লেখাটা লেখার সময় কিছুটা দ্বিধা এবং সঙ্কোচ আমাকে প্রবাল ভাবে পেয়ে বসে। কারন আমাদের পাঠকসমাজ এখনো পরিপূর্ণ ভাবে কনো খবর বা ব্লগ মূল্যায়ন করতে পারেন না বা করেন না। তারা সবকিছুকে খুব সহজে সরলীকরণ বা সমীকরণ করে ফেলে। তাছাড়া লেখাটা লেখার আগে আমার নিজস্ব অভিজ্ঞতা শূন্য ছিল বললেই চলে। এখন সামান্য অভিজ্ঞতার আলোকে বাস্তবতার একটা সমীকরণ করা যাক ।
একটা চাকরি চাই, তাহলে প্রতিদিনের আর্থিক টানাপোড়ন থেকে মুক্তি মিলবে। একটা চাকরি চাই, তাহলে স্বপ্ন গুলো সত্যি হবে । একটা চাকরি চাই. তাহলে আরকেউ বাঁকা চোখে তাকাবে না ।একটা চাকরি চাই, তাহলে পরিবারের আর কেউ বোঝা ভাববে না । একটা চাকরি চাই, তাহলে মাকে আর ছেঁড়ে শাড়িটা পরতে হবে না । একটা চাকরি শুধুই একটা চাকরি। তাহলে ?????? তাহলে !!একটা চাকরিই!!! কি আমার জীবন !!!! না চাকরি আমার জীবনের বাস্তবতার আকাঙ্ক্ষা । তাহলে কি ভাবে পূর্ণ হবে আমার আকাঙ্খা !!! কে পূরণ করবে আমি নাকি সরকার নাকি ঈশ্বর??
প্রসঙ্গ : আমি নাকি আয়না
প্রায় ১.৫ লক্ষ হাজার বর্গ মাইলের এই বাংলাদেশের ভূসম্পত্তি হীন এক বাঙালি আমি । নিজেকে বাঙালী দাবি করার পিছনে একটা কারন অবশ্যই আছে। আমি বাংলিশে কথা বলতে পারি, আমি পৈহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ খায়, ১৪ই ফেব্রুয়ারী, ২১শে ফেব্রুয়ারী ,২৫শে মার্চ বা ষোলই ডিসেম্বর সে যায় হোক!!! সেদিন আমি ফেসবুকে লম্বা একটা স্ট্যাটাস দিই দিই। সব চেয়ে বড় কথা আমার সরকার বা তার কর্মকর্তা বা তার সেই পাতি নেতা যেই হোক, সে যদি আমার মাথায় কাঁঠাল ভেঙ্গে খাই তাহলেও, আমি তার দিকে ফিরেও তাকায় না। প্রস্ন করাতো দূরে থাক। আপনারাই বলুন নিজেকে বাঙালী বলার জন্য আর কি যোগ্যতার প্রয়োজন?? এতো কিছু থাকার পাশাপাশি আমার কিন্তু আর একটা বিশেষ যোগ্যতা আছে এবার সেই গল্প বলি......
মায়ের গর্ভ থেকে আমার এই স্বর্গভূমিতে আশার পরপরি বাবা- মা বা / পাশের বাড়ির মাষ্টার মশায়ের মুখ থেকে সেই একটা কথায় শুনে এসেছি “ লেখা পড়া করে যে গাড়ি ঘোড়া চলে সে ” বা “ সরকারি চাকরি সোনার হরিণ” আস্তে আস্তে বুজতে পারলাম পড়তে হবে । তখন থেকে একটা জিনিস ভাবতাম সরকার বোধহয় আমাদের কষ্টের সংসার দেখে বাবা-মাকে কথা দিছে। শুরু হলো অনিচ্ছার বিরুদ্ধে আমার ২৫ বছরের এই দীর্ঘ যাত্রা । একটা সময় হাতে পেলাম দেশের সর্বচ্চ ডিগ্রির সন্মান । তখন ভাবলাম এবার সরকারের কাছে যাওয়া যাক। একটা বিশ্বাস ছিল বুকের মাঝে অনেকটা অন্ধবিশ্বাস। ভাবতাম সরকার আমাকে নিরাশ করবে না। ২৫ বছরের প্রায় সবটা সময় আমি তাকে দিয়েছি। কতো ঈদ-পূজা গেছে বুজতেই পায়নি। এককথায় এতোটায় সময় যা আমি আমার ঈশ্বরকেও দিয় নাই।
অতঃপর দেখা মিললো আমার মায়ের দেখানো সেই সোনার হরিণের। কিন্তু ওমাঃএকি!!! সোনার হরিণের পিছনে লুকিয়ে আছে এক বাঘ । ভয়ে ভয়ে এগিয়ে গেলাম তার আছে । আছে যাবার পর জানতে চাইলো বিশেষ যোগ্যতা। বলতে শুরু করলাম অনেকটা এমন ভাবেই...... আমার দেশে সীমান্তে লাশ ঝুলছে, ট্রাক-ট্রাক অস্ত্র এসেছে, বুদ্ধিজীবীদের রাত-দুপুরে খুন করা হয়েছে,সামরিক শাসন হয়েছে, গুম হয়েছে, অর্থ পাচার হয়েছে, কোটি কোটি টাকা ঋণ খেলাপি হয়েছে,ছেলের সামনে মা ধর্ষিত হয়েছে, একের পর এক ভাইয়ের জন্ম হয়েছে, আমি আমার এই দেশে কখনো আমার ধর্মীয় পোশাক সাচ্ছন্দে পরতে পারিনি , আমার রক্ষক নেতারা সবসময় আমার ভক্ষক হয়েছে, এমন আরো কতো কি!!!!!! তারপরও আমি মেনে নিয়েছি আমার বাক-স্বাধীনতা থাকতে নেই। নিচ্ছুপ থেকেছি সবসময় ।
এভাবে অনেকক্ষণ কথা বলার পর........................... সে যা চাইলো!!!! তাহা আমি কার আছে চাইবো তাহাতো আমার আছে নেই। আমি ঈশ্বররে কাছে চাইবো নাকি বাবার কাছে!!!!!!!!! ঈশ্বরের কাছে চাইবো কি করে আমার ২৫ বছরের কতোটুকু সময় দিছি তারে!!!!!!!!!! নাকি বাবাকেই বলবো ,বাবা ওরা তোমার ভিটাবাড়ি চাই !!!!! কিন্তু কি করে বলবো এতে যদি আমার বাবার অন্ধবিশ্বাস ভেঙে যায় সরকারের প্রতি। এখন নিজের কাছে খুব জানতে মন চাইছে............ আমি কতোটা ঈশ্বরের আর কতোটা সরকারের!!!!!!!!!!!!!!!!!
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মে, ২০১৭ রাত ১০:৩৭