সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ: এটা একটা লুতুপুতু মার্কা হিন্দী গান/প্রেম ভালোবাসা বিষয়ক ঐতিহাসিক লম্বা গল্প (১৭৪৬ শব্দ; পরে কোন অভিযোগ টিকবে না। আপনাকে আগেই সতর্ক করা হয়েছিল)।
আমি হিন্দী ভাষা বুঝতে, শুনতে শুরু করি ক্লাস ফাইভে থাকতে থাকতেই। সেই বছর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছিল আমার জীবনে। আমি মোটর সাইকেল চালানো শিখে ফেলেছিলাম। অনেকটা জেদের বসেই। সে গল্প অন্য কোনদিন করা যাবে। আমার শৈশব, কৈশোরের বেশিরভাগ কেটেছে উত্তরবঙ্গে। সেটার অনেকগুলো ভালো দিক যেমন ছিল, তেমনি খারাপ দিকও ছিল। এর মধ্যে প্রধানতম ছিল, ঢাকা থেকে দূরে থাকা। মানে নিজের দেশ থেকে ভিন্ন একটা দেশে থাকার মত কষ্ট আরকি। কারণ “সবকিছু” তো তখন ঢাকাতেই হত।
জেমস-বাচ্চু-মাইলস এর কনসার্ট কিংবা ফিডব্যাকের বঙ্গাব্দ এ্যালবামের রিলিজ, সবই দূর থেকে শোনা, মাঝে মাঝে দেখা। এর মাঝে বাৎসরিক চমক হিসেবে টাউন হলে তারেক মাসুদ এর, “মুক্তির গান”, “মুক্তির কথা” দেখা একটা দূর্লভ উপহারের মত; সত্যিকার “আর্টকালচারের” স্বাদ যেন।
মনে পড়ে দেড়শ টাকায় সেই ভিডিও ক্যাসেট কিনে বন্ধুদের বলে বলে এবং কখনো দেখিয়ে নিজেকে বাংলার আপামর সংস্কৃতির ধারকবাহক হিসেবে প্রমাণ করতে পেরে আমার যার পর নাই গর্ব হয়েছিল।
মানে আমার বাসায় তখন একটা ভিসিপি ছিল (ফুনাই)। পারিবারিক সম্পর্ক কিংবা ইতিহাসের জের যে কোন কারণেই হোক ঢাকার সাথে আমার সম্পর্ক চারপাশের সবার চাইতে একটু বেশিই ছিল।
সত্যিকারে ঢাকা যেন ভুলে না যাই তাই বছরে দু-তিনবার ঢাকায় যাওয়া হত বটে কিন্তু মনে রাখতে হবে তখনো যমুনা সেতুটি হয়ে ওঠেনি। তবে ঢাকার সাথে যোগাযোগের রেশ মন্দ ছিলনা, বেশ একটা আলাদা গুরুত্ব পেতাম। কিন্তু আদতে আমি মফস্বলের একটা কিশোরই ছিলাম।
তো যে গল্পটা করার জন্য এত প্রিলিউড দিলাম তা এবার শুরু করি। উত্তরবঙ্গ কিংবা সীমান্তবর্তী শহরগুলো একটা দিক দিয়ে তখনো ঢাকা থেকে এগিয়ে ছিল। আর সেটি ছিল, হ্যা আপনারা ঠিকই ধরেছেন, বিনা পয়সায় ভারতীয় চ্যানেল ডিডি ওয়ান, ডিডি সেভেন এবং ডিডি মেট্রো দেখতে পাওয়া (ডিডি=দূরদর্শন)।
“এক পাল হ্যায় জিন্দেগী, এক পাল কুচভি নেহি”। এই গানটা মনে পড়ে কারো? এটা শোভা দে বিরচিত, “স্যোয়াভিমান” মেগা সিরিয়ালের। সালটা ১৯৯৫। এটা আমেরিকান, “ডাইনেস্টি”র আদলে গড়া, ভারতীয় ভার্সন। মূল “ডাইনেস্টি” কিন্তু আমেরিকান, বিরাট বিরাট বড়লোকের কাহিনী; চলেছিল ১৯৮১ থাকে ১৯৮৯। বাংলাদেশে প্রচারিত হয়েছিল প্রায় সমসাময়িক সময়েই। ভারতীয়টার ডাইরেক্টর মহেশ ভাট। মনোজ বাজপেয়ীর উত্থান এটা দিয়েই। বহুল আলোচিত, “শান্তি: এক আউরাত কি কাহানী” তেই কিন্তু মন্দিরা বেদীর উত্থান। সালটা ১৯৯৪। ফলে খুব গুরুত্বপূর্ণ; মানে পয়েন্ট টু বি নোটেড যে এই উত্তরবঙ্গ কিংবা সীমান্তবর্তী শহরগুলোর ছাদে ছাদে লাগানো উঁচু বাঁশের উপর সঠিকভাবে এন্টেনা ঘোরানো এবং ঠিকঠাক চ্যানেলগুলো ধরতে পারা একটা বিশেষ দক্ষতা হিসেবে বিবেচ্য ছিল।
