ধর্ম গুরুরা (সব ধর্মের) কোন রক্তপাত, বিশৃঙ্খলা, যুদ্ধ, প্রাকৃতিক হানাহানি ঘটার আগে বা ঘটার সময় খুব আগ্রহ সহকারে অপেক্ষা করেন ফল লাভের আশায়। ফলা ফলের উপর নির্ভর করে তাদের পবর্তী কার্যক্রম। মানব বিপর্যয়ের সময় ধর্ম গুরুরা মানুষের পাশে থেকে লজিস্টিক সার্পোট দিয়েছে এমন নজির খুব একটা নেই। তারা মানবতা বা মানব সভ্যতা ধ্বংসের পর সেখানে গিয়ে মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে ত্রাণ কর্তার ভূমিকায় হাজির হন। উদ্দেশ্য নিজ ধর্মের অনুসারী বৃদ্ধি করা। যেন মানুষ কে সাহায্য করতে হলে নিজেদের ঈশ্বরের অনুসারী বৃদ্ধি করতে হবে! তা নহলে করা যাবেনা!
আবার কিছু ক্ষেত্রে নিজ ঈশ্বরের অনুসারী বৃদ্ধি করতে গিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলের নজির আছে। এ প্রসঙ্গে জিম্বাবুয়ের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট একটি উক্তি করেছেন; ইউরোপিয়ানরা যখন আমাদের দেশে প্রবেশ করেছে তখন তাদের হাতে ছিল বাইবেল, আমাদের হাতে রাজ্য। এখন আমাদের হাতে বাইবেল তাদের হাতে রাজ্য! এই সমস্ত বেনিয়া ধর্মখোড়দের বা ধর্ম ভিত্তিক সংগঠনের কার্যক্রমের আসল রুপ জানতে হলে আপনাকে নজরুলের 'মৃত্যু ক্ষুদা' পড়তে হবে।
এই বঙ্গ এবং ভারতীয় উপমহাদেশ এক সময় বৌদ্ধ ধর্মের খুব প্রভাব ছিল। অনেক রাজাও ছিল বৌদ্ধ। এই বৌদ্ধদের অত্যাচারে হিন্দু এবং অন্যান্য ধর্মের মানুষের অবস্হা ছিল ত্রাহি ত্রাহি। অনেক হিন্দু ঐতিহাসিক লিখেছেন; বৌদ্ধদের এহেন অবস্হা থেকে রক্ষা করতে ঈশ্বর ভারতবর্ষে মুসলমানদের পাঠিয়েছেন। এই উপ- মহাদেশে বৌদ্ধদের প্রভাব এবং সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণ নিশ্চয় আপনাদের জানা আছে।
কোন রাজ্য দখল করতে হলে আগেরকার দিনে এক পক্ষ আরেক পক্ষের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হতো। বর্তমানে তুরুপের তাসের ঘর ((জাতিসংঘ) থাকার কারণে সেটি অনেক ক্ষেত্রে সরাসরি সম্ভব হয়না। তাই তারা বিকল্প পথের আশ্রয় নিয়ে থাকে। এই বিকল্প পথের অন্যতম পথ হলো-
১। নিজেদের অনুগত সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করা।
২। নিজ জাতিভুক্ত জন সংখ্যাকে সংশ্লিষ্ট দেশে স্হায়ী বা অস্হায়ী ভিত্তিতে মাইগ্রেশন করা।
৩। উক্ত দেশে নিজ গোয়েন্দা এজেন্সিকে তৎপর রাখা।
৪। কিছু সুচীল (কথিত সুশীল) কে অর্থ পেইডের মাধ্যমে নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় সমূহের বগলবাজার দায়িত্ব দেয়া।
৫। নিজেদের ধর্ম, কৃষ্টি কালচারের প্রচার ঘটানো।
৬। এই লক্ষে মিডিয়া কে ব্যবহার করা, এবং তার উপযোগী সিরিয়াল, নাটক এবং সিনেমা তৈরী করে প্রচারের ব্যবস্হা করা।
৭। দ্বি-পাক্ষিক চুক্তির নাম করে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিজেদের অনুকূলে নেয়া।
৮। টার্গেটকৃত দেশ সমূহে নানা ভাবে প্রভাব বিস্তার করে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা যাতে উক্ত দেশের ভিত দুর্বল করে রাখা যায় এবং তারা নিজেরাই এসে ধরা দেয়।
ইহা ছাড়াও আরো বিভিন্ন তরিকার আশ্রয় নিয়ে থাকেন সেগুলো দেশ ও বর্হি বিশ্বে নজর দিলে বুজতে পারবেন। পরাশক্তি বা আঞ্চলিক শক্তিগুলো পার্শ্ববতী ছোট, দুর্বল রাষ্ট সমূহ কয়রাত্ত্ব বা অনুগত করার জন্য দীর্ঘ মেয়াদি মাষ্টার প্লান তৈরি করে থাকে এবং সে লক্ষে তারা কাজ চালিয়ে যায়। কিন্তু ছোট রাষ্ট্র সমূহ বিষয়টি তাৎক্ষণিক বুঝতে অনেক ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়। কারণ বিষয়টি দীর্ঘ মেয়াদি, তাই কুফল ফুটে উঠে ধীরেধীরে। কিন্তু চূড়ান্ত অবস্হায় এসে মারাত্মক আঘাত হানে।
অতএব কাণ্ডারি হুশিয়ার।।।
ছবি: গুগল মামা থেকে নিয়েছি।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:৩১