somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইউরোপে ২৮ দিন >> প্রথম পর্ব: সূচনা

০১ লা নভেম্বর, ২০১১ দুপুর ২:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইউরোপ => রূপকথা'র দেশ, ফুটবল প্রেমিকদের রাজ্য, বইতে পড়া বিশ্বসভ্যতার কেন্দ্র..........কিছুদিন আগে (০৭-ফেব্রুয়ারী-২০১১) ইউরোপে গিয়েছিলাম অফিস থেকে ট্রেনিংয়ে পাঠিয়েছিল জন্যে। ইউরোপ বলছি যদিও কিন্তু আমার গন্তব্য ছিল বাডগোডেসবার্গ, বন, জার্মানী; এরপর ওখানে ঘুরেছি আরো ৪টা দেশ/শহর: ব্রাসেলস- আমস্টারডাম- প্যারিস- বাসেল (সুইজারল্যান্ড)- লজান/মন্ট্রিউ (সুইজারল্যান্ড)- জুরিখ (সুইজারল্যান্ড)
আমার নিজের ব্লগে লিখে রাখছিলাম স্মৃতিগুলো, তবে সামহোয়ারইনব্লগেও শেয়ার করা যেতে পারে বলে মনে হওয়াতে এখানেও লিখছিল। অনেকেই ব্লগে জিজ্ঞেস করেন ব্লগে রেগুলার হওয়া যায় কিনা, চেষ্টা থাকবে এখন থেকে নিজের ব্লগ+এই ব্লগ ২জায়গাতেই রেগুলার হওয়ার :)

***
শুরুর কথা:
আমার টিমলিড তখন আবীর ভাই, হঠাৎ করেই একদিন আবীর ভাইয়া ডেকে বললেন: "আমাদের টিম ( PADDS) থেকে আমাকে আর জামিলকে জার্মানীতে যেতে হবে PADDS এর ট্রেনিং নিয়ে আসার জন্যে"। তখন ডিসেম্বর, পসিবল ডেট বলা হল ফেব্রুয়ারী এর শুরুতেই...আবীর ভাই জানালেন, জার্মানী ভিসার জন্য অ্যাপ্লাই করা মোটামুটি সহজ এবং লজিক্যাল কারণ ওরা ওদের ওয়েবসাইটে ভালমতোই যা যা লাগবে উল্লেখ করে রেখেছে। ইনভাইটেশন কার্ড নিয়ে ওদের ওখানে একদিন যেতে হবে, কার্ড দেখে ওরা ৭দিন পরে ইন্টারভিউ এর ডেট দিবে, এর ৭দিন পরে ভিসা দিবে: এই হল নিয়ম।

আমি দেশের বাইরে কখনো যাইনি, ইনফ্যাক্ট দেশেও ঘুরেছি বলতে: রংপুর, খাগড়াছড়ি, দিনাজপুর, জাফলং, সেন্টমার্টিন, নীলগীরি, বান্দরবান। বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, যেই ৩ বার আমি কক্সবাজার গিয়েছি কোনবারই আমার সাগরে নামার সময়/কপাল হয়নি......তাই হঠাৎ করেই একবারে ইউরোপে যাওয়ার অনুভূতিটা কেমন ভোঁতা তখন। যদিও অফিসের কাজে যাবো আমি কিন্তু জার্মানীতে আমাদের যেই বস'রা আছেন (রেনে, উলরিখ, ইয়ান) সবাই চরম বস এবং অনেক অনেক ভালোমানুষ তাই অফিসিয়াল কাজ নিয়ে কোন ভীতি কাজ করছিলো না। আমার মাথায় তখন যেটা কাজ করছে তা হল: আর কখনো ইউরোপে যাওয়া নাও হতে পারে, সুতরাং সর্বোচ্চ পরিমাণ ঘুরতে হবে। নেটে চললো জার্মানীর আবহাওয়া নিয়ে গবেষণা, তথ্য যা পাওয়া গেল তা ভালোই: তখন জার্মানীতে প্রবল ঠান্ডা মাত্র শেষ হয়েছে। রংপুরে বড় হওয়াতে শীতকাল আমার বরাবরই প্রিয় তাই খুশীই হলাম ঠান্ডার দেশে যাচ্ছি জন্যে, তুষারপাত দেখার ছোট্টবেলার ইচ্ছা সত্যি হওয়ার অনেক কাছে...