তারমানে এটাও যে, সেই সময়কার কিশোর-কিশোরীদের জীবনে এই ভারতীয় গান, সিনেমা, সিরিয়ালের প্রভাব প্রবলভাবেই ছিল এবং অন্য সকল জেলার চাইতে বহুগুণে বেশিই ছিল। ঢাকার থেকে তো বটেই।
তো মূল ঘটনা এখান থেকেই। আমার বন্ধু সাগর যখন কুমার শানু, অলকা ইয়াগনিক আর হিন্দী গানের নেশায় ক্যাসেট কিনে কিনে পাগল, তখন আমি আবার ডেক সেটে ব্রায়ান এডামস, রিচার্ড মার্ক্স, মার্ক নফলার, গানস এন্ড রোজেস শুনি।
চামে চিকনে, “ইউ ফিল আপ মাই সেন্সেস” মুখস্ত করার চেষ্টাও করি। কারণ একটাই হাই কালচারকে ধরে তো রাখতে হবে কারো, এছাড়া মেয়েদের ইম্প্রেস করার বিষয়টা নাহয় এবেলা চেপেই গেলাম। হিন্দী গান কত ক্ষ্যাত, আর আইল টাইপ, খালি লুতুপুতু (আই মিন ইট, ছোটবেলায় আমার এটাই মনে হইত)। সাগর সাইকেল চালায়া প্রাইভেট পড়তে যায় কিন্তু, “সোহাগী” (একটা কাল্পনিক নাম) রে প্রোপোজ করতে পারেনা। আমরা পরস্পর গম্ভীর আলাপ করি, ক্যাসেটে কোন কোন গান রেকর্ড করে ওরে প্রোপজ করা যায় তার প্ল্যান করি দুজনা। কিন্তু সাগর কিছুতেই ইংলিশ গান দেবেনা, এটাতে বলে আবেগ কমে যায়। মর জ্বালা। আমার হিন্দী গানের প্রতি কোনরকম আগ্রহ তৈরি হয়না। সাগরের সাথে বন্ধুত্বও ফিকে হয়ে যায়। নতুন বন্ধু হয়, ওর নাম মনে করি, মাহফুজ। সে আবার আমার আরেক বন্ধুর প্রেমে হাবুডুবু, ওর নাম মনে করি মুমু। আমি মাহফুজ আর মুমুর জন্য জান কোরবান। মাহফুজ খুব গোছানো ছেলে, স্পাইরেল করে চিঠি, কলম, কার্ড আর ক্যাসেট একটা দারুণ প্যাকেটে র্যাপ করে দেয়; আমি সেটা মুমুকে পৌছে দেই। মুমু আমাকে চিঠির কথা কিছুটা বলে কিছুটা বলেনা। সবটা শোনা আমার এক্তিয়ারে না এটা বুঝতে পারি। ওদের কাছে নিজেকে কেমন জানি ছোট ছোট লাগে। সব মেয়েরাই আমার ফ্রেন্ড হয়, বাট অন্য কিছু হয় না।
আমি তবুও নিষ্ঠার সঙ্গে ইংরেজি গান শুনে যাই, ইংরেজি সিনেমা দেখি, ইংরেজি সিরিয়াল দেখি। আমাকে হাই কালচার রক্ষা করতেই হবে।
এর মধ্যে একদিন প্রাইভেট পড়তে যেয়ে আমি তো ধাক্কা, মানে পুরাই চিৎপটাং, আমার সামনে কে এই মেয়েটা, এত সুন্দর। বেছে বেছে ঠিক আমার বিপরীত বেঞ্চেই বসেছে। ওহ!! কি তার চোখ, কি তার চাহনী। একটা শান্ত নদী যেন এবং তারচেয়েও শান্ত একটা চাপা অহংকার, ভদ্র; বিনয়ী কিন্তু ভীষণ গৌরবমন্ডিত অহমের বলয় যেন চারপাশে। বাড়তি হিসেবে সেই রকম ভালো ছাত্রী।
ভালো ছাত্রী আর অহমের মিশেল হয় কালাশনিকভের মত। কিছু বলার আগেই ঠা ঠা ঠা।
