somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সেলিনা জাহান প্রিয়া
আমি সেলিনা জাহান প্রিয়া , জন্ম পুরান ঢাকা, নাজিরা বাজার , নানা বাড়িতে ।বাবার বাড়ি মুন্সী গঞ্জ , বড় হয়েছি ঢাকা ।স্বামীর বাড়ি কিশোর গঞ্জ ।ভাল লাগে ঘুরে বেড়াতে , কবিতা , গল্প , উপন্যাস পড়তে অজানাকে জানতে । ধর্ম বিশ্বাস করি কিন্তু ধর্ম অন্ধ না ।

কোরবানীর গরু কিনছেন নাকি বিষ কিনছেন ?

৩০ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





আপনাকে সচেতন করতে আমি এই লেখাটি মাধ্যমে আপ্নাকে জানাতে যে, কি উপায়ে কোরবানীর হাটের জন্য গরু মোটাতাজা করন করা হয় ! আপনি হয়তো বলতে পারেন গরু মোটাতাজা করন পদ্ধতি প্রয়োগ করলে সমস্যা কোথায় ? আমি বলবো অবশ্যই সমস্যা রয়েছে।

সাধারনত প্রাকৃতিকভাবে একটি গরু মোটাতাজা ও বলিষ্ঠ্য হলে সেই গরুটির মাংস খেতে কোন বাঁধা নেই । কিন্তু যদি কৃত্রিম উপায়ে গরু মোটা তাজা করা হয়ে থাকে এবং সেটি যদি নিয়ম না মেনে করা হয় তবে সেই গরুর মাংস আপ্নার জন্য বয়ে আনতে পারে , ব্রন / নিদ্রাহীনতা / মাথাঘোরা / ওজন বৃদ্ধি পাওয়া / যে কোন ক্ষত দেড়িতে প্রশমন / সাময়িক উত্তেজনা / উচ্চ রক্তচাপ/ইনফেশনের সম্ভাবনা বেড়ে যাওয়া / ঝাপসা দৃষ্টি /স্মৃতিভ্রষ্ট / অস্থিরতা / মাথা ব্যাথা / পেপ্টিক আলসার / প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া / মাথা ঘোরা / বিরক্ত বোধ সৃস্টি হওয়া / গর্ববর্তী মায়েদের বিকলাঙ্গ সন্তান ।

বলতে পারেন এই রোগ গুলো কেন হবে বা হওয়ার যুক্তিটাই বা কি ?
সাধারনত নিয়মের বাইরে গরু মোটাতাজা করনে ব্যবহার করা হয় ডেক্সামেথাসন নামক এক ধরনের স্টেরয়েড , যা মানব দেহের জন্য মাত্রাতিরিক্ত গ্রহনের ফলে উপরের সমস্যাগুলো দেখা দেয় ।

আসুন জেনে নেই ডেক্সামেথাসন আসলে কি ?
ডেক্সামেথাসন কোরটিকোস্টেরয়েড গ্রুপের একটি সিনথেটিক হরমোন। এটি প্রাকৃতিক হরমোনের চেয়ে প্রায় বিশগুণ শক্তিশালী। ফলে স্বল্পমাত্রায় ব্যবহার বেশ কার্যকরী। সাধারনত সুযোগ সন্ধানী গরু ব্যবসায়ীরা তাদের গরুকে দ্রুত মোটাতাজা করনের উদ্দেশ্যে এই ওষুধটি গরুর উপর প্রয়োগ করে , ফলে গবাদি পশুর কিডনি, লিভার ও শরীরে অতিরিক্ত পানি জমে এবং পশুটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।

ওষধটিকে গরু ব্যবসায়ীরা পাম্প বড়ি বলে থাকে। ফার্মেসীতে খুব সহজেই পাওয়া যাচ্ছে এসব নিষিদ্ধ ভয়ানক মেডিসিন। যা একটি গরুকে তিন বেলাই খাবারের সাথে গুড়া করে দেয়া হয় । এই ধরনের পশুর মাংশ খেলে গর্ববর্তী মায়েদের গর্বের সন্তানের উপরও মারাত্মক প্রভাব পরবে। এতে জম্ন নেয়া সন্তান বিকলঙ্গও হতে পারে।

অনেকে মনে করেন গরু মোটাতাজাকরনে ডেক্সামেথাসনের কোন ভূমিকা নেই তবে মোটাতাজাকরন কালীন সময়ে মূলত যেসব গরু দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে অর্থাৎ সীমান্তের ওপার হতে আসে সেসব গরুতে কিছু জরুরী অবস্থার সৃষ্টি হয় বা হতে পারে যার কারনে ডেক্সামেথাসন প্রয়োগ করতে হয় , কিন্তু আমাদের দেশে সাধারনত গরুকে মোটা তাজা করার উদ্দ্যেশেই ডেক্সামেথাসন প্রয়োগ করা হয় ।

