somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাজেক- শব্দহীন সৌন্দর্য আর নৈস্বর্গীক নিরবতা

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ভেঙ্গেছে পিঞ্জর
মেলেছে ডানা
উড়েছে পাখি
পথ অচেনা...................

আমরা আট জন । দীর্ঘ অনেকদিন পর সবাই একসাথে বিবাহিত ব্যাচেলর হবার মাঝে আলাদা একটা মজা আছে । সেই মজা উপভোগ করার জন্য সবাই মিলে রওয়ানা দিলাম সাজেক ভ্যালীর দিকে । এই জায়গাটায় যাব যাব করেও যাওয়া হচ্ছিলনা । অবশেষে তিন দফা সময় পরিবর্তনের পর সবার সময় এক জায়গায় এসে মিলেছিল ।

সেন্টমার্টিন পরিবহনে চড়ে বসার পর জনৈক ব্যক্তি আমাদের সাজেক যাবার কথা শুনে শুরুতেই ভাব নিলেন, যেহেতু আমরা কোন বুকিং দেই নাই তাই কোন জীপ পাবনা, হোটেল পাবনা ইত্যাদি নানা রকম ভবিষ্যতবানী সে করে গেল । মনে মনে হাসলাম, বেচারা মনে হয় ভেবেছিল আমরা জীবনে প্রথম ঘুরতে বের হয়েছি, না জানি কত বিপদ সংকুল এই ঘুরে বেড়ানো ব্যাপারটা । তাকে আশ্বস্ত করলাম টেনশন নিয়েননা, বিপদে পড়লে আপনাকে ফোন দিব :)

বাস থেকে নামার পর দেখি জীপ ওয়ালারাই আমাদের পেছনে ঘুরছে । ঠিকঠাক করে উঠে পড়লাম একটায় । সমতল থেকে ধীরে ধীরে উপরে উঠে যাচ্ছি আমরা, বদলে যাচ্ছে দুপাশের দৃশ্যাবলী । দুপাশ যত না উপভোগ্য তার চেয়ে বেশী উপভোগ্য আসলে বন্ধুদের সংস্পর্শ । তাই সাজেক হউক আর টং দোকান হউক বন্ধুরা থাকলে যেকোন সময়ই উপভোগ্য । ভ্রমনটাকে ডেজার্ট বলা যেতে পারে ।



চলতি পথের নীলাকাশ যেন মাথা নস্ট করে দেয় । কেউ জনে বালতি ভরে নীল ছিটিয়ে দিয়েছে আকাশে । সাজেক পৌঁছে থাকার জন্য হোটেলেরও বন্দোবস্ত হয়ে গেল। দুপরের খাওয়া শেষে আমরা কাছাকাছি আর্মীর একটা পার্কের মত জায়গা আছে, সেখানে গিয়ে পাহাড়ের ভ্যালীর দিকে পা দুলিয়ে বসে বসে ভাবছিলাম ইস এই জায়গায় যদি একটা লেক থাকত কতইনা সুন্দর হত । প্রকৃতি মনে হয় হেসেছিল তখন, পরদিন সূর্যোদয় দেখার জন্য ঐ জায়গায় গিয়েত মাথা নস্ট, মেঘের/কুয়াশার সমুদ্র চোখের সামনে । উফ এই সৌন্দর্য লিখে কিংবা ছবিতে বলে বোঝানো যাবেনা........................বিশাল সাজেক ভ্যালী পুরোটা যেন চাদর পরে বসে আছে , নৈস্বর্গীক সৌন্দর্য তার । দূরে পাহাড়ের মাথার উপর হঠাত করে এসে হাজির হবে আগমনী সূর্য আর সে সোনালীচ্ছটা মেঘের চাদরে লেগে মোহনীয় করে তুলবে চারপাশ ।











রাতের সাজেকের রুপ অন্যরকম । পরিষ্কার আকাশে লাখো তারার সমাবেশ । মুখ ফসকে বলে ফেললাম আহা দেখ কত তারা গিজগিজ করছে । পাশে থাকা বন্ধু বলল তারার এই সমাবেশের জন্য গিজগিজ শব্দটা বিশেষন হিসেবে মোটেই সুন্দর না । নতুন কোন প্রতিশব্দও খুজে পেলামনা । হঠাত হঠাত ধুমকেতু খসে পড়ার দৃশ্যটাও চমতকার ভাবে দেখা মিলবে সেখানে ।

রাতে খাবার টেবিলে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল ব্যাম্বুচিকেন । বাঁশের ভেতরে মশলা মাখানো মুরগী ঢুকিয়ে সেটাকে তাপে রান্না করা । কাঁচা বাঁশের মাঝে করা সে রান্নার স্বাদও অন্যরকম । আসার সময়ও খাগড়াছড়ি শহরের মোহছেন আউলিয়া রেস্টুরেন্টে (নামটা যেমনই হউক) হাঁসের ভুনা আর রুপচাঁদার স্বাদ এখনও লেগে আছে মুখে ।

সাজেক- শব্দহীন সৌন্দর্যের নাম । সব রকমের কোলাহল মুক্ত নৈস্বর্গীক নিরবতা উপভোগের জন্য চমতকার এক অভিজ্ঞতা ।































সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:৫৫
১৭টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×