কাহিনী:১
আমার পরিচিত এক বন্ধু আমার কাছে এসে বলল,
- দোস্ত এই মাত্র আমার প্রেমিকা কে খুন করে এসেছি।
- বললেই হলো, আমি বিশ্বাস করিনা।
- প্রমাণ চাস?
- অবশ্যই
- দেখ. দেখ. আমার ঠোঁটে গাঢ় লিপস্টিকের লাল প্রলেপ লেগে আছে।
আমি তার ন্যাকামি দেখে আশ্চার্য হলাম। পরে খুঁজ নিয়ে জানতে পরলাম, সে সদ্য কবিতা লেখা শুরু করেছে।
কাহিনী-২:
গত কুরবাণি ঈদের পর মামা বাড়ি গেছি। আমি তো মামা-মামির আদরে আহ্লাদে আটখানা। আমাকে কাছে পেয়ে মামাত ভাইবোনরা মহা খুশি। তাদের এই আনন্দে ভাটা পড়ে যখন রাতে মামানি বললেন, তোর ভাইয়ার কাছে পড়তে বস। আমিও অবাক। সারা দিনের আপ্যায়নের খরচটা কি পোলপান পড়াইয়া উসুল কর নিবে! মামাত বোন ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে আর ভাই চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। পড়ার কথা শুনে একজনের মাথা ব্যাথা শুরু করেছে, আরেকজনের চোখে ঘুম এসে গেল। আমি মনে মনে বললাম, তোরাই জাত স্টুডেন্ট। তোরা আছে বলেই লজিং বা টিউশনির মাস্টারা কোন রকম খেয়ে দেয়ে বেঁচে আছে। সর্বশেষ পোলাপাইন পড়াইছি 2013 সালে। টাইম মেশিন চড়ে 2013 সালে ফিরে গেলাম! যা হউক তাদের নিয়ে পড়ার টেবিলে বসলাম,
- তাম্মি গণিত বইটা নাও।
- এখন অংক করব না ভাইয়, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান পড়ব।
- কিসের ভাইয়া! এখন থেকে স্যার বলবি, আর শোন, আগে অংক ইংরেজী শিখো, গার্হস্থে মন দেয়ার এখনো অনেক সময় বাকী আছে।
- জি আচ্ছা।
দুইটা অংক করে দিলাম। তারপর তাকে একটি করতে দিয়ে হাতে বেত নিয়ে বসে আছি।
তাম্মি অংক করছে। আমি সেই 2012 সালে ফিরে গেলাম। মামানি টেবিলে চা-নাস্তা দিয়ে গেল। চা নাস্তা খাওয়ার সময় একটু মনে হয়নি মামা বাড়ি খাচ্ছি! মনো হলো স্টুডেন্টের বাসায় খাচ্ছি। সদ্য যে মহিলা চা দিয়ে গেল তিনি হলো আমার ছাত্র/ছাত্রীর মা। ছাত্রের বাবা অফিসে আছেন। ও হ্যা… গত মাসের টিউশনির টাকা বাকী পড়ে আছে। যাওয়ার সময় চাইতে হবে। টিউশনির টাকাটা হাতে না পেলে মেস বাড়া দেয়া হবেনা। বাড়ি ওয়ালা সকাল বিকাল তাগাদান দেন।
কিছুক্ষণ পড় তাম্মি আমাকে ডাক দিলো, তার ডাকে আমার সম্মিত ফিরে এলো। সে আমাকে বলল, ভাইয়া অংক করা শেষ, এখন 'আনন্দ পাঠ' পড়ব। আমি বললাম, আচ্ছা ঠিক আছে। আনন্দ পাঠ বইটি হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করছি। এক জায়গায় গিয়ে চোখ আটকে গেল। সেখানে কাঁচা হাতে লেখা একটি ছড়া/কবিতা দেখতে পেলাম। কবিতাটি এখন আর ভালোভাবে মনে করতে পারছিনা। সেটি মোটামুটি এরকম ছিল-
......................................
আকাশে উড়িনা আমি উড়ে সাদা বক
তোমাকে জানাই অগ্রিম ঈদ মোবারক।
কবিতা পড়ে আমার ভিমড়ি খাওয়ার অবস্থা। জিঙ্গেস করলাম কে লিখেছে, তুমি? এবার সে লজ্জা পেল। আমি বললাম থাক আর শরম পেতে হবে না, তোমার ভবিষ্যৎ ফকফকা। তুমি এখন ফেসবুক কবিদের পদ মর্যাদায় আছো!
-
-
এবার সে মুচকি হেসে উঠল।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:৪৩