ডেক্সামেথাসন একটি প্রেসক্রিপশন ড্রাগ অর্থাৎ চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ব্যতীত এর ক্রয়বিক্রয় ও ব্যবহার করা উচিত নয়। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, বাংলাদেশের ফার্মেসিগুলোতে গিয়ে যে কেউ এটি কিনতে পারেন। ফলে অবৈধ উপায়েও ডেক্সামেথাসন ব্যবহৃত হচ্ছে।

এখন হয়তো বলতে পারেন ডেক্সামেথাসন প্রয়োগের কারনে গরুর মাংস খাওয়া বন্ধ করে দেবো ? বা কোরবানী দেয়া বন্ধ করে দিবো ?
আমি বলবো না , তা করতে হবে না । আপ্নি যদি স্টরয়েড প্রয়োগ করা গরু চিনতে পারেন তবে সেই গরুটি কোরবানী বা খাওয়ার জন্য আপ্নি কিনবেন না । তাহলেই আপ্নি ও আপ্নার পরিবার ঝুঁকিমুক্ত থাকতে পারবেন ।

বলতে পারেন কোন কৌশলে স্টেরয়েড প্রয়োগ করা গরু চিনতে পারবো ?

কয়েকটি লক্ষন দেখলেই আপ্নি বুঝতে পারবেন যে গরুটি স্টেরয়েড প্রয়োগ করা ,

☆ এই ধরনের গরু ফার্মের মুরগির মতো কম নরাচরা করে , এক যায়গায় শান্তভাবে বসে থাকে , কিন্তু এর দৃশ্যমান শারীরিক কাঠামোর সাথে এর শান্ত স্বভাব বেমানান মনে হবে ।

☆ সাধারনত প্রাকৃতিকভাবে যে সকল গরু স্বাস্থ্যবান হয়ে থাকে সেগুলো খুব দুস্টু ও বেপরোয়া গোছের হয় । এবং সবসময় গুতা গুতি ও দৌড়ঝাপ করে থাকে ।

☆ একটা জিনিস লক্ষ্য করে দেখবেন অনেক সময় বয়স্ক মানুষের শরীরে পানি আসে , তখন হাত পা ফুলে যায় , ফুলে যাওয়া হাত পায়ে আঙুল দিয়ে টিপ দিলে বা চেপে ধরে ছেড়ে দিলে সেই স্থানটি পুনরায় আগের অবস্থানে ফিরে আসতে সময় নেয় এবং স্থানটি দির্ঘ সময় দেবে থাকে । স্টেরয়েড প্রয়োগ করা গরুর বেলাতেও ঠিক এ্কই প্রক্রিয়ায় চেপে ধরলে স্থানটি দেবে থাকে । মেডিকেল এর ভাষায় একে ইডিমা (Edema) বলে

☆ স্টেরয়েড প্রয়োগ করা গরুর রানে প্রচুর মাংস থাকে। স্বাভাবিকের চাইতে এর রান অনেক মোটা দেখা যায় ।

লেখাটি আপ্নাদের উপকারে আসবে এবং আপ্নি কোরবানীর গরু শনাক্ত করে একটি সঠিক নিরাপদ গরু কিনতে পারবেন । ঈদ হোক সকলের জন্য আনন্দের সকলের জন্য নিরাপদ । নিজে সচেতন থাকুন পরিবারের সদস্যদের নিরাপদে রাখুন ।

তথ্যসুত্রঃ
ব্লগার শুভকবি
উইকিপিডিয়া
ড্রাগ্সডটকম
ইন্টার নেট
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১:৩৩
১০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছায়ানটের ‘বটমূল’ নামকরণ নিয়ে মৌলবাদীদের ব্যঙ্গোক্তি

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



পহেলা বৈশাখ পালনের বিরোধীতাকারী কূপমণ্ডুক মৌলবাদীগোষ্ঠী তাদের ফেইসবুক পেইজগুলোতে এই ফটোকার্ডটি পোস্ট করে ব্যঙ্গোক্তি, হাসাহাসি করছে। কেন করছে? এতদিনে তারা উদঘাটন করতে পেরেছে রমনার যে বৃক্ষতলায় ছায়ানটের বর্ষবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বয়কটের সাথে ধর্মের সম্পর্কে নাই, আছে সম্পর্ক ব্যবসার।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৫০


ভারতীয় প্রোডাক্ট বয়কটটা আসলে মুখ্য না, তারা চায় সব প্রোডাক্ট বয়কট করে শুধু তাদের নতুন প্রোডাক্ট দিয়ে বাজার দখলে নিতে। তাই তারা দেশীয় প্রতিষ্ঠিত ড্রিংককেও বয়কট করছে। কোকাকোলা, সেভেন আপ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×