somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্মের একাল সেকাল এবং ভবিষ্যৎের আকাল।

২৭ শে মে, ২০১৮ রাত ৯:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মানুষ স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসে। স্বপ্ন মানুষ কে বড় করে তোলে। আগেরকার দিনে মানুষেরা কল্পনায় আকাশের চাঁদ তারা ছুঁয়ে দেখতে। বর্তমানে চাঁদ তাঁরা কোন অলীক বিষয় নয়, চাঁদ তাঁরাকে পদনত করে মানুষ এখন গ্যালাক্সি, মিল্কওয়েতে হাত বাড়িয়েছে। সূর্যের গঠণ প্রণালি এবং এর ভিতরকার পদার্থের তেজস্ক্রিয়তা সম্পর্কে জেনে গেছে। এখন কথা হলো, আগেরকার দিনে পৃথিবীর উল্লেখ সংখ্যক মানুষ চন্দ ও সূর্য কে অতিপ্রাকৃতিক ক্ষমতা বা দেব দেবী হিসেবে পূজা করত। এখনো কিছু উপজাতিরা করে থাকে! তাদের এই পূজা, এই শ্রম এবং ধর্ম বিশ্বাস আধুনিক মানুষের কাছে বিশ্বাস যোগ্যতা হারিয়েছে অনেক আগে। প্রাচীনকালে মানুষরা চন্দ্র ও সূর্যের আরাধনা করে যে শ্রম ও অর্থ ব্যয় করেছে তার ষোল আনা পন্ড হয়েছে- এক কথায় বলা যায়। এখন অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন এখন যে ধর্মগুলো টিকে আছে তা কি ভবিষ্যৎে বিলুপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে? উত্তরে বলা যায়, ভবিষ্যৎে অনেক ধর্ম বিলুপ্ত হয়ে যাবে শুধুমাত্র ঈশ্বরের কার্যকরী সংজ্ঞা প্রদান না করার কারণে বা না থাকার কারণে।। আর যদিওবা টিকে থাকে তাহলে সেগুলো লৌকিক আচার, কালচার বা মিথলজী হিসেবে টিকে থাকবে। যেমনটা টিকে আছে গ্রিক মিথলজি। আশ্চর্যের বিষয় হলো প্রযুক্তি এই মিথলজি টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করবে।

আবার ধর্মগুরুরা বলে থাকেন, পৃথিবীতে ধর্মের আগমন একমাত্র শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, পৃথিবীতে যতগুলো যুদ্ধ হয়েছে তার প্রত্যেকটিতে ধর্মের রং কোন না কোন ভাবে লেগে আছে। মানুষ কে উত্তেজিত করতে ধর্ম ভালো টনিক হিসেবে কাজ করে। সাধারণত দুই শ্রেণির মানুষ ধর্মের উত্তাপ ভোগ করে থাকে। প্রথম ক্যাটাগরিতে থাকে নির্যতিত শ্রেণি বা সংখ্যালঘু শ্রণি। বেশির ভাগ দেশে তারা নির্যাতিত শ্রেণি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে থাকে। তবে দেশ বা অঞ্চলভেদে এই নির্যাতনের মাত্রার তারতম্য ঘটে। দ্বিতীয় ক্যাটাগরিতে থাকে সুবিধাভোগী শ্রেণী। এদের কে সংখ্যাগুরু হিসিবে চিহ্নিত করা হয়। এই শ্রেণির মানুষ অবাধে ধর্ম পালন করতে পারে। তারা রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল বা রাষ্ট্রের কার্যে প্রভাব বিস্তার করতে পারে।

যখন একটি শিশু জন্মগ্রহণ করে এবং বড় হয়ে জানতে পারে সে সংখ্যালঘু তখন তার ভিতরে একটা মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ সৃষ্টি হয়। ফলে তার ভিতর ধর্মীয় জাতি বিদ্বেষ তৈরি হয়। তবে এদের ভিতরে এই জাতি বিদ্বেষ প্রায়ই অবধমিত বা নিস্তেজ হয়ে থাকে, কারণ তাদের (সংখ্যালঘুদের) এই বিদ্বেষ সংখ্যাগুরুদের কারণে প্রকাশ করার ক্ষেত্র সৃষ্টি করতে পারেনা। ফলে সংখ্যালঘুরা সংখ্যালঘুদের সহ-অবস্হান দাবি করে।
অপর দিকে, আরেকটি শিশু জন্মগ্রহণ করে বড় হয়ে যখন জানতে পারে সে সংখ্যাগুরু, তখন সে বুঝতে শিখে সংখ্যালঘুদের উপর তার শ্রেষ্ঠতা প্রকাশ করা সুযোগ আছে। তাই সে সেই সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। কিন্তু অধিকাংশ সময়ে রাষ্ট্রীয় আইনের বাধ্যবাধকতার কারণে তা পাড়েনা। আর যদি কোন কারণে রাষ্ট এই শ্রেষ্ঠতা প্রকাশের সুযোগ করে দেয় তাহলে ধর্মকামী শ্রেণিদের মধ্যে একটি উগ্রবাদী শ্রেণির উদ্ভব হয়। তারা সংখ্যালঘু নিধনে জাপিয়ে পড়ে। ফলে পৃথিবী সংখ্যালঘুদের জন্য দিনেদিনে অনিরাপদ জায়গা হয়ে উঠছে।

মানুষ না দেখে যা বিশ্বাস করে তাই ধর্ম। ধর্ম ছাড়া পৃথিবী কল্পণা করা অসম্ভব। প্রত্যেক পদার্থের নিজস্ব এবং নির্দিষ্ট ধর্ম আছে। নাস্তিকরা বিশ্বাস করে সৃষ্টি কর্তা বলে কিছু নেই। নাস্তিকদের এই অবিশ্বাসও একটি ধর্ম। যদি কোন নাস্তিক দাবি করে আমাদের অন্তরে কোন ধর্ম নেই তাহলে সে নাস্তিক হওয়ার যোগ্য নয়। কারণ ধর্ম ছাড়া কোন আত্মা/রুহ স্বাভাবিক বিচরণ করতে পারেনা। যে এরুপ দাবি করবে তার কাউন্সিলিং করা দরকার। অথবা সে অস্বাভাবিক অবস্হায় বিরাজ করছে।

পরিশেষে, পৃথিবীতে ধর্ম টিকে থাকুক। কারণ ধর্মকামীরা ধর্ম কে মাঝেমধ্যে খারাপ উদ্দেশ্যে কিংবা ব্যক্তি স্বার্থে ব্যবহার করলেও ধর্ম শান্তির বার্তা বহন করে। আসুন ধর্মের শান্তির পয়গাম গ্রহণ করি, এবং উগ্রবাদীদের পরিহার করে পৃথিবীকে সকল মানুষের জন্য বাসযোগ্য হিসেবে গড়ে তোলি।

ছবি: নেট।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মে, ২০১৮ রাত ১০:০১
১২টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×