somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিভাবে কিভাবে যেন ৮ বছর পার হয়ে গেল এই সামুতে !!!

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মানুষ কতদিন ধরে ব্লগিং করতে পারে ? এই প্রশ্নের কোন উত্তর আসলে আমার জানা নেই। তবে গত ৮ বছর ধরে সামুতে নিয়মিত লগইন করে যাচ্ছি এইটা জানি, লগইন করে যাচ্ছি বললাম কারন নিজে এখন আর ব্লগিং করছি বলে মনে হয়না । এক সময়ের তুমুল উত্তেজনায় পার করা ব্লগ দিন গুলো এখন আর নেই, অন্য কাউকে দোষ দিবনা, আমার নিজের পক্ষেই আসলে টাইম করে উঠা সম্ভবপর হয়ে উঠছেনা, শেষ কবে গল্প কবিতা লিখেছি মনে পড়েনা, নিজের উপস্হিতি জানান দিতে কিংবা পুরোনো ভালবাসার টানে মাঝে মাঝে কোথাও ঘুরে এলে এখন কেবল সে ছবি ব্লগ দিয়ে কাজ শেষ করে ফেলি। এটাও জানিনা আবার কবে নিজের মনের কথাগুলো নিজের মত করে ব্লগের আঙিনায় তুলে ধরতে পারব, নিজের জন্য একটু সময় বের করে নিয়ে । দিন চলে যাচ্ছে, নিয়ম করে ব্লগে আসি, দেখি অনেক পোস্ট, বলা হয়না কিছুই । একসময়ের তুমুল আড্ডায় পার করা ব্লগের সময় গুলো মনে পড়ে, নতুন ব্লগারদের অনেককে না আসলে কাউকেই মনে হয় চিনিনা, কারো সাথে তেমন ইন্টারএ্যাকশন নাই। অথচ একটা সময় প্রিয় মানুষগুলোর পোস্টে নিয়মিত কমেন্ট করা হত, জবাব দেয়া হত, আজ তারা অনেকেই মনে হয় লেখেন ওনা.......

একটা সময় ছিল নিজের জীবনে ঘটে যাওয়া সবকিছু ব্লগে শেয়ার করার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকতাম, কতগুলো মানুষ এই ব্লগের কল্যাণে এখন হয়ে গেছে খুব কাছের মানুষ, কারো নাম নিচ্ছিনা পরে আবার কোনটা বাদ পরে যায় কে জানে :)
মন থেকে খুব চাই আবার নতুন করে শুরু করব ব্লগিং, দেখা যাক কবে পারি আবার। শুভকামনা সবার জন্য ।

ব্লগের শুরুটা ছিল এই রকম- বেকারত্ব বড় মধুর যদি থাকা খাওয়া নিয়া তেমন টেনশন না থাকে। সে বেকারত্বকে আরও প্রলম্বিত করার সুযোগ করে দিলেন আমার বাপ- বাবা তুমি জব নিয়া কোন টেনশন নিবানা, ইনশাআল্লাহ সময় আসলে ওটা হয়ে যাবে, তুমি চেস্টা করে যাও । আমি যেন আরও সাহস পেলাম বেকারত্ব কে আরও দীর্ঘায়িত করার, নিজের পছন্দের জব না পেলে করবইনা এমন কথা ভাবতেও দ্বিধা করিনা, সময়ের উপর আমি সবসময় আল্লাহ ভরসা !!!!

লাভের লাভ যেটা হল আমার ঘুম বিলাস নতুন মাত্রা পেল। সারারাত জেগে থাকি সারাদিন ঘুমাই। বিকালে উঠি রাত দশটা পর্যন্ত টং দোকানে আড্ডা পিটাই তারপর বাসাই ফিরি।

বেকার জীবনে আবার নতুন করে প্রেমে পড়লাম টম এন্ড জেরীর । কার্টুন নেটওয়ার্ক এ তখন রাত সাড়ে এগারটায়, দেড়টায়, সাড়ে তিনটায় আর সাড়ে ছয়টায় টম এন্ড জেরীর শো দেখাত । সাড়ে ছয়টার শো দেখে ঘুমাতে যেতাম। মাঝের সময় গুলাতে নেট ব্রাউজ । মাঝে মাঝে চ্যানেলে ক্যারাম নাটক আর মুন্না ভাই এম বি বি এস দেখাত জি সিনেমায়। এই দুটাও যে কতবার দেখছি !!!!

