" যে ব্যক্তি একজন মুসলিমের দোষ গোপন রাখবে, দুনিয়া আর আখিরাত দুই জায়গাতেই আল্লাহ্ তার দোষ গোপন রাখবেন।” [সহীহ্ মুসলিম]
গতকাল থেকে একটা ব্যাপার লক্ষ করলাম। অনলাইনে সিডাটিভ হিপনোটিক্স ভাইয়ার কিছু ব্যক্তিগত আলাপ সংবলিত কয়েকটা স্ক্রিনশট দেখলাম। ব্যাপারটা আমাকে বেশ কষ্ট দিয়েছে। ভাইয়ার সাথে পলিটিক্যাল, রিলেজিয়াস অনেকভাবেই মতানৈক্য থাকতে পারে আমার। কিন্তু, এভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা একেবারেই অনুচিত।
পুরুষ জন্মগতভাবেই লিচু প্রকৃতির। কেউ লিচুগিরি একটু বেশি করে, কেউ বা কম। কিন্তু, সেটা সীমার বাইরে যাচ্ছে কিনা, সেটাই দেখার বিষয়। এই ফেসবুকে কোন বাপের ছেলে বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবে না, যে, তার ফ্রেন্ডলিস্টের কোন না কোন মেয়ের সাথে তার নিজে থেকে দুটো কথা বলতে ইচ্ছে হয়নি, কিংবা চ্যাট করেনি, কিংবা প্রোফাইলের ছবি দেখে মুগ্ধ হয়ে প্রেম আসেনি মনে। যে এটা অস্বীকার করবে, সে অবশ্যই ভন্ড আর হিপোক্রিট। এটা পুরুষ মানুষের ধর্ম। আল্লাহ নিজেই এ ধরনের করে বানিয়েছেন আমাদের। অপোজিট জেন্ডারের মেম্বারের প্রতি আকর্ষণ থাকবে এটাই স্বাভাবিক। খুব আহামরি দোষের কিছু তো নয় এটা, নাকি?? এই টান না থাকলেই বরং ভেজাল। আরে ভাই, আমাদের প্রত্যেকের জীবনেই এমন কিছু না কিছু আছেই, যা নিয়ে আমরা কেউই গর্বিত না। যা নিয়ে আমাদের মাঝে অপরাধবোধ কাজ করে। আমরা কেউই ধোয়া তুলসি পাতা না। আমরা মানুষ। to err is human
এভাবে কারো পার্সোনাল জিনিসপত্র ইউজ করে এভাবে আক্রমণ করা আমার মতে, কাপুরুষতার লক্ষণ। যতক্ষণ পর্যন্ত ভদ্রতার সীমার ভিতরে আছে, তা টিকিয়ে রেখে কোন মেয়ের সাথে দুটো কথা বললে জাত-ধর্ম যায় না। আর আধুনিক যুগে তো না-ই। তার উপর কারো পার্সোনাল বিষয় ডিসক্লোজ করা একেবারেই বাজে কাজ। অ্যাফেয়ার থাকা অবস্থায় দুজনের মাঝে অনেক কিছুই ঘটতে পারে। সেটা তাদের ব্যাক্তিগত ব্যাপার। কেন ভাই অন্যের কাজে নাক গলানো? কিছু করে-টরে ভিডিও ছড়িয়ে দেয়া যেমন গর্হিত কাজ, ইনবক্সের স্ক্রিনশট ছড়িয়ে দেয়াও তেমন। হয়তো বা বিষয়টা একজন মেয়ের জীবনে যেমনভাবে আঘাত হানে, একটা ছেলের জীবনে হয়তো আনেনা ঠিক, কিন্তু পাপ তো পাপই। তার আবার রকমফের কী?? তুমি নিজে যদি ধোয়া তুলসি পাতা হউ, তাহলে উপরের হাদিসটা তো অন্তত মেনে চল। অন্যের দোষ গোপন করলে তোমার ক্ষতি হবেনা ভাই। ক্ষতি হবে না।
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত, “একজন লোক রাসূল (সা) এর নিকট আসলেন এবং বললেন:
“হে আল্লাহ্র রাসূল! আমি মদিনার থেকে দূরবর্তী এক স্থানে এক মহিলার সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হয়েছি। সুতরাং, আমাকে আমার প্রাপ্য শাস্তি দেন’। উমর ইবনুল খাত্তাব (রা) তখন বললেন: ‘আল্লাহ্ তো তোমার পাপ গোপন রেখেছিলেন, তবে কেন তুমি তা গোপন রাখলেনা?’” [সহীহ্ মুসলিম]
আমরা সবাই আসলে মুনাফিক, হিপোক্রিট। নিজের ঘরে খাওয়ার পানি নাই, অন্যজনের বদনায় পানি কম কেন তা লইয়া ফালাফালি। নিজেদের আমলনামার খবর জানিনা। অন্যজনের পাপের দিকে কেমনে আঙ্গুল তুলি?
পরিশিষ্টঃ তোমরা যারা স্ক্রিনশট নিয়ে এসব করে বেড়াইতেছ, এসব যে গীবত ও পরনিন্দা হচ্ছে- এটা কি নিজেরা বুঝতেস? নাকি এখানেও গীবতের পাপ ও অবৈধতা নিয়ে আমাকে কুরআন-হাদিসের রেফারেন্স দিতে হবে??
ফেসবুক লিঙ্কঃ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৬