শিক্ষার্থীদের জন্য পড়াশোনায় মনোযোগ
থাকাটা জরুরি। নিয়মিত মনোযোগ
দিয়ে পড়াশোনা করলে অপেক্ষাকৃত কম মেধাবীরাও
ভালো ফল করতে পারে। পড়ায় মনোযোগ বাড়ানোর কিছু
টিপস দেয়া হলো-:
<>পড়াশোনার জন্যই একটি স্থান :
-----------------+-----
একটি ভালো স্থান দিতে হবে, যেখানে শিক্ষার্থী পূর্ণ
মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করতে পারে।
সে স্থানটি হতে পারে বাসার নিরিবিলি জায়গা।
পড়ার স্থানটি শুধু পড়ার কাজেই ব্যবহার করতে হবে।
শিক্ষার্থীকে এমন অভ্যাস
গড়ে তুলতে হবে যে নির্ধারিত স্থানটি যেন কেবল
পড়াশোনার কাজেই ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ পড়ার
জায়গায় যেন সামাজিক আলাপচারিতা, গল্প-গুজব,
টিভি দেখা বা ঘুমানোর স্থান হিসেবে ব্যবহার
না করা হয়। পড়ার স্থানটি যেমন হবে-
-ভালো আলোক ব্যবস্থা:
দিনের আলো কিংবা রাতে বাতির ব্যবহারে যেন
স্থানটি যথাযথ আলোকোজ্জ্বল থাকে,
সে বিষয়টি লক্ষ্য রাখতে হবে।
-বাতাস চলাচল :
স্থানটির বাতাস চলাচল ব্যবস্থা যেন স্বাভাবিক থাকে,
অর্থাৎ স্থানটি যেন আবদ্ধপ্রায় গুমোট না হয়।
-সুবিধাজনক চেয়ার :
পড়াশোনার জন্য ব্যবহার করতে হবে আরামদায়ক চেয়ার,
তবে তা কোনক্রমেই বেশি আরামদায়ক যেন না হয়,
সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।
-পড়ার টেবিল :
পড়ার টেবিলটি যথাযথ আকারে হওয়া প্রয়োজন,@
সঙ্গে প্রয়োজনীয় সব জিনিসপত্রই যেন
তাতে রাখা যায়। প্রয়োজনীয় ছোটখাটো সব জিনিসই
যেন হাতের কাছে পাওয়া যায়।
-পড়ার স্থানে যা থাকবে না :
টেলিফোন, ভিসিডি, ক্যাসেট প্লেয়ার, টেলিভিশন,
রেফ্রিজারেটর।
<>পড়ায় মনোযোগ বাড়াতে :
--------------------
সারাদিনের কাজ, পড়া, খেলা ও বিশ্রামকে ছোট ছোট
অংশে ভাগ করে নিতে হবে। এতে কাজ সফল ও
সঠিকভাবে করার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। কোন
শিক্ষার্থী যদি এমন সিদ্ধান্ত নেয় যে 'আজ
আমি সারাদিন পড়াশোনা করেইকাটিয়ে দেব।'
তাহলে তা সফলভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। এর
ফলে এক ধরনের ব্যর্থতার দায়ভার মনকে অবসাদগ্রস্ত
করে তুলতে পারে।
<>সময় ভাগ :
----------
সংশ্লিষ্ট কাজগুলো ভাগ করার সঙ্গে সঙ্গে সময়কেও
ভাগ করে নিতে হবে। প্রতিটি সময়ের অংশে পড়ার
লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে যা অবশ্যই
সঠিকভাবে বাস্তবায়নযোগ্য হতে হবে। যেমন : দুই ঘণ্টার
মধ্যে 'বাংলা ১ম পত্রের বই পড়া প্রবন্ধের তিনটি প্রশ্ন
পড়া শেষ করব', কিংবা 'পাঁচটি গণিত সমস্যা সমাধান
করব' অথবা 'পরবর্তী এক ঘণ্টায় ইংরেজি পড়া শেষ করব'
ইত্যাদি।
<>পাঠ পরিচালনা :
-------------
পড়াশোনা শুরু করার আগেই পাঠের পরিকল্পনা বা লক্ষ্য
ঠিক করে নিতে হবে এবং তা বাস্তবায়নে যথাযথ
চেষ্টা করতে হবে। অবশ্যই মনে রাখতে হবে, যে পড়ার
লক্ষ্য গ্রহণ করা হবে, তা যেন অবশ্যই অর্জন করা সম্ভব
হয়, বাস্তবায়নযোগ্য হয়। একজন শিক্ষার্থী তার
নির্ধারিত লক্ষ্যের চেয়েও
বেশি পড়াশোনা করতে পারে, যদি সম্ভব হয় কিন্তু
নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রাটি যেন সহজে বাস্তবায়নযোগ্য
হয়।
<>স্বাস্থ্যগত দিক :
-----------
শিক্ষার্থীদের শারীরিক সমস্যা মানসিক স্বাস্থ্যের
ওপর প্রভাব ফেলে। সুতরাং পড়ায় মনোযোগের মানসিক
সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য অবশ্যই শারীরিক অবস্থার
উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রতিদিন সব
খাদ্যের শ্রেণীবিভাগ থেকেই কিছু কিছু সুষম খাবার
খেতে হবে। বিশেষ করে প্রতিদিন নাশতা অথবা দুপুরের
সময় কিছু প্রোটিন যেন থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে।
সুষম খাবার শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা পূরণ
করবে এবং শরীরে রক্তে চিনির মাত্রা ঠিক
রাখতে সহায়তা করবে। ভালো ঘুম সময়মতো বিছানায়
ঘুমোতে যেতে হবে। পরিমিত মাত্রায় ঘুমাতে হবে।
অধিকাংশ লোকই রাতে ছয় থেকে আট
ঘণ্টা ঘুমিয়ে থাকে। যদি নিয়মিত দীর্ঘদিন অপর্যাপ্ত
ঘুম হয়, তাহলে তা শরীর ও মনের জন্য ক্ষতিকর
হয়ে দাঁড়াতে পারে। ঘুমের সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ঘুম
থেকে জেগে ওঠার সময়টিও নির্ধারিত হওয়া উচিত,
শরীর এটাই চায়।
<>খেলা ও হাঁটাহাঁটি :
---------------
প্রতিটি শিক্ষার্থীর উচিত পড়াশোনার
পাশাপাশি খেলাধুলা করা, হাঁটাহাঁটি করা,
ব্যায়াম করা। বাসার ছাদে,
মাঠে বা খোলা বারান্দায়
হাঁটাহাঁটি বা খেলাধুলা করলে মন প্রফুল্ল
থাকবে। সেই সঙ্গে হালকা ধরনের ব্যায়ামও
হয়ে যেতে পারে। এতে শরীরের
ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। শিক্ষার্থীর পড়ায়
মনোযোগ বাড়ানোর জন্য যেসব পদক্ষেপ
নিতে হবে কিংবা যেসব নিয়ম মেনে চলতে হবে,
তা বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষার্থীর পারিবারিক
তথা অভিভাবকদের সহায়তাও
বিশেষভাবে প্রয়োজন। সবার সহযোগিতা ও
পরিবেশগত সুযোগ পেলে শিক্ষার্থী অবশ্যই তার
পাঠে মনোযোগ বাড়াতে সক্ষম হবে।