ঢাকা শহরের প্রতিটি বাসে মহিলা ও শিশু ও প্রতিবন্ধীদের জন্য বাস ভেদে ৯টি থেকে ১৩ টি পর্যন্ত সংরক্ষিত আসন রয়েছে। কিন্ত মজার ব্যাপার হচ্ছে এই আসন গুলো তিন ধরনের মানুষের জন্য সংরক্ষিত থাকলেও এগুলো সবার কাছে মহিলা আসন হিসেবে ই জনপ্রিয়। তাছাড়া যেহেতু নির্দিষ্ট করে দেয়া নেই কোন সিট প্রতিবন্ধী মানুষের জন্য তাই এটা মহিলা সিট হিসেবেই সকলের কাছে বিশেষ করে মহিলা যাত্রীদের কাছে পরিচিত হয়ে গেছে। এর ফলে প্রতিবন্ধী যাত্রীদের বেশিরভাগ সময় দাড়িয়ে যাতায়াত করতে হয় কেননা একজন মহিলাকে উঠতে বলাটা অনেক সময় সম্ভব হয়না আবার অনেকসময় বলেও খুব একটা লাভ হয়না।
যাইহোক আমিও মাঝেমধ্যে বি আর টি সি বাসে যাওয়া আসা করি। এই বাসে সংরক্ষিত আসন ১৩ টি। এই সংরক্ষিত আসনে সবসময় মহিলারা ই বসে থাকেন। এমনকি প্রতিবন্ধী যাত্রী বাসে উঠলেও কাউকে সিট ছেড়ে দিতে দেখিনি। সিট পেলে বসে যাই, কখনো কখনও দাড়িয়ে ও যাই।
যেহেতু আমার জন্য সংরক্ষিত আসন আছে তাই সাহস করে একদিন বলেই ফেললাম নিজের অধিকারের কথা।
আমি: এক্সকিউজ মি আপু এখানে ১৩ টি আসনের মধ্যে প্রতিবন্ধীদের জন্য সিট আছে যদি কিছু মনে না করেন আমাকে একটি সিট ছেড়ে দেন। আমার পায়ে সমস্যা দাড়িয়ে যেতে পারিনা।
মহিলা যাত্রীরা: সবাই তাদের পাশের যাত্রীর সাথে একবার করে চোখাচোখি করে চুপচাপ বসে রইলেন কিন্তু কেউ সিট ছাড়লেন না।
আমি: আবার বললাম প্লিজ আপু একটা সিট ছাড়ুন।
মহিলা যাত্রীরা: এবার সবাই সবার দিকে তাকিয়ে একটু হাসলেন কিন্তু সিট ছাড়লেন না।
যাইহোক আমি এবার বাসের হেল্পার কে ডেকে বললাম
আমি: ভাই এখানে তো প্রতিবন্ধীদের জন্য সিট আছে। তো সেই সিট কোনটা? আমার তো পায়ে সমস্যা আমাকে একটু বসার ব্যাবস্থা করে দেন।
হেল্পার্: আপা এখানে তো সব মহিলারা বসে আছে তারা যদি নিজেরা না ওঠে আমি কেমনে উঠাইয়া দেই বলেন। তার চেয়ে আপা আপনি এক কাজ করেন পরের বাসে আসুন। আশা করছি সিট পাবেন।
আমি: চুপচাপ দাড়িয়ে রইলাম।
এখন কথা হচ্ছে প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষিত আসনের বাস্তবতা যদি এই হয় তাইলে এটা করার কি দরকার ছিল?
(আসুন আমরা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গী পাল্টাইয়া এবং প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার নিশ্চিত করি?