somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যৌন নিপীড়ন প্রসঙ্গ

২৭ শে নভেম্বর, ২০১০ দুপুর ২:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বেশ কিছু দিন ধরে বানের পানির মত খবর আসছে,নারী উত্তক্ত ও যৌন নীপিড়নের জন্য কিছু
অস্বাভাবিক মৃত্যুর।যদিও একই কারণে এর আগেও অনেক নিষ্পাপ কোমলমতি তরূনীকে
অকালে আত্থহত্যার মত পদ বেছে নিতে হয়েছে।খবরগুলো আমাদের আবেগ-অনুভূতিকে
তীব্রভাবে নাড়া দেয়।অনায়াসে মন খারাপ করে দেয়।এই যে জীবনগুলো গেল,তাদেরও
নিশ্চয় একটা নিজস্ব জীবনধারা ছিল,যেখানে তারা বাঁচতে চেয়েছিল,উপভোগ করতে
চেয়েছিল পৃথিবীর রূপ-রস।কিন্তু তারা দেখল,এই পৃথিবী তাদের,জীবন তাদের অথচ
তাদের নয়।যেন অন্য কারও ইচ্ছা-অনিচ্ছায় তাদের বাঁচা-মরা।কিন্তু কেন এমনটি
ঘটছে তা জানা জরূরী হয়ে পড়েছে।কোন শারীরিক ব্যাধির যেমন কিছু বাস্তব
ভিত্তি হিসেবে দায়ী থাকে মানুষের খাদ্য,পানীয়,অভ্যাস,পরিবেশ তেমনি
সামাজিক ব্যাধির সম্পর্ক সমগ্র সমাজের পরিবেশের সঙ্গে,সমাজে মানুষে মানুষে
যে সম্পর্ক গড়ে উঠে ও কার্যকর থকে তার সাথে।আমাদের জানা দরকার একটি ছেলে
কখন কোন নারীকে উত্ত্যক্ত করে,আরও স্পষ্ট করে বললে যৌন নিপীড়ন
করে।স্কুল-কলেজ গেটের সামনে দাড়িয়ে যে উঠতি বয়সের ছেলেগুলো মেয়েদের শিস
দেয়,তারা নিশ্চয় কোন না কোনভাবে এমন মানষিকতায় গিয়ে পৌঁছেছে যেখনা মেয়েদের
উত্ত্যক্ত করার মধ্যে দিয়ে নিজেদের জীবনের সৃজনশীল প্রতিভাগুলো নষ্ট করছে
এবং লক্ষ্য করার বিষয় এতে তারা বিকৃত আনন্দ পাওয়ার চেষ্টা করছে।সেই সঙ্গে
খেয়াল করুন, একই সময়ে ছেলেগুলোরও কিন্তু স্কুল কলেজে গিয়ে বিদ্যা অর্জনের
কথা ছিল।পাশাপাশি এমনও দেখা যাচ্ছে যে,প্রাপ্ত বয়স্ক এমন কি কিছু কিছু শিক্ষকও এ ধরনের ঘৃন্য কার্যকলাপের সাথে জড়িয়ে যাচ্ছে। এই যে তারা এরকম বিকৃত মানষিকতা মনের ভেতর দিনের পর দিন পোষন করছে, এর কারণ কি কেইবা এর জন্য দায়ী।সেই প্রশ্নের উত্তর জানা জরূরী, এর জন্য কি শুধু পরিবারই দায়ী,নাকি আরও ব্যাপক অর্থে ঐসমাজ ব্যবস্থা দায়ী,যার মধ্য দিয়ে একটি শিশু বেড়ে উঠছে,তার চারপাশ ও নিজেকে জানছে।এখন প্রশ্ন হল,সেই সমাজ তাকে নারী সম্পর্কে কি ধারনা দিচ্ছে।যদি সেটা আমরা খুজে বের করি তবে দেখব যে,এই সমাজ ব্যবস্থা নারীকে মানুষ ভাবতে শেখায় নি,কেবল মাত্র বস্তুসার শুন্য ভোগ্যপন্য ওঅসহায় ভাবতে
শিখিয়েছে,শিখিয়েছে যে তারা অবলা,শিখিয়েছে অসন্মান করতে।আমাদের
