ব্লগার চাঁদগাজী দেখলাম জাতীয় পার্টি নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন, আসলে উদ্বিগ্ন হওয়ার তেমন কিছু নেই কারণ শেখ হাসিনা জাতীয় পার্টির কোমর এমনভাবে ভেঙ্গে দিয়েছে যা এরশাদ সাহেব নিজে সারিয়ে তুলতে পারেননি আর এখন? প্রশ্নই উঠে না।
১) জাতীয় পার্টির বিলুপ্তি হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে সাংগঠনিক কোন কাঠামো নেই, আমি যদি জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ধরে হিসাব করি তাহলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল তিনটি, লীগ, দল, জামাত। রংপুর ব্যাতিত কোথাও তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম নেই বললেই চলে। সাংগঠনিক শক্তি ছাড়া ক্ষমতাসীনদের আশীর্বাদ নিয়ে বেশিদিন মাঠে টিকে থাকা যায় না।
২) বঙ্গবন্ধু, জিয়াউর রহমানের মত এরশাদ সাহেবের কোন বিশেষ অবদান নেই দেশের জন্য আর এই জন্য তাঁকে ঘিরে বলয় তৈরী হওয়া সম্ভাবনা শূন্য।
৩) এরশাদ সাহেবের ব্যাক্তি চরিত্র এ দেশের মানুষের কাছে নেগেটিভ হিসাবে উপাস্থাপিত।
৪) সফল নেতৃত্বের অভাব, এরশাদ সাহেব জীবিত থাকতেই দলটি তিনবার ভেঙ্গেছে এতে বোঝা যায় দলীয় কোন্দল সেখানে চরমে।
শেখ হাসিনা বা খালেদা জিয়ার মত দলকে স্পিরিট দেওয়ার মত যোগ্য নেতা এ দলে নেই।
প্রশ্ন থাকতে পারে শেখ হাসিনার কিভাবে জাতীয় পার্টির কোমর ভাঙ্গলেন, একটু খুঁজে দেখার চেষ্টা করি।
১) জাতীয় পার্টির ভিতরে আওয়ামীগের প্রচন্ড একটি বলয় তৈরি করে রেখেছে শেখ হাসিনা, আওয়ামীলীগের বিপক্ষে যায় এমন সিধান্ত এই গ্রুপ কখনো এরশাদ সাহেবকে নিতে দিত না, বর্তমান রওশন এরশাদের চারিপাশে এদের অবস্থান। শেখ হাসিনার সবচেয়ে বড় সাফল্য এক সময় চারদলীয় পন্থী হিসাবে পরিচিত রওশন এরশাদকে পুরোপুরি ইউটার্ন করানো।
২) জামাত বাদে বাকি ইসলামী দলগুলোকে নিয়ে এরশাদ ইসলামী বলয় রাজনীতি গড়ে তুলতে চেয়েছিল, এরশাদ সাহেবের অস্তিত্ব টিকে থাকার একটি রাস্তা ছিল এটা সেখানেও শেখ হাসিনার কাছে এরশাদের চরম পরাজয়।
৩) আঞ্চলিক দল খ্যাত জাতীয় পার্টির রংপুর দূর্গে আওয়ামীলীগ এমনভাবে রাজনৈতিক প্রভাব ছড়িয়েছে সেখানে জাতীয় পার্টির এখন নিজ ঘরে পরবাসীর অবস্থা।
তবে এখনই জাতীয় পার্টি দ্বিখণ্ডিত হওয়ার সুযোগ নেই বা বিলুপ্ত হওয়ার পথে যাচ্ছে না কারণ শেখ হাসিনা তা হতে দেবে না, মিডিনাইট নির্বাচনকে গণতান্ত্রিক হাওয়া লাগাতে হলে জাতীয় পার্টির গনতন্ত্র নামক হাতপাখা শেখ হাসিনার আরো কিছু বছর প্রয়োজন। তাই আমাদের ধৈর্য্য ধরে জাতীয় পার্টির ভাঁড়ামো দলের ভাঁড়ামো আর কিছুদিন দেখে যেতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:১৮