somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভাঙ্গা রেকর্ড আর কত দিন? আসুন লেটেষ্টা বাজাই।।

৩০ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



দেশে সম-সাময়িক বিশ্লেষকের সংখ্যা বেড়ে গেছে। এই বেড়ে যাওয়াটা আগাছা উৎপাদনের মত। দেশে কোন ঘটনা ঘটলে (সেটা হউক গৌরব করার মত অথবা নিন্দিত) নানা জনে বিভিন্ন এঙ্গেলে মতামত দেন। এই মতামত কিন্তু কেউ চিল্লাপাল্লা করে দিচ্ছেনা। মতামতগুলো সোশাল মিডিয়ায় দেয়া হচ্ছে এবং যার যার স্ব-ইচ্ছায় দিচ্ছেন। এই মতামতের গুরুত্ব আছে। এটা কেউ প্রকাশ্যে স্বীকার করতে না চাইলেও ধামাচাপা দিয়ে রাখতে পারছেন না।

এমন এক সময় ছিল যখন বড় মতামত বলতে বিটিভিতে প্রচারিত মতামত কে বুঝতাম। বিটিভিতে গিয়ে যারা মতামত ব্যক্ত করতেন তাদের কে আলাদা এবং অভিজাত শ্রেণি মনে করা হত। কেননা সেখানে কথা বলতে সবাই চান্স পেতেন না। যারা পেতেন তারা হয় দল কানা ছিলো অথবা তাদের হাতে প্রেসক্রিপশন ধরিয়ে দেয়া হত যাতে প্রেসক্রিপশন ফলো করে প্রতিটি ঢোক গিলেন। আর খবরের কথা নাই...ই বললাম। একদিন বিটিভির অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ও পরিচালকের মধ্যে কথা হচ্ছে:

-সঞ্চালক: স্যার এখানে দশজন মন্ত্রীর খবর আছে!
-পরিচালক: কাট, কাট....., বলিস কি! তাদের দুর্ণীতির খবর বাহির হয়ে গেছি নাকি?
-সঞ্চালক: না স্যার, বলছিলাম কি রাতের সংবাদে উন্নয়নের ফিরিস্তি প্রকাশ করার মত মাত্র দশ জন মন্ত্রীর রিপোর্ট হাতে এসে পৌছেছে।।
-পরিচালক: আগে বলবি তো। আমার তো আবার পেরেশানি উঠে গেছিলো।



বর্তমানে বিটিভি কারা দেখে আর কে চালায় সেটি একটি বড় প্রশ্ন। দেশের হাতেগোনা দু'একজন ছাড়া বিটিভির মহা-পরিচালকের নাম বলতে পারবে কিনা সন্দেহ আছে, উপস্হাপকের কথা না তোলাই ভালো। এখন কাউকে রিমান্ডে নিলেও স্বীকার করবেনা সে বিটিভি দেখে। অথচ বিশ বছর আগে তা ছিলো অকল্পণীয়। এখানে দেখা যাচ্ছে যে, মানুষ সুযোগ সুবিধা পেলে মিডিয়াতে যারা এখন গলাবাজি করেন, যারা ঢাক-ঢোল পিটান, তাদের কে ছুঁড়ে ফেলে দিতে এক মহুর্ত সময় নিবেনা।।

একমুখী কোন কার্যই সুবিধার হয়না। এর প্রতিক্রিয়া মারাত্মক। এতে মহা বিস্ফারণ ঘটে। এবং যে কোন সময় সাজানো ডিফেন্স ভেঙ্গে তচনচ হয়ে যেতে পারে। যা ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কে মারাত্মক ভোগায়। মনে রাখা উচিৎ, আমি যদি জোর করে মাঠ দখল নিয়ে গোল পোষ্টে বল শর্ট করি এবং উৎযাপন শুরু করে দেই, তাহলে সেই গোল উৎযাপনের দু'আনা দাম নেই। কারণ এখানে না আছে রেফারী, না আছে দর্শক, না আছে প্রতিপক্ষ দল।