শিক্ষা-সংস্কৃতি,পরিবেশ-প্রতিবেশ,সামাজিক,অর্থনৈতিক,রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
কত নড়বড়ে হলে,নিজস্ব সংস্কৃতি থেকে কতটা দূরে সরে গেলে এমন হয়টা।এর দায় কি
গোটা সমাজ ব্যবস্থার নয়।কোন উন্নত ও সুসভ্য সমাজে নারীকে উত্তক্ত ও যৌন নিপীড়নের মত ঘৃন্য অপরাধ সংঘঠিত হবে না।আমাদের সমাজ ব্যবস্থা যে কত ঘুনে ধরা,তা বোঝার জন্য এটুকুই
যথেষ্ট।অন্য আরেকটি দিক হল,এই ছেলেগুলো(যার মধ্যে বিভিন্ন বয়সের লোকেরাও অন্তর্ভূক্ত) যে প্রশাসনের নাকের ডগায় মেয়েদের উত্ত্যক্ত করাসহ প্রত্যাখিত হলে মেরে ফেলার হুমকি-ধমকি দিচ্ছে এবং তাদের কথা ও কাজে তার প্রমাণ রাখছে-এর উৎস কি,কাদের মদদে ওরা পূষ্ট হচ্ছে,কাদের ছায়াতলে বসে ওরা জীবন নেয়ার হুমকি দেয়।অথচ সরকার,প্রশাসন বরাবরের মত
নিরব।যদিও বিভিন্ন সময় কঠোর শাস্তির কথা বললেও প্রশাসন দৃশ্যত কোন
পদক্ষেপ নেয় না,ফলে তারা উৎসাহিত হচ্ছে।লক্ষ করবার বিষয়,এই রকম
ঘটনায় যখন কেউ মারা পড়ে তখন সরকার প্রধান জীবনের বিনিময়ে ক্ষতিপূরণ
হিসেবে পরিবারগুলোকে নাম মাত্র টাকা দিয়ে নিজের মহানুভবতা জাহির করেছে
এবং এই কাজেই তাদের উৎসাহ দেখা যায়।জনসম্পৃক্ত সমস্যা সমাধানে ও জনগণের দুর্দশা লাঘবে তাদের কোন মাথা ব্যথা ণেই।এই যে শাসক সরকার গুলো এসব ক্ষেত্রে
ধারাবাহিকভাবে নমনীয়,তা থেকে স্পষ্টত বোঝা যায়,জনগনের সমস্যা ও দুর্দশা
লাগবে এদের কোন সৎ ইচ্ছা নেই ।তারা নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত,ব্যস্ত হিংসা-প্রতিহংসা ও ক্ষমতা দখলের রাজনীতিতে যার ফাপড়ে পড়ে সাধারন জনগন প্রতিনিয়ত পিষ্ট হচ্ছে।কাজেই এই সমাজ ব্যবস্থা আমাদের কারোরই জন্য নিরাপদ নয়।তাই জন্য,এই পচা-গলা সমাজ ব্যবস্থার বিপরীতে একটি উন্নত সত্যিকারের জনগনের গনতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্টার লক্ষে নিজেদের সুসংগঠিত করে একটি সামাজিক ও অতিঅবশ্যই রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে তোলা ও তাকে চুড়ান্ত পরিণতি দেয়া সময়ের দাবি হয়ে দাড়িয়েছ।যার মধ্য দিয়ে নিশ্চিত হবে সবার জন্য বাসযোগ্য ন্যায্য সমাজ ব্যবস্থা,যেখনে নারীকে যৌন নিপীড়নের মত অপরাধ সংঘঠিত হবে না।আর সেটা করতে হলে সাধারন জনগনের সুসংগঠিত হওয়া ছাড়া সামনে অন্য কোন পথ খোলা নেই।
০৯।১১।২০১০ তারিখে লিখিত
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে নভেম্বর, ২০১০ বিকাল ৩:৫৬
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×