somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গানের বিকৃতি কি ঠিক আছে নাকি ঠিক না?

০৪ ঠা জুন, ২০১৮ সকাল ১১:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


একটা ব্যাপার লক্ষ্য করেন, আপনি তো জেমস, হাসান, তুহিন কিংবা অরিজিতদের মতো ওদের গায়কীটা নকল করে গাইতে পারবেন না কিন্তু তবুও তাদের গাওয়া কিছু পছন্দের গান আপনি গাইতে চান। তখন কী করবেন? একা একা গেয়ে রেকর্ড গানটি নিজের কাছেই রেখে দিবেন? বন্ধু বান্ধব আর সোশাল মিডিয়ায় শোনাবেন না?

ধরেন আপনি আপনার গাওয়া জেমসের একটি গান সোশাল মিডিয়ায় শোনালেন। তখন গানটি নিয়ে মিডিয়া মহলে আলোচনা শুরু হলো। বেশীরভাগে বলতে শুরু করলো জেমস তো গানটিকে এইভাবে গায়নি। নিজের মত গেয়ে আপনি গানটির বারোটা বাজিয়ে দিলেন। আবার নিজের ধরণ ছাড়া জেমসের ধরণেও আপনি গানটি গাইতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে কী করার?

সেক্ষেত্রে আসলে কিছু করার নেই। আপনি যেভাবে গানটিকে গেয়েছেন সেইটাই রাইট ওয়ে। গানের বারোটা বাজানো, গানের সুর বিকৃতি, গানের স্টাইল বিকৃতি এইসব গানের বিবর্তৈনিক নেচার। এইভাবে আরেকটা নতুন সুর, নতুন ধরণ আর নতুন গানের জন্ম নেয়। তখন একদল নতুনটিকে গ্রহণ করে আবার আরেকদল পুরোনোটিকেই শুনতে চায়। কিন্তু নতুনটি ঠিকই প্রবেশ করে ফেলে। এবং এই নিয়ে মাতামাতিও শুরু হয়। শিল্পী হাবীব তার গানের এলবাম কৃষ্ণ নিয়ে এইভাবেই শ্রোতা মহলে প্রবেশ করে ভীষণ জনপ্রিয় হয়েছিলেন। শিল্পী লিমন নিজের স্টাইলে পুরনো গানগুলো গাচ্ছেন। সম্প্রতি গানবাংলা চ্যানেলের তাপস "উইন্ড অফ চ্যাঞ্জ" নামে নতুন আয়োজনে জনপ্রিয় গানগুলো গেয়ে যাচ্ছেন। এমনকি ভারতীয় মিডিয়ায় আজকাল পুরনো গানগুলোকে নতুন করে গাইবার যেন একটা জাগরণ শুরু হয়ে গিয়েছে।

এই নিয়ে বেশ কয়েক বছর আগে ছোটখাটো একটা তুমুল আলোচনা হয়েছিল। দুই দলে ভাগ হয়ে আমরা গানের বিকৃতির পক্ষে বিপক্ষে নিয়েছিলাম। আলোচনাটা শুরু হয়েছিল বাউল আবদুল করিমের গান নিয়ে। করিমের দিবস গুলোতে তাকে নিয়ে আলাপ করার সময় যে ব্যাপারটি বারেবারে সামনে চলে আসে তা হলো করিমের গানের বিকৃতি। কেউ বলছেন এটা অনুচিত আবার কেউ সরাসরি না বললেও মিনমিন করে বিকৃতিটাকে মেনে নিচ্ছেন। রবীঠাকুরের গান নিয়েও এমন একটা বিতর্ক প্রচলিত আছে। অনেক ভক্ত চান না তার সুর আর গান বিকৃত হোক। আবার আমার এখন রবীঠাকুরের যে জনপ্রিয় গানগুলো শুনি তার বেশিরভাগ আদি সুর আর আর আদি গায়কীরে বিকৃত করা গান। অথচ দেখুন কী ফিল নিয়ে আমরা তা শুনছি।

আসলে এই ব্যাপারটা কেবল গায়ক অথবা সুর কেন্দ্রিক চিন্তা না করে সময় আর শ্রোতা দিয়েও চিন্তা করতে হবে। শিল্পী মৌসুমি ভৌমিক এমনকি গানের ভাব দিয়েও চিন্তা করার কথা বললেন। একেকটা গানকে মানুষ একেক ভাব নিয়ে শোনে এবং গায়। একই গান কেউ প্রিয়তমাকে ভেবে শুনে আবার কেউ বন্ধু অথবা মা-বাবাকে ভেবে শোনে। ফলে তখন ভাবের তারতম্যের কারণে গায়কীরও পরিবর্তন ঘটতে পারে। তাছাড়া কন্ঠের রকমভেদেও সুর এবং গায়কীর পরিবর্তন ঘটতে পারে।

মৌসুমি ভৌমিক সিলেটে এসে বাউল করিমকে নিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে আলাপ করার সময় বিভিন্ন উদাহরণ দিয়ে বিকৃত গানকে গ্রহণ করার ব্যাপারে একমত হয়েছিলেন।
অবশ্য কেউ চাইলে শুধু আদি সুর কেন্দ্রিক চিন্তাও করতে পারে। এ ক্ষেত্রে তার মাথায় যেই সুর গেঁথে আছে সেইটার ব্যাঘাত ঘটলে তার পছন্দ নাও হতে পারে। এইটা স্বাভাবিক। সুর, গান এইসব আসলে একেকজনের একেক চয়েস। যুক্তি আর উদাহরণ দিয়ে অন্যের পছন্দকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। তবে ফেক্ট নিয়ে আলোচনা করা যায় অবশ্য।
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×