বন্ধুদের কাছে জানতে পারলাম তার নাম “কাকলী”। আর সেই মুহুর্ত থেকে আমার চারপাশে একটাই গান, “কাকলী কাকলী সুইট কাকলী, এন্ড কাকলী কাকলী হোয়াইট কাকলী”। ও বেশিরভাগ সময় সাদা জামা কাপড় পড়ত, তাই এই নাম। আমার গোছানো বন্ধুর সাথে তার আবার ব্যাপক খাতির। আর তাই প্রাইভেট শেষে মাহফুজকে বলা আমার প্রথম কথা হল, “দোস্ত কই থাকে?”। জানতে পারলাম আমার বাসার কাছেই। মনটা উড়ু উড়ু হয়ে উঠল, দৈবের একটা ইঙ্গিত আমি সরাসরি দেখতে পেলাম। আগ বাড়িয়ে নিজেই পরিচিত হলাম, আর তখন থেকেই মনে হতে শুরু করল, ঘটবে এবার কিছু ঘটবেই ঘটবে।
আমার গোছানো বন্ধু মাহফুজকে আমি বলি, “কি পছন্দ করে”? ও, অমোধ বানীর মত বলল “হিন্দী”। আমি তিন লাফ দিয়ে বললাম, আলবৎ; ঠিকিই তো। ভালো মেয়েরা হিন্দী গানই শোনে। অনেক হল ইংলিশ আসল গান তো হিন্দী। মেয়ে বন্ধুত্বে রীতিমত বিরক্ত আমি তাই এবার বললাম, “বন্ধু এবার তোমার হিন্দী পদ্ধতিই সই।“ আমার হিন্দী গানের তালিম শুরু হল। জগতের যত রোমান্টিক হিন্দী গান আছে সেসব কিনে আমি ভরিয়ে ফেললাম ক্যাসেটের র্যাক।
“ক্যায়তাহে পালপাল তুমসে, হো কে দিল এ দিওয়ানা,” “প্যায়ার কে লিয়ে চারপাল কাম নেহি থে”, “ধীরে ধীরে আপ মেরে” দিন রাত শুনি আর মনে মনে বলি, “কাকলী কাকলী সুইট কাকলী”। কিন্তু সামনা সামনি দেখা হলে কিছু বলতে পারিনা, বিরাট ভাব নিয়ে থাকি এবং বরাবরের মত ব্যর্থ হই। কাকলী আমাকে এক চাহনীতে মাটির নীচে মিশিয়ে দেয়।
কিছুই বলতে পারিনা। আমি হিন্দী গানের আরো ভক্ত হতে থাকি। এমনকি পাড়ার বিভিন্ন আয়োজনে, “হাম্মা হাম্মা” এবং “মুকাবিলা, মুকাবিলা ও লায়লা” নেচে আসর মাত করে দেই। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয় না। আমি মাহফুজের কাছে কাকলীর মনের কথা জানতে উদগ্রীব হয়ে থাকি। বন্ধু মহলে আমার গুরুগিরি একেবারে তলানীতে যেয়ে ঠেকে। মানব মনস্তত্বে আমার আগ্রহ প্রগাঢ় হয়, আমি আরো বুঝতে চেষ্টা করি এবং বরাবরের মত কিছুই বুঝে উঠতে পারিনা।
অবশেষে মাহফুজ একদিন ইতিহাসের দুঃসহতম খবরটা আমাকে দেয়। কথাচ্ছলে একদিন কাকলী তাকে জানিয়েছে যে সে, প্রধানত নিজের ক্যারিয়ার নিয়েই এখন ভাবতে চায়, তার স্বপ্ন ডাক্তার হওয়া এবং বাবামার পছন্দে নিজ ধর্মের কোন লোককেই সে বিয়ে করবে। সমবয়সী কারো কথা সে কল্পনাও করেনা, অন্যধর্ম তো সম্ভবই না। কাকলীর এই ম্যাচিওরিটিতে আমি যুগপৎ মুগ্ধ এবং বিদ্ধস্ত হই। নিজে কেন যে সেই ধর্মের হলাম না এবং তখনো লোক হয়ে উঠলাম না, তা নিয়ে আমার অনুশোচনা চলতেই থাকে।
