজ হতেই হবে। আমি জানতাম আমার কাজ বন্ধু করবেই। উল্টু দাওয়াতও খেতে্ হবে। যারা চিনে আমাকে এভাবেই চিনে।এরকম একজন দুইজন নয় অনেক ।বলতে গেলে পুরো বাংলাদেশ্ । এটা আমার অর্জন। কিন্তু আমি আমাকে লুকিয়ে রাখি।গত কাল থেকে আরও। যার কারণে সে ঠিকই জানে।
আজ সকালে গেলাম গ্রামের বাড়ী গ্রামের পথে হাঠতে হাঠতে মন কিছুটা ভালো্ হল। তিন মামার তিন বিশাল বাড়ি তৈরি হচ্ছে । পাশাপাশি তিনটি বাড়ি। দারুন দৃশ্য। আগে কোটি কোটি টাকার মালিক মামাদের বড়ীর অবস্থা দেখলে কস্ট হতো খুব। আমাদের বাড়িটি ছিল সবচেযে সুন্দর তিনতালা ফাউন্ডেশন দিয়ে একতালা বাড়ী। ওটাই এলাকার আকর্ষনীয় বাড়ি। আর এখন গ্রামে চার পাঁচ তালার অভাব নেই। কথা সেটি নয়। আমাদের গ্রামে দুই ভাই পাশাপাশি থাকেন। তাদের দুই জনের বউ সেরা ঝগড়াটে। দুই জন মাস ব্যাপী ঝগড়া করেছেন এমন রেকর্ডও আছে। শেখহাসিনার সংসদে তারা থাকলে শেখহাছিনাকে শিখিয়ে দিতেন ঝগড়া কাকে বলে কতপ্রকার ও কি কি? তাদের সঙ্গে পানির লাইন দেয়া নিয়ে ঝগড়া। তাদের জমি আসলে খাস জমি সেখানে পানির লাইনের পানি ফেলতে দেবে না্। সেই ঝগড়া।মন ভালো নেই। প্রচন্ড ক্ষোভ জমে আছে বুকে। মনে হচ্ছিল পৃথিবীটা ভেঙে ফেলি। ঠিক সেই সময় ঝগড়াওয়ালির হাজবেন্ড এলাকার সব প্যাচের গুরু পথ দিয়ে যাচ্ছিল। দেখা মাত্র মুখ থেকে প্রচন্ড গালি বেড় হলো আমার। তাকে বললাম আমার বাড়ির সামনে দিয়ে তুই যাবিনা। বেচারা ভয়ে শুকিয়ে কাঠ। এর কিছুক্ষণ পর সেই দুই বিখ্যাত দুই মহীলা এসে হাজির। তুমুল ঝগড়া করলাম। দুই মহীলা ব্যাকফুটে আমি ফ্রন্টফুটে। এলাকার সব মানুষ অবাক হয়ে গেছে আমিও যে ঝগড়া করতে পারি এটা তাদের হিসেবেই ছিল না । দুইজনকে হারিয়ে দিলাম শাসিয়ে দিলাম। এলাকার সবাই খাল ভরাট করে ফেলছে।পানি যাবে কোনদিক দিয়ে। তারা উত্তর দিল নদী ভরাট করে কেমনে। আমরা খাল ভরাট করলে দূষ। একটা মসজিদও খাল ভরাট করে করা হয়েছে্। এই হলো আমাদের দেশ্ নদী খেকোদের দেখাদেখি অন্যরাও খাল ভরাট শিখছে। আমার আছে ফোনের জোর । ঝগড়া করে পুরো এলাকা কবরের নিরবতা বানিয়ে ফেললাম। সবাই ভয়ে ভয়ে চলাফেরা করছে । ঝগড়া শেষে খাটে শুয়ে কাটিয়ে দিলাম সারাদিন। দারুন বিষন্ন মন। এত বিষন্ন আর লাগে নি কখন। এইদিন একটা কবিতাও মনে আসেনি । কবিতা মরে গেছে। কবিতা পার্থিব লোভের কাছে হয়তো হেরে গেছে। আমি বোধহয় খুব ভয়ানক হয়ে ওঠলাম । আমাকে সবাই স্নেহ করতো । আস্তে আস্তে আর কেউ হয়তো করবে না। আবার করবে। পটপরিবর্তনে সবদিক দিয়ে আমি হয়তো ভিনি ভিডি ভিসি হয়ে ওঠবো।অথবা ভ্যানিশ। কবিতা লিখতে পারছিনা। চোখের সামনে এক দলা পচা মাংশপিন্ড ভেসে আসছে। আবার কখনো ডাস্টবিন । আচ্ছা...না থাক। কোন দিক দিয়ে বিশ্বকাপের তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ হয়ে গেছে খবরও রাখিনি। কোন দল তৃতীয় হলো জানিনা।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১১:৪০