ইউরোরেল, ট্রিপঅ্যাডভাইজার এসব ওয়েবসাইট ঘুরে ঘুরে প্ল্যান করা শুরু করলাম কোথায় কোথায় যাওয়া যায়, খরচ কেমন হবে এইসব, দেশে কি কি কিনবো, নিশ্চয়ই বঙ্গবাজার ভরসা কেনাকাটার জন্য সুতরাং ওটাতে যেতে হবে। আমার সাথে যাচ্ছে জামিল, ওর প্ল্যান শুনলাম ও কোথায় কোথায় যাওয়ার প্ল্যান করছে। আমার মাথায় তখন টপ প্রায়োরিটি "মিলাউ ভায়াডাক্ট " (পৃথিবীর সবচেয়ে উচুঁ ব্রীজ, এর নিচে দিয়ে মেঘ উড়ে বেড়ানোর ছবি, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকে এর মেকিং দেখে আমার আজন্ম সাধ তখন এটায় ঘুরে আসা একবার হলেও). . .আমার এটা একটা বিচিত্র স্বভাব: অনেকগুলো অপশন থেকে আমার সিঙ্গেল কিছু সিলেক্ট করতে কেন জানি কখনোই দেরী/সমস্যা হয়না। আমার পছন্দ ভাল হয়না বেশীরভাগ সময়ই কিন্তু তাই বলে খারাপও লাগে তেমনটা না।

একই সাথে আমি পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর ক্যাসলগুলি দেখতে চাই যেগুলির সবকয়টাই ইউরোপে। সেইসাথে ইউরোপে যাচ্ছি, চ্যাম্পিয়নস লীগের ম্যাচ না দেখলে কিভাবে হয়। ইউরোপের বেশীরভাগ দেশেই এক ভিসা: "শেনজেন", কিন্তু ওটায় ইংল্যান্ড যাওয়া সম্ভব না তাই ইচ্ছা থাকলেও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের খেলা দেখা হবে না :( খুব সংক্ষেপে বলতে গেলে কি করা যেতে পারে সেটারই এত অপশন আপাতত ভাবলাম ক্ষান্ত দেই। "গাছে কাঁঠাল-গোঁফে তেল" অবস্থা করে লাভ নাই.....

তখন জানুয়ারীর ১৬তারিখ, কালকে ইন্টারভিউ ডেট নিতে যেতে হবে। সামনে ফেব্রুয়ারীর ৩ তারিখ বুয়েটে সমাবর্তন, মনে-প্রাণে চাইছিলাম কোনভাবেই যেন এটা মিস না হয় কারণ ইউরোপ কোথাও হেঁটে চলে যাচ্ছে না কিন্তু আমার বন্ধুদের প্রায় সবাই আলাদা হয়ে যাবে, ওদের সাথে হয়তোবা এটাই শেষ আনন্দের অনুষ্ঠান। তাই নিজেকে সান্ত্বনা দিলাম: "কাল দেখা যাবে কি হয়"...


আগামী পর্বে: "ভিসা ইন্টারভিউ এবং ঢাকা থেকে দুবাই"
আমার ইনভাইটেশন কার্ড এসেছিলো জানুয়ারীর ১৩/১৪ তারিখের দিকে, সেইমত ১৭ তারিখ গেলাম জার্মান এম্ব্যাসীতে, ওরা বললো ২৪/২৫ যেকোন একদিন ডেট পাওয়া যাবে। "শুভস্য শীঘ্রম" মন্ত্র অনুসারে ২৪জানুয়ারীটাই সিলেক্ট করলাম। অফিস থেকে অফিসিয়াল ডকুমেন্ট সব রেডী করে দিলেও আমার দিক থেকে যেই জিনিসটা লাগবে সেটা হল "ছবি"। এটা পেইন একটা জিনিস /:) আমার ছবি তোলা নাই, যা আছে তা রংপুরে, সুতরাং দৌড়াতে হল ছবি কালেক্ট করতে।

*******
বিস্তারিতভাবেই প্রতিটি ক্ষণ ধরে ধরে লেখার ইচ্ছা আছে পুরোটার, কেউ আগ্রহী হলে পড়বেন এই আমন্ত্রণ থাকলো :)

ভাল থাকবেন। শুভকামনা।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা নভেম্বর, ২০১১ দুপুর ২:৫৫
১০টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×