সম্প্রতি গত ১৩ এপ্রিল রাত্রে সিরিয়ায় কথিত রাসায়নিক অস্ত্রের অভিযোগে হামলা চালিয়েছে ট্রাম্পের অ্যামেরিকা, এক্ষেত্রে ইংল্যান্ড এবং ফ্রান্সও মার্কিন হামলায় যোগ দিয়েছিল। এর আগে সৌদি আরব এবং ইসরাইলও এই হামলায় নিজেদের যুক্ত করবার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিল। তবে সিরিয়ার সেনাবাহিনী মার্কিন হামলা প্রতিহত করেছে বলে দাবি করে তাদের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ছবি প্রকাশ করেছে।
মজার বিষয় হল মাত্র কিছুদিন আগেই হটাৎ করেই ট্রাম্প আইএসের পরাজয় ঘোষণা করে সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা সরিয়ে নিবেন বলে ঘোষণা করেছিল। ট্রাম্পের ঘোষণার মাত্র ২ দিনের মধ্যেই সিরিয়ার ডুমা নামক এলাকায় রাসায়নিক গ্যাস হামলার অভিযোগ করে কথিত পশ্চিমা এবং সৌদি আরব সমর্থিত বিদ্রোহী গোষ্ঠী জায়েশ আল ইসলাম।
এরই মধ্যে সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যাবহার তদন্ত করতে OPCW (Organisation for the Prohibition of Chemical Weapons) সদস্যরা সিরিয়ায় এসে পৌঁছে। কিন্তু কোন রকম তদন্ত শুরু করবার পূর্বেই মার্কিন জোট সিরিয়ার অন্তত ৬ টি বিমান ঘাটি এবং ৩ টি সামারিক স্থাপনা এবং কয়েকটি বেসামরিক স্থাপনায় এক যোগে ১০৩-১১০ টি ক্রুজ মিসাইল নিক্ষেপ করে।
এর মধ্যে সিরিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনী ৭১-৭৩ টি ক্ষেপণাস্ত্র ঘংস করবার দাবি করেছে। এছাড়া রাশিয়া জ্যামার ব্যাবস্থা চালু করে অন্য ক্ষেপণাস্ত্র গুলোকে লক্ষ্যচ্যুত করেছে বলে দাবি করেছে। তবে সরকারি টিভিতে দেখিয়েছে আবাসিক এলাকায় এবং সিরিয়ার বিজ্ঞান গবেষণা সেন্টারের ৩ টি দোতালা ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কয়েকজন (৩-৫ জন) সাধারন জনগন আহত হয়েছে।
তবে অ্যামেরিকা দাবি করেছে তাদের কোন ক্ষেপণাস্ত্র ধংস করতে সক্ষম হয়নাই সিরিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা ইউনিট এবং তাদের সব ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যে আঘাত এনেছে। মার্কিন জোটের হামলায় সিরিয়ার সরকারের রাসায়নিক অস্ত্র প্রস্তুত এবং সংরক্ষণ এবং সরবরাহ ব্যাবস্থা সম্পূর্ণরুপে ধংস হয়েছে।
তবে সিরিয়ার রাজধানীতে সকালে দেখা যায় সিরিয়ানরা মার্কিন জোটের হামলার বিরুদ্ধে তাদের সেনাবাহিনীর সফলতা লাভ করায় আনন্দ উল্লাস করে। সকালে সিরিয়ান প্রেসিডেন্ট খুব স্বাভাবিক ভাবেই তার প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ে প্রবেশ করছেন এমন একটি ভিডিও টুইট করেন অথচ অনেক মিডিয়া গুজব ছড়িয়েছিল বাসার আল আসাদ নাকি তার পরিবার নিয়ে ইরানে পালিয়েছেন।
বরং এরপরেই আসাদ সিরিয়া সফররত বেশ কয়েকজন রাশিয়ান প্রতিনিধিদের সাথে রাষ্ট্রীয় বৈঠক করেছেন যা পরে মিডিয়ায় প্রকাশ পায়।
এখানে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল মার্কিন এই হামলায় সিরিয়ার সেনাবাহিনীর কোন ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয় নাই। একজন সিরিয়ান সেনা নিহত হয় নি বা একটি সিরিয়ান বিমান বা আর্টিলারি, ট্যাংক বা মিসাইল সিস্টেম ধংস হয় নাই শুধুমাত্র ২ তলা ৩ টি ভবন ধংস হয়েছে। তবে রাসায়নিক কোন উপাদান ছড়িয়ে পড়বার কোন খবর পাওয়া যায় নাই।
এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সিরিয়ায় মার্কিন হামলার বিরোধীতা করে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। খোদ অ্যামেরিকার হোয়াইট হাউজ এবং ইসরাইলের হাইফায় মার্কিন দূতাবাসের সামনেও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
যদিও আরবলীগ বরাবরের ন্যায় মার্কিন চামচামির বাহিরে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে ব্যার্থ হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:১২