অরন্য বলল প্রিয়া এই চা বাগানের রাস্তা দিয়ে যাও একটু সামনে গেলেই ম্যানেজারের বাঙলো । আমি তোমার জন্য ঐ বাজার থেকে বোতলের পানি নিয়ে আসি । এই বাগানের পানি তুমি পান করতে পারবে না ।
চা বাগানে আমি সম্পুর্ন একা একা হেঁটে চলছি । ভয় ভয় লাগছিলো ! নিজের মনকে নিজেই সান্তনা দিলাম এত সবুজ সুন্দর কি সের ভয় , ” ভুত প্রেত বলতে পৃথিবীতে কিছু নেই সব ই মনের সৃস্টি , মানুষ কে মনের ভুত বেশী পায় , মানুষ মনে মনে যা কল্পনা করে সেটাই সে চোখের সামনে দেখতে পায় ” নিজেকে নিজে এই ভাবে স্বান্তনা দিতে লাগলাম আর হাঁটতে লাগলাম । মনে জোর এসে গেলো সামনে একটা মেয়ে বাগানে কাজ করছে । এক্টু জোরে শব্দ করে বলে উঠলাম যাক ভয় কেটে গেল ” সব কিছু মনের কল্পনা , আমি আর ভয় পাবো না “কথা গুলো মনে মনে বলছি আর ঐ মেয়েটার দিকে হেঁটে যাচ্ছি । মনের দেয়ালে একটা হাসি প্রতিধ্বনি হয়ে মিলিয়ে গেলো ঠিক তখন কে যেন আমার কানের কাছে ফিস ফিস করে বলে উঠলো ” ঠিকাছে ! আর ভয় পেতে হবে না ” ঐ মেয়েটাও তুমি । আমি আরও একটু হেসে মেয়েটার কাছে গিয়ে বলাম বোন চা বাগানের ম্যানেজার বাবুর বাঙলো টা কোন দিকে ।
কিন্তু এ কি মেয়েটা আমার দিকে তাকাতেই আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম । আমার সারা শরীর ভয়ে নীল হয়ে গেল ! মেয়েটা দেখতে তো আমার মতো । এ দেখি আমিই । শুধু পোশাক ভিন্ন । আমার দিকে তাকিয়ে মেয়েটা হেসে যাচ্ছে । আমার হাসি আমি দেখছি । আমি জ্ঞান হাড়িয়ে বাগানে পরে রইলাম । একটা ছেলে কচু পাতা করে আমার চোখে মুখে জল ছিটিয়ে দিল । আমি তাকিয়ে দেখি
আরে আমার প্রিয় অরন্য আমি ওকে ধরতে যাব কিন্তু একি পোশাক অরন্যের শরীরে । যেন এক চা শ্রমিক । অরন্যের কাঁদে আমার অবিকল নকল মেয়েটা দাড়িয়ে সেই আগের মতো হাসছে । অরন্য আমাকে চিনছে না । আমাকে বলছে
কে আপনি । ওদের দুই জন কে দেখে আমি আরও অবাক হয়ে বেশী ভয় পেলাম । চার দিক আলোর ঝলমলানি । আমি আবার জ্ঞান হারাম ।
যখন আমি আবার চোখ মেলে তাকালাম । তখন আমি চা বাগানের বাঙলোর ভিতরে । ডাক্তার আমার পাশে , চা বাগানের ম্যানেজার , আমার প্রিয় বান্ধবী নুর জাহান । অরন্য আমার সামনে এসে বলল প্রিয়া মনি কি হয়েছিল ।
আমি শুধু বললাম তোমার আমার মতো এই বাগানে আরও দুই জন প্রিয়া আরন্য আছে ।।
সবাই হেসে বলল কবি এটা তোমার কল্পনা মানুষের মতো মানুষ আছে নাকি একেই রকম ।
------------------------- চলমান ।।