যুগ পাল্টিয়েছে। এখন মামুষদের বোকা ভাবলে ভুল হবে। কারণ আগেরকার দিনে ক্ষমতার দাপট, অন্যায়, মিথ্যাচার, ভাঁওতাবাজি, ভেল্কি আউটপুট দেয়া যেত এবং প্রতিক্রিয়া হিসেবে ফিরে আসতো না। কিন্তু বর্তমানে ফিরে আসছে। এখন যে কেউ চাইলে ট্রাম্প বা পুতিন, হাসিনা, খালেদার বক্তব্যের পর সাথে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে পারে।
ধরুণ:
কোন এক ব্যক্তি গরমের ভিতর দীর্ঘ তিন ঘন্টা লোডশেডিংয়ের নাকাল হয়ে তারপর টিভিতে খবর দেখতে বসছেন। সেখানে কোন এক মন্ত্রীর খবর দেখানো হচ্ছে। মন্ত্রী সাহেব উঁচু গলায় বলছেন, "দেশে বিদ্যুৎের ঘাতটি নেই, এবং দেশের কোথাও লোডশেডিং নেই"! এই খবর শুনার পর যিনি তিন ঘন্টা লোডশেডিংয়ের শিকার হয়েছেন
>তার প্রতিক্রিয়া কি হতে পারে?
> আর তিনি প্রতিক্রিয়া কোথায় দেখাবেন?
>ঘরের বউর লগে?
প্রশ্ন ই আসেনা, কারণ বউর সাথে উল্টাপাল্টা বকতে গেলে চুলায় আগুন জ্বলবেনা। তাহলে এখন উপায়? উপায় একটা আছে, তা হলো সোশ্যাল মিডিয়া। অবশেষে সে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোষ্ট করলো, "কারেন্ট আর সরকারের সোদনে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে গেছে" এভরি ওয়ান খিল(কিল) মি।
এই পোষ্ট দেয়ার পরে সরকার সমর্থকরা তাকে রাজাকারের বাচ্ছা' বলে ট্যাগ দিবে। বর্তমানে ট্যাগ দেয়া খুব সহজ। আর বিরোধীরা বলবে সাবাস! অথচ পোষ্ট দাতার কষ্টটা কেউ বুঝলোনা।

রাজনীতি হলো ব্রেন ওয়াসের নাম। যারা রাজনীতি করে তারা দলের, দলের কর্তা ব্যক্তিদের অন্যায়, অবিচার, ভুল কখনো দেখতে পায়না, আর পেলেও তাদের মস্তিষ্ক তা ভুল হিসেবে বিচার বিশ্লেষণ করতে পারেনা। আর যদি পারেও তাহলে বিভিন্ন এঙ্গেলে জায়েজ করে নেয়। এটা অনেকটা ধর্ম ব্যবসায়ীদের মত। আর কারো যদি মস্তিষ্ক একেবারে বিদ্রোহী হয়ে উঠে তাহলে তার কপালে লাঞ্চনার শেষ নেই। তাকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়। বিভিন্ন মামলা মোকাদ্দমায় ফাঁসানো হয়। এমতাবস্থায় সে না পারে জনণের সাথে মিশতে না পারে নিজে সোজা হয়ে দাড়াতে। কারণ তার অতীত ততো একটা সু-খবর ও কর্মময়ী ছিলোনা। তাই কে যাবে দু'কূল হারাতে, তার চেয়ে নেতা/নেত্রীর চামচামি/ গলাবাজি করে দু'চার পয়সা কামিয়ে নিবো, ক্ষমতার দাপট দেখাবো এটাই ভালো। এর জন্য একটা কাজ অতিরিক্ত জোড় দিয়ে করতে হয়, তাহলো নেতা নেত্রীর উচ্চস্বরে গুনগান গাওয়া।

দোহাই আল্লার, তুই গুন গান গাবি গা, কেউ মানা করছেনা, তুই বিটিভিতে গিয়ে গা। সবখানে এভাবে ঢাক- ঢোল পিটাইতে থাকলে এদেশের মানুষ দেশীয় চ্যানেল দেখা ছেড়ে দিবে। তারা গড়ে বিদেশি চ্যানেল দেখা শুরু করবে। তাহলে যে এদেশের চ্যানেলর অবস্হা বিটিভির মতো হবে।

সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৫:৫১
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×