যেদিন জরিনার ঘরে মন্টুকে এক সাথে পাবার পর শুক্কুরবার জুম্মাবাদে মন্টু আর জরিনাকে কোমরে দড়ি বেঁধে গাছের সাথে পেঁচিয়ে রেখে
বিচারকার্য শুরু করেছিলো তোরাব আলী শিকদার
সেদিন পার্কে, স্টৃটে আর উন্মুক্ত আকাশের নীচে সঙ্গমকালীন সময়ে
পুলিশ কেন সঙ্গমনিরতদের চাঁদর ঢেকে দিয়ে সঙ্গমে ব্যাঘাত ঘটায়
জানতে চেয়ে জার্মানীর যুবকেরা রাজপথ কাঁপিয়েছিলো
যুবক যেদিন ঘুমিয়ে পড়েছিল-
সে ছিলো তাঁর সময়ের সবচে’ উৎকৃষ্ট, অত্যধিক প্রার্থিত
লাঠি ও রুটিতে সমৃদ্ধ প্রশ্নাতীত কেতাদুরস্ত যুবক
টর্চের আলো ফেলে অত্যন্ত সন্তর্পনে বৃদ্ধ হেঁটে চলেছে
বাহারি আলোয় ঝাঁঝিয়ে ওঠা সুপার মার্কেটগুলোর ভেতর দিয়ে
সুদীর্ঘ একশ বছরে নিদ্রা শেষে।
সে ছিলো তাঁর সময়ের সব থেকে স্টাইলিস্ট যুবক
বৃদ্ধের কাছে আজকের শহুরে যুবকদের ফ্যাশন আলাদা কিছু ঠেকছে না।
আলু কত করে দিচ্ছেন?
কেজি তেইশ, দুই কেজি নিলে পঁচিশ
চেলোপাড়া বৃজের ওপর নিশ্চয় এরচে’ দাম কম ভেবে
কথা না বাড়িয়ে হাঁটা দিল
আলুর দর দাম কী?
বাইশ টাকা?
কম হবে?
কমও হবে না, বেশিও না
আরও এক টাকা কমের আশায় হাঁটা দিল মন্টু মিয়া
পত্রিকায় ফলাও করে রিপোর্ট বেরোলো-
কার্যত এক টাকার কোনো বাজার মূল্য নেই
তবু এক টাকা কম পাবার আশায়
মন্টু মিয়া ঠাওর করার চেষ্টা করছিলো যে আলু আট টাকা সেরে মনকে মন বেচে ছিলো
সে আলু আট টাকা হয় কী করে?
মন্টু মিয়া হিশাবই মেলাতে পারে না
মন্টু মিয়ার ভাবনা বাড়তেই থাকে
ভাবতে ভাবতে চতুর্দশীর শুক্লাপক্ষের চাঁদ মরে যায়
সারিয়াকান্দির দুই পাড় উপচে জল গড়ায়
মন্টু মিয়ার শোবার ঘরে
তবু মন্টু মিয়া বুঝে উঠতে পারে না
শহরের বড় সায়েবরা থিরিজি না কী জির জন্যি রাজপথ কাঁপায়
তাঁর ঘরে তখন বিদ্যুতের তার নাই
মন্টু মিয়া বুঝে না জরিনার ঘরে তোরাব আলী শিকদার রাত কাটাইলে
মসজিদের ইমাম সাব কিচ্ছু কয় না আর
মন্টু মিয়ারে গাছে বাইন্ধা রাখার মানে কী
কিছুতেই বুঝে না মন্টু মিয়া
মন্টু মিয়া বুঝে না শেষমেশ এক টাকা বাঁচাইতে গিয়া বাড়ি চলে আসে আলু ছাড়া
মন্টু মিয়া আজো বুঝে উঠতে পারে না ওপরওয়ালা ক্যান মরে না
মন্টু মিয়া ঠাহর করতে পারে না ওপরওয়ালারে কারা মারে না
মন্টু মিয়ার অস্ফুট চীৎকারে কেঁপে উঠে সারিয়াকান্দির দুই ধার ।