নেটে বসে বসে কিছু হালকা পাতলা পড়ালেখার যে ট্রাই করিনা তা না, পছন্দের জব এর জন্য সে রিলেটেড কিছু ডকুমেন্ট পড়ি, আর যে অভ্যাসটা তৈরি হল তা হচ্ছে মোটামুটি সব গুলো জাতীয় দৈনিকের অনলাইন সংস্করন রাতেই পড়ে ফেলা । পড়তে পড়তে একদিন প্রথম আলোর আইটি পাতায় একটা নিউজ দেখলাম : প্রথম বাংলা ব্লগ সাইট সামহ্যোয়ারইন চালু । রাত তিনটা হবে তখন মনে হয়। পেজ ওপেন করলাম।

সাথে অভ্যাস বশতঃ গুগলে একটা সার্চ দিলাম ব্লগ মানে কি জানতে চেয়ে। সন্তোসজনক কিছু পেলাম না। দেখা শুরু করলাম সামু। প্রথম কোন পোস্টটা পড়েছি মনে নাই। তবে প্রথম দিনের পর যেটা মনে হল ব্লগ মানে হচ্ছে ইচ্ছা মতন লেখার খাতা। কত রকমের সে লেখা, যার যা ইচ্ছা লিখে ফেলছে। রেজিষ্ট্রেশন করে ফেললাম।

প্রথম দিকে ব্লগ কে আবিস্কার করলাম একটা যুদ্ধক্ষেত্র রূপে। আস্তিক - নাস্তিক, মুক্তিযুদ্ধ-রাজাকার, জামাত-শিবির। আমার বেকার জীবনে নতুন প্রেম এসে গেল। একটার পর একটা পোস্ট পড়ে যায়, বাংলা লিখতে পারিনা তাই কিছু বলতেও পারিনা, মাউস দিয়ে আর কতক্ষন লেখা যায় ।
তবুও আমি পড়ি, অনেক অজানা জানা হয়............নেশা পেয়ে যায়। নতুন এক তথ্য ভান্ডার এই ব্লগ। বিনে পয়সায় কত গল্প কবিতা পড়া হয়ে যাচ্ছে।

জব হয়ে যাবার পর অফিসে মাঝে মাঝে পড়ি, লেখা হয়না, কারন বাংলা টাইপটা শিখতে পারিনাই। পরে মাউস দিয়ে টাইপ করে করে লিখতাম কিছুদিন। কিন্তু আঙ্গুলে ব্যাথা শুরু করার পর থামতে হল, কিন্তু তখন যে লেখার ইচ্ছাটা বাড়তে লাগল, বিনা পয়সায় বিনা খরচে নিজের লেখা অন্যকে পড়ানোর এই সুযোগ আর কই পাবো !!!!

সেই সাথে প্রিয় হয়ে উঠা ব্লগারদের সাথে থাকার লোভটাত আছেই । কেমন করে জানি অনেক গুলা আপন মানুস পেয়ে গেলাম, দুটা আড্ডাতে গিয়ে সেটা যেন আরও বেড়ে গেল। নতুন একটা জগৎ তৈরি হল। অনেক গুলো মানুষ, একটা মায়া ও আছে এখানে....... এক ধরনের অভ্যাস , ভাল লাগা ও বটে- প্রতিদিন ঢু মারা, সেই সাথে ভুলতে বসা বাংলা লেখাটা আবার ও চালিয়ে যাওয়া। ভার্সিটি ঢুকার পর থেকেত আর বাংলা লেখাই হতনা, এখন অফিসেও না !!!!
রেজিষ্ট্রেশন টা করি নিজের নামে। যতই দিন যায় মনে হয় কি ভুলটা করলাম। বান্দরামীতে আমিওত কম না। নিজের নাম দিয়া রেজিষ্ট্রেশন করায় আমি কেমন জানি সুশীল হয়ে গেলাম। মারামারি কাটাকাটি গালাগালি, শয়তানী কিছুই করতে পারিনা--আফসুস !!!!
এই ব্লগে লিখে লিখেই হয়ে গেছে আমার প্রথম বই এর পান্ডুলিপি !!!

২য় বই এর কাজটা অনেকদূর এগিয়ে নিয়েও আর শেষ করতে পারছিনা এই সময়ের অভাবে, জানি দোষটা আমারই, ইনশাআল্লাহ খুব জালদিই তা শেষ করে ফেলার ইচ্ছা আছে :)
তবে ব্লগ লেখার ব্যাপারে একটা ভাল লাগা এটা বড় প্রাপ্তি ছুয়ে যায় যখন দেখি আমার ছেলের জন্মের সাথে জড়িয়ে থাকা সবগুলো ঘটনা থরে থরে সাজানো এই ব্লগের পাতায়।

শুভ হউক ব্লগিং, শুভ হউক সবার পথ চলা । শুভকামনা সবার জন্য । ।
৬৫টি মন্তব্য ৬৫টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×