গতকাল বিশ্বকাপে মাঠের খেলায় ক্রয়েশিয়ার কাছে ২-১ গোলে হেরে বিশ্বকাপের স্বপ্ন শেষ হয়েছে ইংল্যান্ডের। তবে মাঠের বাইরের খেলায় এবারের রাশিয়া বিশ্বকাপে অনেক আগেই পরাজিত হয়েছে ব্রিটিশ কূটচাল।কি অবাক হচ্ছেন! মাঠের বাহিরের কূটচাল কি ছিল ভেবে?
অন্যর বিরুদ্ধে কুটনামী এবং মিথ্যা অপবাদ দিয়ে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারে ব্রিটিশদের জুড়ি নাই। বিষয়টি এতই জটিল যে আমাদের সমাজের মধ্যে কূটবুদ্ধি সম্পন্ন লোকদের আমরা ব্রিটিশ বলেই ডাকি।
এবার আসি মূল প্রসঙ্গে, এবারের বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব পায় রাশিয়া। কিন্তু প্রথম থেকেই ইংল্যান্ড চাচ্ছিল যে কোন ভাবে রাশিয়া বিশ্বকাপ ভণ্ডুল করে দিতে। এই জন্য তারা চমৎকার নাটকের মঞ্চায়ন করে কিছুদিন আগেই। যা সারা বিশ্বে স্ক্রিপাল কেস নামে পরিচিতি পায়। ইংল্যান্ডে বসবাসকারী সাবেক এক রাশিয়ান গুপ্তচর আর তাঁর মেয়ের ওপর এক ধরনের বিষক্ত গ্যাস প্রয়োগ করে দায় চাপানো হয় রাশিয়ার ওপর। কোন ধরনের তদন্ত ছাড়াই ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রী (দুই দিন আগে পদত্যাগকারী) বরিশ জনসন অভিযোগ করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদেমির পুতিনের বিরুদ্ধে। কিন্তু ব্রিটিশ পুলিশ এবং OPCW তদন্তে ওই হামলার পিছে রাশিয়ার দোষ প্রমানে ব্যার্থ হয়।
তবে ওই মিথ্যা অভিযোগের দোহাই দিয়ে ইউরোপ অ্যামেরিকা থেকে শতাধিক রাশিয়ার কূটনীতিকদের বহিষ্কার করা হয়। তারপরও রাশিয়া বিশ্বকাপকে ব্যার্থ না করতে পেরে শেষে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার মাধ্যমে রাশিয়াকে বর্বর আখ্যা দিয়ে সবাইকে রাশিয়া বিশ্বকাপ বর্জনের আহব্বান জানায় তারা। ইউরোপিয়ান নাগরিকদের রাশিয়া সফরে সতর্ক করে দেওয়া হয়, নানা ভাবে তাদের বোঝানোর চেষ্টা করা হয় ইউরোপিয়ানদের জন্য রাশিয়া নিরাপদ নয়। কিন্তু তাদের সেই চেষ্টা ব্যার্থ হবার পর ব্রিটিশ সরকার নিরাপত্তার অযুহাতে তাদের দলকে রাশিয়া বিশ্বকাপে না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তবে ফিফা সরাসরি ইংল্যান্ড টিমকে হুমকি দেয় যদি তাদের দেশ বিশ্বকাপে জাতীয় দল প্রেরণ না করে তবে পরবর্তী বিশ্বকাপে তাদের বহিষ্কার এমনকি ফিফা সদস্যপদ কেরে নেওয়া হবে। সর্বশেষ এক প্রকার বাধ্য হয়েই বিশ্বকাপ শুরুর ৩-৪ দিন পর ইংল্যান্ড তাদের ফুটবল দলকে রাশিয়া পাঠায়। এবারের বিশ্বকাপের দুই ফাইনালিস্ট দল ফ্রান্স এবং ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে রাশিয়া সফরে এসে মাঠে বসে নিজ দলকে সমর্থন করলেও সেই কথিত নিরাপত্তার অযুহাতে ব্রিটিশ কোন নেতা রাশিয়া সফরে আসেন নাই।
তবে খোদ ব্রিটিশ নাগরিকসহ বিশ্বের লক্ষ লক্ষ ফুটবল প্রেমী বিশ্বকাপ উপলক্ষে রাশিয়া সফর করেছে এবং অনেকেই বিশ্বকাপের মাঠের টিকিট না পেলেও এই সময়ে রাশিয়ার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান সফর করেছে। আর রাশিয়া সফরকারী ইউরোপিয়ান নাগরিকরা রুশ আতিথেওতায় মুগ্ধ হয়েছে। সফল বিশ্বকাপ আয়োজক হিসেবে এরই মধ্যে বিশ্বব্যাপী রাশিয়ার সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে যা মাঠের বাহিরে ইংল্যান্ডের জন্য চরম পরাজয়।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৪