কিন্তু এটা থেকে আমার একটা শিক্ষা হয়, যেই শিক্ষা অনেক বছর পরে আমার এক ক্লাসমেটকে আমি বলি। যে কিনা তখন একটি নেপালী মেয়ের প্রেমে হাবুডুবুজুবুথুবু হয়ে পড়েছিল। আমি তাকে বলেছিলাম, “ভীষণ শক্তিশালী প্রেম আর মনের অধিকারী না হলে, নিশ্চিত থাকো তার সাথে তোমার কোন সত্যিকারের সামাজিক সর্ম্পক হতে যাচ্ছেনা।“ আমার ভবিষ্যৎবানী অক্ষরে অক্ষরে ফলে গিয়েছিল। মেয়েটি কোর্স শেষ করেই, তার জন্য পূর্বে ঠিক করে রাখা নেপালী ছেলেটিকেই বিয়ে করে, এবং এখনো সুখে শান্তিতে ব্যাংককে হানিমুনের ছবি দিয়ে ফেইসবুক সম্মৃদ্ধ করে চলেছে। হয়ত আগে কথা দিয়ে না রাখলে মেয়েটি এই বাঙ্গালী ছেলেটিকেই বিয়ে করত। কিন্তু রাষ্ট্র ও পুরুষতন্ত্রের সীমানা এত পোক্ত যে এটা করতে হলে তাকে ভীষণ শক্তিশালী হতে হোত এবং সেটা বহন করতে এই বাঙ্গালী পুরুষটিরও অনেক জোর লাগতো।
ফিরে আসি হিন্দী গানে, কাকলী তো সেই যে অধরাই রয়ে গেল; কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় ঢুকিয়ে দিয়ে গেল হিন্দী প্রেমের গান শোনার অভ্যাস, সেটাতে তার কোন দোষ নেই বটেই। কিন্তু একটুও কি নেই? আমি আবার ইংরেজী এবং বাংলা ব্যান্ডে ফেরত গেলেও, হিন্দী গানের অভ্যাসটাও রয়েই গেল। যদিও এই অভ্যাস পুরোপুরি পোক্ত হয়েছিল আমার সত্যিকারের প্রথম প্রেমিকা কতৃক, আর গানটা ছিল, “যারা যারা ব্যাহেকতা হ্যায়”।
তো সেই উত্তরবঙ্গের ইতিহাসের পাট চুকিয়ে কাল পরিক্রমায় আমি হাই কালচারের ঢাকায় এসে ঢুকলাম। স্থায়ীভাবে নিজের দেশে ফিরলাম।
কিন্তু হায়, আমার ফেলে যাওয়া ঢাকা, যেখানে ওপেন এয়ার কনসার্ট, উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ ব্যান্ড কালচার, বাংলা আর্ট কালচার হত তা ইতিমধ্যে হিন্দীজ হতে শুরু করেছে। পুলাপাইন হিন্দী বলা, শোনা, বোঝাকে স্মার্টনেস ভাবছে। আগে যেখানে অন্তত স্টার মুভিজ আর বে ওয়াচ দেখতো সেখানে সনি, আহাট, সিআইডি আর সোপ অপেরা এমনকি কার্টুন নিয়ে মেতে আছে।
আমার মনে হল, ফেলে আসা মফস্বল থেকে যেন নতুন করে মফস্বলে ঢুকলাম। হিন্দী মফস্বল কবে শেষ করে এসেছি। তবে সেই মফস্বল ঠিক জানতো কোনটা নিতে হবে এবং সেটা পেতো না বলে যা পেত তাই নিত। এই মফস্বল তো যা নিতে হবেনা সেটাকেই দিনরাত ট্রেন্ড আর স্মার্টনেস বলছে। এই নতুন মফস্বল তো আমার ফেলে আসা মফস্বলেও চাইতেও অন্ধ। যদি বাইরের কিছু নিতেই হয় তাহলে অন্তত আমেরিকানটাই নেয়া শ্রেয়তর না? আশির দশক তো পুরোটাই এটাই ছিল। ভারতীয় আমেরিকান নিয়া আমার লাভ কি? আমার মফস্বলী মন বারবার এই প্রশ্ন করে। আবার এই প্রশ্নটাও করে; বাজার এখন এমন যে আমেরিকানও নিয়মিত ইন্ডিয়ান হইতে চায়। ইন্ডিয়ান সিনেমায় বিদেশী মেয়ে নাচে, ইন্ডিয়ান ইন্ডাষ্ট্রীতে পশ্চিমা পর্ণ তারকা মাইগ্রেট করে। হলিউডিতে ইন্ডিয়ান নায়ক অভিনয় করে। ঘটনা যদি বাজারেরই হয় তাহলে প্রথম প্রশ্ন জাগে এই বাজারে বাংলাদেশ কই? কতদূর পর্যন্তই বা বাজারে না ঢুকে থাকতে পারবো? নিজের বাজার না তৈরি করলে তার ভবিষ্যৎই বা কি?
