কেমন আছ?মনে হয় ভালো আছ।তোমার মনে আছে সেইদিনের কথা যেইদিন তুমি আমাকে প্রত্যাখান করেছিলে??
আমার মন ভেঙ্গে গিয়েছিল।আমার ব্যর্থময় জীবনে তুমি ছিলে আমার শেষ আশা।যখন তুমি আমার শেষ স্বপ্ন ভেঙ্গে দিয়ে আমার সামনে আসিফ এর সাথে চলে গেলে আমার জীবনের ফলাফল হয়ে গেল শূন্য।
আমি ঠিক করলাম আমার এই ব্যর্থময় জীবন আর রেখে আর কি হবে??
আমি এই পৃথিবীর জঞ্জাল।জঞ্জাল পরে কাজে দেয় আমি পুরোপুরি অকাজের।
তুমি মনে করচ্ছ আমি আত্মহত্যা করতে চাই,ঠিক না?না তুমি ভুল বুঝেছ।
আমি ঠিক করলাম আমি অত্যন্ত বিপদজনক কাজ করবে।যেখানে মৃত্যু
নিশ্চিত।
আমি রুদ্র বাড়ি গেলাম।তুমি ত জানো রুদ্র একটু পাগলাটে।
রুদ্র ছাড়া কেউ আমাকে পথ দেখাতে পারবে না সেটা আমি জানতাম।
আমরা সারাদিন ধরে আলোচনা করলাম
রুদ্র একের পর এক বুদ্ধি দিয়ে যাচ্ছিল
বলল সুন্দর বনে বাঘ শিকার করতে।
যখন বললাম তা নিষেদ তখন ও বলল তাহলে চল বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধার মত বাঘ মামার গলায় ঘণ্টা বাঁধি।
আমার একটু ভয় লাগল।কিন্তু প্রকাশ করলাম না
বললাম"ধুর ওটা কিছু হল।ও ত এক মিনিটের কাজ।''
তারপর অনেক আজব আজব বুদ্ধি দেওয়ার পর আমরা ঠিক করলাম আমরা পাহাড়ে চড়ব।
আমরা পাহাড় চড়ার ট্রেনিং ভর্তি হলাম
তারপর আমরা ঠিক করলাম বাংলাদেশের সবোর্চ্চ চূঁড়া কেওক্রাডং আরোহণ করব
যেই ভাবা সেই কাজ
তারপর আমরা বান্দরবান গেলাম
ওখানে যাওয়ার আগে রুদ্র কি ফাঁপর তা তুমি চিন্তা করতে পারবে না
রুদ্র বলে ও এভারেস্ট চুড়া উঠা ওর বা হাতের খেল।আর কেওক্রাডং ত দুগ্ধপোষ্য শিশু
গান গেতে গেতে উঠব আর চূড়ায় উঠে বিরিয়ানি খেয়ে একটা ঘুম দিয়ে নিচে নেমে ঢাকার বাস ধরব
যখন কেওক্রাডং পোঁছলাম তখন রুদ্র গলা শুকিয়ে কাঠ।
আমার দিকে হেসে একটু ইনিয়ে বিনিয়ে বলতে লাগল
''মামু,উঠতে উঠতে দেরি হয়ে যাবে।তার চাইতে চলে যাই।"
আমি বললাম"কেন রে এভারেস্ট ত তোর বাঁহাতের খেল।তাহলে কেওক্রাডং ত কিছু না।"
রুদ্র বলল"আরে কেওক্রাডং কত কঠিন তা জানোস।আমার পিসেমশাই এর ভাইয়ের বন্ধুর ভাই এভারেস্ট এ নাচতে নাচতে উঠছে।কিন্তু কেওক্রাডং উঠতেই পারে নাই।"
যখন রুদ্র দেখল আমি বদ্ধ পরিকর তখন বলল ঠিক আছে।তাহলে নিচ থেকেই বিরিয়ানিটা খাই।উপরে যদি নাই উঠে সোজা উপরে উঠে যাই তাহলে মনে খেদ থেকে যাবে।"
আমার ও তাই মনে হল
না খেয়ে মরা চাইতে খেয়ে মরা ভাল
আমরা খেলাম।
তারপর রুদ্র অনেকবার বুঝাল
