somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শামান সিম্ব্রী
একটু পাগলাটে টাইপের আত্বকেন্দ্রিক ছেলে আমি।ছোটবেলা থেকেই পাগল পাগল কথাটা শুনতে শুনতে বড় হয়েছি,মেনেও নিয়েছি।বিদ্যালয় জীবনটা তেমন সুখের ছিল না,তেমন একটা মনে রাখার চেষ্টা করিও না।সিনেমা পাগল,সিনেমা নির্মানের স্বপ্ন দেখি,আর অদক্ষ লেখনীর মাঝে পাগলামি করে বেড়াই

আবোল তাবোল

২০ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সকাল সকাল চমকে উঠলাম,উঠব না কেন?নিজেকে আবিস্কার করলাম শুভ্র বরফে ঢাকা একটি পর্বতের মাঝে,পর্বতের চারপাশটাও অদ্ভুত।কেমন অদ্ভুত শুনবেন?পর্বতের নিচে একটা হ্রদ আর সেই হ্রদের পানি টল টল করছে একটুও জমে যায় নিই।চমকেছি দুইটা কারনে প্রথমে আমি বাংলাদেশী বাঙ্গালী কোনদিনও তুষারপাত দেখি নিই আর দ্বিতীয়ত এই শুভ্র তুষার ও আশেপাশের অদ্ভুত পরিবেশে আমি কিভাবে বেঁচে আছি?ও আরো একটা কারনে চমকেছি আর সেটাই সবথেকে বড় কারন,কারনটা হচ্ছে আমি তো ঘুমিয়েছিলাম আমার শোবার ঘরে আর সেটা বাংলাদেশে এবং পৃথিবীর সবথেকে ঘনবসতীপুর্ন শহরের একটাতে,মানে ঢাকাতে,প্রচন্ড গরমে এসির তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রীতে এনে রেখেছিলাম,তাহলে আমি এখানে এলাম কি করে?হঠাৎ একটা চাপা উত্তেজনা এসে ভর করল আমার উপর,আমার নামে শামান শব্দটা থাকায় শয়তান আমাকে এখানে এনে রাখে নিই তো,ঈশ্বরও হতে পারে।আচ্ছা জায়গাটা কি সাইবেরিয়াতে?নাকি এন্টারটিকা মহাদেশে?এন্টারটিকা হলে তো মহাবিপদ।এই মহাদেশেতো মানুষই তেমন থাকে না,এত বড় মহাদেশে মানুষ কিভাবে পাব?আর এন্টারটিকায় কি এমন হ্রদ আছে নাকি?এটাতো হিমালয়ও হতে পারে?হিমালয় হলে অপেক্ষাকৃত কম বিপদ,কারন দেশ থেকে নিকটেই আমার অবস্থান,মানুষও পাব।কিন্তু আমি পাহাড়ে ঘুরলেও কখনও তুষারে আবৃত কোন পর্বতে গমন করি নিই,করব বাই কিভাবে?আমি সমতলের ছেলে তার উপর আমার দেশে তুষারপাত হয় না,বরফ যুগেও হত কিনা জানি না,আচ্ছা বরফ যুগে কি বাংলার অস্তিত্ব ছিল?ধুর কিসব যাতা বকছি?কুমিল্লার লালমাই পাহাড়ের মাটির বয়সই তো ২ শত কোটি বছর।এই শীতেও ঘামছি,ঘামব নাইবা কেন? আমি যে পর্বতটাতে আছি সেই পর্বতটা একদম খাড়া,যত্তসব ঈশ্বর ও শয়তানকে গালাগাল দিতে ইচ্ছে করছে,ইচ্ছে করছে না শুধু দিচ্ছিও,আমাকে শাস্তি দিবি দে মজা নিবি নে,কিন্তু এইরকম অদ্ভুত স্থানে?তাও আশেপাশে পানি জমাট বাধে না,একদম খাড়া পর্বত।আমি হলফ করে বলতে পারি তেনজিং শেরপাও এই পর্বতে উঠতে পারবে না,পারবেই না,এমনকি দেবতারাও না।তবে চাক নরিসের ব্যাপারটা জানি না বাপু,ও ব্যাটার পক্ষে সবই সম্ভব।তুষার এর মাঝে বসে কিছু দৃশ্যের কথা খুব মনে পরছে,কুয়েন্তিন তারান্তিনোর দ্য হেইটফুল এইটের ইন্ট্রো,স্ট্যানলি কুবরিকের দ্য শাইনিং এর সেই দৃশ্য,জ্যাক নিকলসন জমে হিম হয়ে গিয়েছিল তুষারের মাঝে,ইনারিতুর দ্য রেভেনেন্টে রক্তের ভিতর ক্যাপ্রিও ও টম হার্ডির সেই যুদ্ধ।গেইম অব থ্রোন্সেও তুষার এর ভিতর অসাধারন কিছু দৃশ্য রয়েছে,আমি আবার রক্তপাত খুব পছন্দ করি,নিজের রক্ত তুষারের উপর রেখে দেখতে ইচ্ছে করছে কতটা সুন্দর হতে পারে,কিন্তু এই ঠান্ডায় সাহসে কুলায় না।শীতে কোথাও কেটে গেলে বেশী যন্ত্রনা হয়।গেইম অব থ্রোন্সের অষ্টম মৌসুম হয়ত আমার কপালে নাই,ভাগ্যদেবী আমার উপর রুষ্ট হয়েছেন।আমি কি জীবিত?জিবীত না মৃত কিভাবে বুজব?মৃত হলে তো স্বর্গ অথবা নরকে থাকতাম।সেখানে নিশ্চয়ই এত নির্জন থাকত না।দুই একটা অপ্সরী অথবা কোন শাস্তি দাতা থাকতেন।