২ দিন আগে যখন প্রথম জানতে পারলাম আরাকান আর্মির সদস্যরা আমাদের দেশে ঢুকে আমাদের বিজিবি'র অপর হামলা চালিয়েছে তখনই সন্দেহ করে ছিলাম যে এটা আদৌ সম্ভব কি না??
বাংলাদেশে মায়ানমারের যে দুইটি বিদ্রোহী দল হামলা করেছিলো বলে দাবি করা হচ্ছে তাদের একটির নাম আরাকান আর্মি ও অপরটি আরাকান লিবারেশন পার্টি। উল্লেখ্য এদের নামের সাথে আরাকান বা রাখাইন শব্দখানা যুক্ত থাকলেও এদের অপরেশনস্থল বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী আরাকান/ রাখাইন স্টেটে নয়, বরং বাংলাদেশ হাজার মাইল দূরবর্তী কাচিন ও কারেন স্টেটে।
একটি ব্যাপার হল এদের সাথে শত্রুতা আছে মিয়ানমার বাহিনীর অহেতুক আমাদের সেনাবাহিনী বা বিজিবি'র সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়বে এর কোন কারন থাকতে পারে না। তাও মাত্র ১০ টি ঘোড়ার জন্য। ব্যাপারটি অনেকটাই হাস্যকর।
তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লক্ষ্য করুন
১.এ দলগুলো কাচিন ও কারেন স্টেটের স্বাধীনতা চায়, তারা ঐ অঞ্চলে সরকারের বিরুদ্ধে সংগ্রামে লিপ্ত। বলাবাহুল্য এদের লোক সংখ্যা কিন্তু খুব বেশি নয়। আরাকান আর্মির সংখ্যা সর্বোচ্চ ৫শ’ আর আরাকান লিবারেশন পার্টির আরো কম (তাদের সাধারণ সদস্য ২০০০, কিন্তু যোদ্ধা কম)। তাই এত কম সংখ্যক বিদ্রোহী নিয়ে এত দূর এলাকা থেকে বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে হামলা করার দাবি পুরোই অসম্ভব ও অবাস্তব।
২.এ দলগুলো মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে লিপ্ত। বার্মিজ সরকার তাদের প্রতিনিয়ত খুজঁছে হত্যা করার জন্য। অথচ যখন বাংলাদেশ বাহিনী তাদের উপর হামলা করার সময় মায়ানমার বাহিনীকে পাশে চায়, তখন মায়ানমার বাহিনী হামলা না করে চুপ করে বসে থাকে। এমনকি এমন আলামতও পাওয়া গেছে যে মিয়ানমার সেনাবাহিনী তাদের পালাতে সাহায্য করেছে।
৩.মিয়ানমারের সাথে আমাদের দেশের সরকারের সম্পর্ক ভালো নয়। সেক্ষেত্রে অনেক সময় দাবি করা হয় যে বাংলাদেশ মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে সহায়তা করে থাকে। তাছাড়া যোক্তিক স্বাধীনতার, বৈষম্যহীন জাতি গড়ার সংগ্রামে লিপ্ত গোষ্ঠীগুলোর প্রতি আমরা সাংবিধানিক ভাবেই শ্রদ্ধাশীল। সুতরাং আমাদের সহায়তা প্রাপ্ত কেউ আমাদের অপর হামলা চালাবে এটা সম্ভব নয়।
সুতরাং গত দিনের হামলা মিয়ানমারের কোন বিদ্রোহী গ্রুপ নয় বরং তাদের সেনাবাহিনীর হামলা ছিল, যাদের উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের সক্ষমতা ও শক্তি যাচাই করা এবং ড্যামেজ তৈরী করা। তাদের হামলার ধরন দেখেই আপনাদের বুঝতে পারবার কথা এটা সম্পূর্ণ রুপে একটি কমান্ডো হামলা ছিল। কিন্তু বিজিবি উপযুক্ত জবাব দেওয়াতে তারা পিছু হঠতে বাধ্য হয়েছে। যদি তারা সফল হতো তবে সরকারী বাহিনীর নাম আসতো, কিন্তু লজ্জাজনক ভাবে পালিয়ে আসাতে হওয়ায় আর নিজের নাম ব্যবহার করেনি, করেছে বিদ্রোহীগ্রুপগুলোর নাম, যদিও তাদের কাছ থেকে কিন্তু মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পোশাকের কাপড় উদ্ধার করা হয়েছে।
সরকারীভাবে ছাড়া এভাবে আরেক দেশে ঢুকে হামলা করা খুবই কঠিন বিষয়, এবং অসম্ভব ও বটে (যেমন: কিছুদিন আগে ইন্ডিয়ান বাহিনী মায়ানমার সীমান্তে ঢুকে বার্মিজ বিদ্রোহীদেরকে হত্যা করেছিলো)।
Bangladesh Black hat hackers কে ধন্যবাদ প্রকৃত ঘটনা আমাদের সামনে তুলে ধরার জন্য।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১:০২