কথা ছিল লুতুপুতু মার্কা হিন্দী গান/প্রেম ভালোবাসা বিষয়ক ঐতিহাসিক গল্প করবো, হ্যা হ্যা সেখানেই ফিরে আসছি। হিন্দী গান শোনার অভ্যাসতো এখনো যায় নাই, আর তাই আর রাজকুমারের, “ধোকাধারী” গানটা বেশ ভালো লাগছে শুনতে। কিন্তু কয়েকবার শোনার পরে, গানের মাঝখানে “টিডিক টিডিক টিক” ছন্দটা আসার সাথে সাথে পেটের মধ্যে গুরগুর করে উঠছে। কোথায় এটা শুনেছি, এইভাবে শুনেছি। কিন্তু কোনভাবেই মনে পড়ছে না। তিনদিন ধরে ঢেকুঁর উঠতেই থাকলো কিন্তু না, কোনভাবেই ইয়াদ হচ্ছে না। হচ্ছে না হচ্ছেই না। অবশেষে তিনদিন এবং অর্ধেক রাতের কোতাকুতি শেষে মনে পড়ল আরেএএএএএএ……..তাইতো….সেই তো……….এটাই তো………..।
আবার সেই কাকলী পর্ব। যখন কাকলীর পরোক্ষ প্রতিরোধে প্রতিবিপ্লবী হয়েও কূল কিনারা করতে পারছিলাম না তখন নিজের আত্ম মর্যাদার আশ্রয়ের জন্য একটা গান মনের ভেতরে ঢুকে গিয়েছিল, দিল জালে সিনেমার “হো নেহি সাকতা নেই এ হো নেসি সাকতা”। সময়ের তোড়ে একদম ভুলে গিয়েছিলাম। সালটা ১৯৯৬, উদিৎ নারায়ণ। অজয় দেবগণ এবং সোনালী বান্দ্রে। আরে তাইতো এখানেও সেই, “টিডিক টিডিক টিক” ছন্দটা। আরে এটাই তো আদী। খুব উৎফুল্ল হলাম সংযোগটা উদ্ধার করতে পেরে। এনজয় করলাম বেশ। তবে বেশিক্ষণ না। না না কাকলীর উপর কোন অভিমান নেই। শুনেছি ও লন্ডনে, ডাক্তার হওয়াটা সম্ভবত সম্পূর্ণ হয়নি, ভালো পাত্রের সাথে ভালো পাত্রী হয়ে গিয়েছিল বিদেশ। এরপর খবর জানিনা।
মূল কথাটা হল, এই গানটাও ভীষণ ডিরোগেটরি মিনিং এর। এখানে ভিডিওতে তথাকথিত এক নারীর সৌন্দর্যের পাল্লায় অন্য একজন স্থুলকায় নারীকে গণহারে অপমান করা হয়েছে এবং সেটাকে বৈধতা দেয়া হয়েছে। এই চিত্রকল্পটা ছাড়া শুধু গানটা আমার বেশ লাগলো, সুরেলা। কিন্তু গান যত সুরেলাই হোক, বাজারই তো। থাকতে হলে বরং বাংলা গানের বাজারে থাকি, বেশি করে থাকি। বাংলা গানের বাজার বাড়াই, আমেরিকা-ইন্ডিয়া ছাড়া তো অন্য দেশের গান আর সংস্কৃতি ভাষা আছে সেগুলো শুনি, শিখি, জানি। নিজেরটারে সম্মৃদ্ধ করি।
বাংলা সিনেমার অসাধারণ সব গান
বাংলা সিনেমার অসাধারণ সব গান নিয়ে পোষ্ট দিয়েছেন ব্লগার সুত্রধর। এই তার পোষ্টের লিংক:
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:৫৬