যদিও আমি স্বর্গ কিংবা নরকে বিশ্বাসী না,কিন্তু এখন উপায় নেই।এমন আজব স্থানে কিভাবে আসলাম তাই বুজতে পারছি না।একটা কথা বলার মানুষ তো দূরের কথা একটা বিড়ালের দেখা পর্যন্ত নাই,যেভাবেই হউক আমাকে নামতে হবে ক্ষুধা লেগেছে,পাশেই এক ঠোঙ্গা বিস্কুট আর এক প্যাকেট ডানহিল ব্রান্ডের সিগারেট।বাহ যেই আমাকে এখানে এনে রাখুক না কেন সে আমার প্রিয় বিস্কুটের নামও জানে আর সিগারেটের নামও জানে।দেশলাই পকেটেই আছে বিস্কুট দিয়েই আজ সিগারেট খাব এরপর নেমে যাব।আমি খাচ্ছি আর আশেপাশে তাকাচ্ছি,ওহ খেয়ালই করা হয় নিই আকাশটা একদম রক্তিম বর্নের।কি সাঙ্ঘাতিক?আমি কি তবে ইউরোপা উপগ্রহে আছি?তাহলে কি আমার আর পৃথিবী দেখা হবে না?গেইম অব থ্রোন্স,আজগর ফারহাদির সাইকো মুভি,তারান্তিনোর ভায়োলেন্স সবই মিস হয়ে যাবে?আমারও কি ফিল্মমেকার হওয়া আর হবে না?কত স্বাধ ছিল সিনেমা বানাব,সে মনে হয় গুড়ে বালি।এখানে যেহেতু এসে পরেছি একটা উপায় বের করবই।একবার এক সাইন্সফিকশন পড়েছিলাম বারমুডা ট্রায়াঙ্গল থেকে গ্রহান্তর,সেরকম কিছু একটা করতে হবে।সিগারেটটা শেষ করে বিস্কূটের প্যাকেটখানা পকেটে পুরলাম,কারন আমি পরিবেশ নষ্ট একদম পছন্দ করি না,সিগারেটের পাফও ঠোঙ্গায় রাখলাম।এখন নামতে হবে।একি একি!এতো দেখছি তুষার আমার দিকে তেড়ে আসছে তুষার ধসের কথা পরেছি,আমি ভয়ে পিছাতে থাকলাম পিছাতে পিছাতে ফসকে গেলাম।বাঁচাও।ধপাশ করে মনে হল নিচে পরলাম,এতো দেখছি আমি বিছানাতেই আছি,কিন্তু একি রুমটা এত অপরিচিত কেন?পর্বতের নিচে কোন কক্ষ নয়ত?জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে চক্ষু আমার চরকগাছ?এতো মরুভুমি?আরবে আসলাম নাতো?ওরে বাপরে,কোন পরীক্ষার ভিতর পরলাম?মরুভুমি কথা শুনলেই চোখে ভাসে ইরাক সিরিয়া,ইয়েমেন ফিলিস্তিন,সৌদি,ইসরায়েল,এক একটাতো জীবন্ত রনক্ষেত্র?এবার নির্ঘাৎ হয় গুলি খাব নয় ছুড়ি খাব?মিসাইলও খেতে পারি?সমুচা খেতে ইচ্ছে করছে।সমুচা নাকি আরবদের খাবার।ব্যাটাদের অধিকাংশ খাদ্যই খাবার অযোগ্য যদিও কিছু কিছু ফল খুবই সুস্বাদু যেমন খেজুর,পার্শিমন এসব,তেমনি বাকলাভা মিষ্টি,সমুচাও খুব মজার হয়।প্রচন্ড তেষ্টাও পেয়েছে,পর্বতে বসে পানি খেতে পারি নিই,এখানে পাব কি?পানি না পেলেও এক বোতল লাল পানি আছে,খাটি আঙ্গুরেরই হবে,এই বোতল যদি সেই তুষারাবৃত পর্বতে থাকত কাজে লাগত,শুভ্র তুষারে রঙ্গিন পানি ঢেলে সৌন্দর্য অবলোকন করছি।আমি ঘামছি আর টিরিয়ন ল্যানিস্টারের ন্যায় ডর্নিশ মদ পান করছি,আর ভাবছি কি করে ঢাকায় ফেরা যায়।নইলে নির্ঘাৎ মৃত্যু।এই গরমে আমি টিকতে পারব না একদম অসম্ভব।দর দর করে আমি ঘামছি আর আকাশের পানে তাকাচ্ছি আকাশটা নিশ্চুপ ও কালো রঙ্গের।মনে হয় বৃষ্টি নামবে,নামলে কিছুটা ভালই।আমি এদিক ওদিক তাকাই এমন সময় প্রচন্ড একটা বিস্ফোরনের শব্দে আমি আতকে উঠি।বিছানার উপর বসে পরি,একদম ঘামছি আমি ভয়ানক ঘাম।এসিটা বন্ধ হয়ে আছে,বিদ্যুৎ চলে গেছে তাই এই অবস্থা।বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে ও প্রচন্ড বজ্রপাত।এই ঘরটা আমার একদম পরিচিত।পাশেই সিগারেটের প্যাকেট পরে আছে,একটা সিগারেট ধরালাম এবং বাইরের দিকে তাকালাম।জানি না আমি আসলেই জেগে কিনা।বিছানার উপর ভোলগা থেকে গঙ্গা বইটা পড়ে আছে,আর টেবিলের উপরে পানির পাত্রটাতে মনে হচ্ছে শিশির পরেছে।মনে মনে হাঁসি পাচ্ছে খুব।

সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:৩১
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×