কিন্তু আমি দৃঢ়
আর ব্যর্থ হব না
এর চাইতে মরা ভাল
যাই হোক আমি উঠা শুরু করলাম
আমাকে দেখে রুদ্র শুরু করল অত্যন্ত গোমড়া মুখে
কিছুক্ষণ যাওয়ার পর ও শুরু করল বিলাপ
বলতে লাগল"মা তোমাকে আর দেখা হবে না
তোমার হাতে রান্না করা মাছের মুড়ো খাওয়া হবে না।''
মনে হচ্ছিল মাকে না মায়ের রান্নার প্রতি অর ভালোবাসা
তারপর ও আবার বলা শুরু করল "বুলামামা তোমার টঙ্গের দোকানে আর চা খাওয়া হবে না।
তারপর কিছুদূর যাওয়ার পর আবার কান্না কান্না কণ্ঠে বলতে লাগল ও পিসিমা আমার আর তোমার কচি পাঁঠার মাংসের ঝোল খাওয়া হবে না
।
সবচাইতে ও ভাল লাগল ও যখন বলল"সানি রে ও সানি রে তোর ভিডিও আর দেখা হবে না।আর দেখা হবে না।''
আমার ত হাসতে হাসতে শেষ তখনি বিপদটা ঘটল
আমি যখন একটা পাথরে ভার দিয়ে উঠছিলাম তখন এক সাপ দেখতে পারলাম
সবুজ বর্ণের বিষাক্ত সাপ
আমি সম্মোহিত ও হয়ে দাঁড়িয়ে পড়লাম
আমার দিকে সাপ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়ল
তারপর ও চলে গেল
তোমার আমার প্রতি দয়া না হলে ওর মনে হয় হল
তারপর তেমন কিছু হই নাই
শুধু রুদ্র আমাকে শাপ শাপান্তর দিয়ে যাচ্ছিল
"হারামজাদা তুই উস্টা খাইয়া মর।
তুই আছাড় খাইয়া মর।
তোর গ্যাস্টিক হইবো তুই কিছুই খেতে পারবি না হারামি
আমারে লইয়া আইলি,
আমার মত সহজ সরল শিশুর মত ছেলে কে বশ করে নিয়ে আসলি
তুই একটা পাষণ্ড।''
তারপর আমরা চূড়ায় উঠলাম ভোরে সকালে
সকালের এই সম্মোহন রুপ দেখে আমি কি রুদ্র ও চুপ হয়ে গেল।
চূড়ায় উঠে একটা বাংলাদেশের পতাকা স্থাপন করলাম
আর একটা পাথরে তোমার নাম লিখলাম
মেঘ বালিকা
ঢাকায় আসার পথে রুদ্র নাচতে নাচতে আসতে বলল
''দোস্ত বাসায় গিয়ে মার হাতে মাছের মুড়ো খাব
বুলামামার দোকানে চা খামু
তারপর বলল মামা আবার গিয়ে চেলসি খেলা দেকমু
এভাবে ও লিস্ট বলতে লাগল
এক পর্যায়ে ও বলল'' ঢাকায় গিয়ে সানির দশ বারটা ভিডিও
ডাউনলোড দিমু
বলতে লাগল আর সস্তির হাসি হাসতে লাগল
ঢাকায় গিয়ে এক সাংবাদিক আমাদের ইন্টারভিউ নিতে আসল
রুদ্র উনাকে বলল"আমি এই অভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছি আর পাশের বন্ধুটি অনেকবার ভয় পেলেও আমি অকে সাহস দিয়ে দিয়ে আমাদের যাত্রা সফল করেছি।
ওর কথা শুনে মনে হল আমারে কেউ মাইরালা
মেঘ বালিকা এটা ত শুরু
আমাকে আরও দূর এগোতে হবে তোমারি জন্য
ইতি মেঘবালক
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৩৩