হ্যাঁ ঠিক শুনেছেন সৌদি আরবের কঠিন নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছে কানাডা। সম্প্রতি সৌদি আরবে মানবাধিকারকর্মীদের কারাগারে পাঠানোর সমালোচনা করে অবিলম্বে তাঁদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানায় কানাডা। কিন্তু সৌদি আরব কানাডার এমন আচারনকে তাদের জাতীয় নিরাপত্তায় বাহিরের হস্তক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করেছে। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে সৌদি আরব কানাডার সাথে সব ধরণের সম্পর্ক ছিন্ন করেছে।
সৌদি আরব কানাডার রাষ্ট্রদূতকে বহিস্কার ও নিজেদের রাষ্ট্রদূতকে কানাডা থেকে প্রত্যাহার করেছে। কানাডার সাথে সব ব্যাবসা, সৌদি আরব থেকে কানাডায় সৌদি বিমানের ফ্লাইট বন্ধ করে এবং কানাডায় পড়াশোনা করছেন ও চিকিৎসারত সৌদি নাগরিকদের অন্যদেশে সরিয়ে নিতে শুরু করেছে তারা। সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে হলে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী কানাডাকে ক্ষমা চাইতে বলেছে।
সৌদি নিষেধাজ্ঞা ও অবরোধের মুখে পড়ে কানাডার শেয়ার বাজারের সূচক নীচে নামতে শুরু করেছে এবং কানাডার ডলারের দাম কমে গিয়েছে। এছাড়াও সৌদি সরকার যদি কানাডার কাছ থেকে সামরিক যান ও অন্যান্য অস্ত্র কেনা বন্ধ করে দেয় তাহলে কয়েক হাজার কোটি ডলারের ক্ষতির মুখে পড়বে কানাডা সরকার। তবে সৌদি মিডিয়ার টুইটার থেকে কঠিন একটি বার্তা দেওয়া হয়েছে কানাডাকে।
রয়টার্সের দেওয়া তথ্য অনুসারে এমন পরিস্থিতিতে কানাডা সরকার আরব আমিরাত, মিসর এবং ইংল্যান্ডের সহযোগিতায় সৌদি আরবের সাথে সম্পর্ক ভালো করবার চেষ্টা করছে। তবে মিসর বলেছে তারা সৌদি আরবের অবস্থানকে সমর্থন করছে। অ্যামেরিকা কিছুদিন পূর্বে ইউরোপ এবং কানাডার সাথে এক প্রকার দন্দে জরিয়ে পরায় তারা সৌদি-কানাডার দন্দে নিজেদের দূরে সরিয়ে রেখেছে।
তবে কানাডার সরকারের পক্ষ থেকে তাদের প্রধানমন্ত্রী টুডো বলেছেন তিনি সৌদি আরবের কাছে ক্ষমা চাইবেন না এবং মানবাধিকারের পক্ষে তারা দেশে ও বিদেশে জোরালো সমর্থন দিয়ে যাবেন। কিছুদিন পূর্বে কানাডা সিরিয়া থেকে কথিত মানবাধিকার সংস্থা হোয়াইট হেলমেট এর সদস্যদের কানাডায় আশ্রয় দিয়েছে। কানাডার এ উদ্বেগ ও আহ্বানের পেছনে অবশ্য একটি গল্প আছে। সামার বাদাবি দীর্ঘদিন ধরে তাঁর ভাই একজন সুপরিচিত ব্লগার রাইফ বাদাবির পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন। ইসলাম ধর্ম ত্যাগ এবং ইলেকট্রনিক চ্যানেলের মাধ্যমে ইসলামকে অবমাননার জন্য সৌদি কর্তৃপক্ষ ২০১৪ সালে রাইফকে ১০ বছরের জেল এবং এক হাজার চাবুক মারার নির্দেশ দেয়। ২০১২ সালে রাইফ গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাঁর স্ত্রী এনসাফ হায়দার তাঁর তিন সন্তানকে নিয়ে কানাডায় পালিয়ে যান। গত ১ জুলাই তাঁদের কানাডার নাগরিকত্ব দেওয়া হয়। এরপর থেকে এনসাফ তাঁর স্বামীর মুক্তির জন্য প্রচারণা চালিয়ে আসছেন, যা সৌদি আরবকে বিরক্ত করেছে।