ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তবর্তী এলাকায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে ৪৩০ জন নিহত ও সাত হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু ঘরবাড়ি ও স্থাপনা।
শক্তিশালী ৭.২ মাত্রার এই ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যের জন্য অনলাইনে তহবিল সংগ্রহের চেষ্টা করছিলেন প্রবাসী ইরানিরা। কিন্তু ভুমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য এ তহবিল যোগাড়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়।
আমেরিকার ডেট্রয়েট শহরে বসবাসকারী ইরানি বংশোদ্ভূত নাগরিক ডাক্তার তোহিদ নাজাফি আল-জাজিরা টেলিভিশন চ্যানেলকে জানান, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যের জন্য তিনি নিজে ফেইসবুকে একটি পেইজ খুলেছিলেন কিন্তু মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় তা ব্লক করে দিয়েছে। তিনি আগামী মাসের মধ্যে এক লাখ ১০ হাজার ডলার সংগ্রহ করার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। মাত্র বুধবারের মধ্যেই তার কাছে দুই লাখ ডলার জমা হয়েছে। তবে তিনি এখন মার্কিন সরকারের নেতিবাচক পদক্ষেপের কারণে এখন এ তহবিল ইরানে পাঠাতে হবে কিনা তা নিয়ে তিনি সন্দিহান।
ডাক্তার তোহিদের উদ্যোগের পরপরই নিউ ইয়র্কে বসবাসকারী ইরানি বংশোদ্ভূত সাংবাদিক তারা ক্যাঙ্গারলু ফেইসবুকে নতুন একটি পেইজ খুলে সাহায্যের আবেদন জানান কিন্তু তাকেও একই বাধার মুখে পড়তে হয়েছে।
তাকে বলা হয়েছে, "আপনি যে দেশের জন্য তহবিল সংগ্রহ করছেন তা অবরুদ্ধ এলাকার মধ্যে পড়ে।"
অথচ মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ইরানকে দায়ী করে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের থার্ড কমিটি মঙ্গলবার প্রস্তাব পাস করেছে। থার্ড কমিটিতে পাস হওয়া প্রস্তাবে ইরানকে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী দেশ হিসেবে আখ্যায়িত করার পাশাপাশি মত প্রকাশের স্বাধীনতা না থাকার জন্যও তেহরানকে দায়ী করা হয়। প্রস্তাবে হত্যা ও মাদকের মত অপরাধের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড নিন্দা জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের দায়িত্বে রয়েছে সৌদি আরব যারা উগ্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএস, তালেবান ও আন-নুসরা ফ্রন্টের থেকে বেশি শিশু হত্যায় জড়িত রয়েছে। ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বাধীন আরব জোটের সামরিক আগ্রাসন ও অবরোধের কারণে সৃষ্ট দুর্ভিক্ষ এবং রোগব্যাধিতেই মারা গেছে ৪০ হাজার শিশু। বছরের শেষ নাগাদ শিশু মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৫০ হাজারে দাঁড়াতে পারে। ব্রিটেনভিত্তিক এনজিও সেইভ দ্যা চিলড্রেন ফান্ড এ তথ্য দিয়েছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত দারিদ্রতম ইয়েমেনে প্রতিদিন গড়ে ১৩০টি শিশু মারা যাচ্ছে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
অন্যদিকে ইরাক ও সিরিয়ায় নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে আইএসের অস্তিত্ব রক্ষায় মার্কিন অপচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।সিরিয়ায় আইএসের সর্বশেষ ঘাঁটি বুকামাল মুক্ত করার অভিযান শুরু হওয়ার পর সন্ত্রাসীদের পালাতে সহযোগিতা করেছে মার্কিন বাহিনী। বহু সন্ত্রাসীকে হেলিকপ্টারে করে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেয়া হয়েছে বলেও খবর বেরিয়েছে। ধারনা করা যায় এসব সন্ত্রাসী এখন সম্পূর্ণ সিরিয়া ও ইরাকে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এরপূর্বেও মার্কিন জোটের বিরুদ্ধে আইএসকে সহায়তার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।
আইএসের অস্ত্র ভাণ্ডারে উদ্ধার হল ন্যাটোর সরবরাহকৃত অস্ত্র। (প্রমান ছবি সহ)
মার্কিন সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার যখন আইএস সন্ত্রাসীদের নিরাপদ পরিবহন মাধ্যম !!
এদিকে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষকে আর্থিক সহায়তা দেয়া বন্ধ করার জন্য মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটি সর্বসম্মতভাবে একটি বিল পাস করেছে। পস্তাবে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষকে ইসরাইলী সেনাদের হাতে নিহত পরিবারগুলোকে আর্থিক সহায়তা দেয়া বন্ধ করতে বলা হয়েছে অন্যথায় ফিলিস্থিনের কর্তৃপক্ষকে আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে না।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:৪১