১) এমএস করার প্রথম দিকের কথা। সকাল ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ক্লাস, ক্যাম্পাসে ৩টা পর্যন্ত আড্ডা মেরে তারপর বাড়ী ফেরা। এমএস ছাত্রছাত্রীদের আড্ডায় অনেক সময়েই লেকচারার'রা যোগ দিতেন, অনেকেই আমাদের ব্যাচমেট, অথবা ২/১ বছরের বড়। এমনই কোন আড্ডায় আমার সাথে পরিচিত হয়েছিলেন এক লেকচারার, অন্য ডিপার্টমেন্টের। তেমন সখ্যতা ছিলনা সে সময়, শুধু পরিচয়। তো সেই লেকচারার এক ছুটির দিন সকালে হুট করে হাজির হলেন আমার বাসায়, সকাল ৮টা বাজে, শীতের দিন। খুব অবাক হলাম, জানতে চাইলাম গরীবের বাড়ীতে আগমনের হেতু। উনি যা বললেন তাতে কিছুটা বিরক্ত আর অবাক হলাম। ভার্সিটির ব্যাচেলার কোয়ার্টারে গত দু'দিন থেকে এক সাথে ৯টা পিসি কাজ করছেনা। বললাম যে ভাই, এটা সম্ভবত ইলেক্ট্রিসিটির সমস্যা থেকে হয়েছে, আপনি টেকনিকাল ডিপার্টমেন্টে যাগাযোগ করেন, এক সাথে ৯টা পিসি ওই এক কারনেই নষ্ট হতে পারে, আর ইলেক্ট্রিসিটি ঠিক না করে ঐ পিসি গুলোতে হাত দেয়ার কোন মানেই হয়না। উনি বললেন সমস্যা পাওয়ার সাপ্লাই থেকে না, বলে মুখ টিপে হাসেন। আমার মাথায় ঢুকছেনা কি করে এক সাথে ৯টা পিসি নষ্ট হতে পারে। ইচ্ছে না থাকলেও (আমি সব সময়ই রাত জাগি, সকালে ঘুমাই) গেলাম ওনার সাথে ক্যাম্পাসে। গিয়ে দেখি সব গুলো পিসিতে একই সমস্যা, পুরোপুরি বুট হয়না, বুট হওয়ার মাঝেই এক লাস্যময়ী স্বল্প বসনা ললনার ছবি মনিটর জুড়ে হাজির হয় ঘটনা কি? জানা গেল - ছুটির দিন বলে ভাইজানেরা সবাই মিলে বেশ কয়েকটা এডাল্ট ছবি এনে দেখার পরেই এই অবস্থা সিডি গুলোতে ভাইরাস ছিল, দেখার পর পরই সব কয়টা পিসি আক্রান্ত হয়। বেচারা লেকচারার সাহেবেরা লজ্জায় কাউকে বলতেও পারছেননা, সেই জন্য সমবয়সী আমাকে ধরে এনেছেন (আধা ঘন্টা পরেই ১৫০০/- টাকা আমার পকেটে )
২) ডিপার্টমেন্টের সবচেয়ে জাদরেল স্যার আমাকে ডেকে তুললেন তার গাড়ীতে, নিয়ে গেলেন তার বাসায়। সমস্যা - কম্পিউটার ভাইরাস। ষাটোর্ধ ওই শিক্ষকের দাবী - ইমেইল চেক করতে গিয়ে ভাইরাস ধরেছে। কৌতুহলবশত ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারের হিষ্টোরী চেক করতে গিয়ে শেষ দুটো ভিজিটেড সাইটের নাম দেখে হাসি চেপে রাখা কষ্টকর হয়ে পড়লো। নাম দেখেই বোঝা যায় ১৮+ সাইট ফেরার সময় স্যার বললেন - আমি বিশ্বাস যে তুমি প্রাইভেসী শব্দটার মানে জানো - জ্বি স্যার ... জ্বি স্যার
৩) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবীণ শিক্ষকের বাসায় গিয়েছি কম্পিউটার সমস্যা সমাধান করতে। হালকা নাস্তার পর গেলাম কম্পিউটার রুমে, স্যারের মেয়ে ব্যাবহার করে ওই পিসি। সমস্যার বিবরন শুনেই বুঝতে পেরেছিলাম সমস্যা সি ড্রাইভে স্পেস কমে যাওয়ায় হচ্ছে, সহজ কাজ। পিসি চালু করবো, স্যারের কন্যা এসে দাড়ালেন পাশে, বললেন - কোন ড্রাইভে ঢোকা যাবেনা, মাই ডকুমেন্ট দেখা যাবেনা। স্পষ্ট করে বললেন - "আমার স্ক্যান করা অনেক ছবি আছে পিসিতে, আপনি নিয়ে নিতে পারেন সে গুলো"। মেয়েটা অবস্যই অনেক সুন্দর, তাই বলে কাজের শুরুতেই এমন কথা? বললাম যে - কোন ড্রাইভে না ঢুকে আমি কাজ করতেই পারবোনা, আমাকে সি ড্রাইভ ক্লিন করতে হবে, কিছু কিছু জিনিস হয়তো সরিয়ে অন্য ড্রাইভে রাখতে হতে পারে। আর আপনার ছবি তো আমি পিসি থেকে পকেটে করে নিয়ে যেতে পারবোনা, নেবার কোন ইচ্ছেও নেই আমার। তবুও উনি কাজ করতে দেবেননা। কাজ না করেই চলে এলাম। দু'দিন পরে আবার ডাক এলো, আবার গেলাম। এবারের শর্ত - সি ড্রাইভ ছাড়া আর কোথাও ঢোকা যাবেনা আর স্যারের মেয়ে আমার পাশে চেয়ার নিয়ে বসে থাকবেন। শর্ত মেনে কাজ করছি, স্যারের মেয়ের সাথে টুকটাক কথা হচ্ছে। হঠাৎ খেয়াল করলাম মেয়ে স্বযত্নে তার হাতে থাকা কি যেন আড়াল করছে, দেখি একটা কিচেন নাইফ তার হাতে কোন রকমে কাজ শেষ করে এক দৌড়ে বাড়ী, আর যাইনি এর পরে
রিয়েল লাইফ টেকি জুকস
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মে, ২০০৯ রাত ৮:০৭