মানুষের নিত্য নতুন আবিস্কারের নেশা সেই আদিকাল থেকেই। আবিস্কারের বন্ধ জানালা খুলতে খুলতে আমরা এখন অত্যাধুনিক যুগে আছি। সামনে হয়ত অজানার নতুন দিগন্ত খুলে যাবে। কিন্তু মানুষ তার নিজেকে নিজের আবিস্কারের যে মহৎ দায়িত্বটা রয়েছে তা রয়ে যাবে সেই আদিকালের পথে। আচ্ছা বুকে হাত দিয়ে বলুন তো আপনি নিজেকে নিজে কতটুকু আবিস্কার করেছেন? উত্তর যা আসবে তা হলো "কিঞ্চিৎ" । এমনো মানুষ রয়েছে যারা তার সহধর্মীনীর সাথে চল্লিশ বছর এক সাথে ঘর সংসার করার পরেও তাকে নতুন করে প্রতিনিয়ত আবিস্কার করতে হয়, প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ধাঁধায় পরতে হয়। এ যেন চোখের প্রস্ফুটিত আলোর পাশে বিশাল কৃষ্ণ গহব্বর।
মানুষ নিজেকে নিজে আবিস্কার না করার কারণেই পৃথিবীতে ধর্মের আগমন ঘটেছে। ধর্মগুরুরা নিজেকে আবিস্কার করতে গিয়ে ধর্মের পথ ও মত খুঁজে পেয়েছেন। তারা এই..ও খুঁজে পেয়েছে যে, দুনিয়াতে নিজেকে পুরাপুরি আবিস্কার করা সম্ভব নয়, নিজেকে পুরাপুরি আবিস্কার করতে হলে আত্মাকে পরকালের প্রতি ডাইভারশন করতে হবে। সেজন্য আল্লাহ, খোদা বা ঈশ্বরকে অলীক, অচিন্তনীয় মেনে নিয়ে তাকে সর্বময় ক্ষমতার উৎস ভাবতে হবে। এবং সেই ঈশ্বরের রুটিন মেনে চললে বা না চললে পরকালে নিজেকে দুইভাগে আবিস্কার করবে-
এক. জান্নাতি।
দুই. জাহান্নামী ।
বিপরীত দিকে,
বাস্তুবাদী নাস্তিকরা আবার এই "ঈশ্বর তত্ত্বের" ঘোর বিরোধী । তাদের প্রধান যুক্তি হলো, কাউকে না দেখে, না বুজে, না প্রমাণ করে, তাকে সৃষ্টকর্তা, পালনকর্তা এবং সর্বময় শক্তির উৎস ভাবা নিরর্থক ও বোকামী । এবং ঈশ্বরের নাযিলকৃত কল্পিত বিধিবিধান ফ্যান্টাসি । এগুলো যারা পালন করে তারা বোকার রাজ্যে বসবাস করে। তাদের সবচেয়ে তীব্র আপত্তি হলো পরকালীন জীবন যেমন- কিয়ামত, শেষ বিচার, জান্নাত এবং জাহান্নাম। তাদের মতে, কিয়ামত, হাশর, পুলসিরাত, জান্নাত বা জাহান্নাম রুপকথা । এই রুপকথা যারা অন্তরে ধারণ করবে তারা দুনিয়া থেকে গাফেল হয়ে যাবে, যা একজন মানুষের জন্মকে নিরর্থক করে দেয়।
অপর দিকে, ধর্মকামীরা মনে করে, মানব জন্মের প্রধান উদ্দেশ্য হলো ঈশ্বরকে জানা এবং তারা ইবাদত করা। যারা ঈশ্বর কে অস্বীকার করবে তারা দুনিয়া এবং আখেরাত উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এবার আসুন জেনে নেই এই সম্পর্কে সত্যের ছায়া কি জানেঃ
নাস্তিকদের পরকালীন জীবন সম্পর্কে আলোকপাতঃ
নাস্তকদের কথায় ধরে নিলাম সৃষ্টিকর্তা বলে কিছু নেই। তাই সৃষ্টিকর্তাকে অবিশ্বাস করে জীবন যাপন করলাম। তারপর একদিন মৃত্যু বরণ করলাম। মৃত্যুবরণ করার পর যদি দেখি সৃষ্টিকর্তা বলে কিছু নেই তাহলে আমি বেঁচে গেলাম। আর যদি মৃত্যুবরণ করার পর দেখি সত্যি সত্যি একজন সৃষ্টিকর্তা আছে এবং তিনি আমাকে বিচারের মুখোমুখি দাড় করিয়েছেন, তখন আমার কি অবস্থা হবে? তখন কি নাস্তিকরা আমাকে তার (খোদার) হাত থেকে বাঁচাতে পারবেন? বা তারা কোন উপকারে আসবে? তাই সৃষ্টিকর্তা থাকার সম্ভাবনা যদি এক পারসেন্টও সত্যি হয় তাহলে তাকে বিশাস করতে হবে।
সাধারণ ধর্মকামীদের সম্পর্কে আলোকপাতঃ
ধর্মকামীরা প্রায় ডেলিভারী দেয়, "দুনিয়াতে যারা ঈশ্বর কে অস্বীকার করবে তার দুনিয়া এবং আখেরাত উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।" ইহা আংশিক বাদে পুরোটা গাঁজাখুরি কথা। কারণ, অবিশ্বাসীদের জন্যই পৃথিবী, তারা দুনিয়াতে খেয়ে দেয়ে আমোদ ফূর্তি করে বেড়াবে। ঈশ্বরের আইন কে থোরাইকেয়ার করবে, সীমালংঘন করবে। সীমালংঘন করার মাঝেই দুনিয়াতে প্রকৃত সুখ নিহিত । আর প্রকৃত সুখ মানেই জান্নাত। সুতরাং, ধর্মকামীরা যে আবাল ডেলিভারি দেয় তা সম্পূর্ণ অজ্ঞতার ফল।
অর্থাৎ, অবিশ্বাসীদের জন্যই পৃথিবী ক্ষতিগ্রস্ত নয় ।
এখন বলতে পারেন কাদের জন্য পৃথিবী ক্ষতিগ্রস্ত?
উত্তর হবে, যারা আল্লাকে বিশ্বাস করার পরেও তার হুকুম আহকাম ঠিকমতো পালন না করে তাদের জন্য দুনিয়া এবং আখেরাত উভয় ক্ষতিগ্রস্ত ।
আপ্নারা কি বলেন?
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১০:৩৪