সম্প্রতি খবর বের হয়েছে দুবাইতে ১০০০ নারী শ্রমিক নেবে যারা মুলতঃ ধনী দুবাই বাসীর গৃহে গৃহভৃত্য হিসেবে কাজ করবে! এটা একদিকে যেমন সুখের খবর, অন্য দিকে ঠিক তেমনি খারপ অবস্থার পূর্বাভাস দিচ্ছে।
সাম্প্রতিক দুটো ঘটনা উল্লেখ করছি-
১) মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে ফিলিপাইনের এক গৃহ ভৃত্যকে বাবা ও ছেলে দু'জনে পালাক্রমে ধর্ষণ করত, পরে ওই গৃহ ভৃত্য মামলা করে এবং দেশে ফিরে যায়। যে কারণে ফিলিপাইন সাময়িকভাবে গৃহ ভৃত্যের কাজ করতে মেয়েদের পাঠানো নিষিদ্ধ করে।
২), ইন্দোনেশিয়ার এক গৃহ ভৃত্য তার মনিবকে হত্যা করে কারন ওই মেয়েকে গৃহ স্বামী জোরপূর্বক ধর্ষণ করতে চেষ্টা করেছিল। ওই গৃহ ভৃত্যের ফাঁসির আদেশ দেয় আদালত। ফলে ইন্দোনেশিয়াও ওই দেশে গৃহ ভৃত্যের কাজে নারীদের পাঠানো নিষিদ্ধ করে।
এ ধরনের আরো অনেক ঘটনা মাঝে মধ্যেই নিউজে আসে।
মধ্যপ্রাচ্যে গৃহ ভৃত্য হিসেবে যারা কাজ করে তারা প্রায় সবাই ঘরের কাজের পাশাপাশি গৃহ স্বামী বা সন্তান বা আত্মীয় স্বজনের মনোরঞ্জন করতে বাধ্য থাকে; এটা এক ধরনের অলিখিত সত্য যার কারনে ফিলিপাইন বা ইন্দোনেশিয়া তাদের মেয়েদের গৃহে গৃহভৃত্য হিসেবে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে। আমাদের দেশের মেয়েরা তাদের স্থান নেবে , তার অর্থ ঐ স্থান গুলোতে কাজ পাবে! এতে আমাদের সন্মান কি বাড়বে!
প্রবাসে নারী শ্রমিকদের ওপর নির্যাতনের খবর অহরহই পাওয়া যাচ্ছে। এসব নির্যাতনের মধ্যে রয়েছে-শারীরিক, মানসিক, অর্থনৈতিক এবং যৌন নির্যাতনের মতো অনৈতিক প্রবৃত্তি। বিদেশে কারখানায় কর্মরত নারী শ্রমিকরা ভালো থাকলেও গৃহকর্মে নিয়োজিত বাংলাদেশী নারী শ্রমিকরা নানাবিধ নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন।জানা গেছে, ভয়াবহ নির্যাতনের কবল থেকে রক্ষা পেতে বাংলাদেশী নারী শ্রমিকরা বিদেশে স্বেচ্ছায় কারাবরণের পথ পর্যন্ত বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন।
সরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও বেসরকারি সংস্থার কাছে বিদেশে কর্মরত নারী শ্রমিকদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ জমা পড়ছে গড়ে ৪ হাজার। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে চাকরি নিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের নারী শ্রমিক ও কর্মীদের নানা দুরবস্থা, অসহায়ত্ব, বিপর্যস্ত, দুঃসহ, অবর্ণনীয় যাতনাময় জীবনের বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতার কথা এখন প্রায় বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হচ্ছে। দেশে ফেরা নারী শ্রমিকরা জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে তাদের ওপর নির্যাতনের মাত্রা দিন দিন বাড়ছেই। শারীরিক, মানসিক ও অর্থনৈতিক বঞ্চনা, নির্যাতন চলে তাদের ওপর। কর্মীর সঙ্গে নিয়োগ কর্তারা ক্রীতদাসের মতো আচরণ করেন, একটু এদিক-ওদিক হলেই গৃহকর্ত্রী মারধর করেন।
মেয়েরা কি জীবিকার জন্য তাদের জীবে্নের শ্রেষ্ঠ আমানত (ইজ্জত) ওখানে রেখে আসবেন! আপনারা কী চান শুধুমাত্র কিছু টাকার জন্য মা- বউ-বোনদেরকে নিশ্চিত যৌন ও শারীরিক নির্যাতনের মুখে ঠেলে দিতে!
আপনারা কি ভুলে গেছেন লিবিয়া ফেরত ওই বোনটির কথা, যার সারা শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন বর্তমান ছিল??