somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

খেলাঘর (শেষ পর্ব)

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



প্রথম পর্ব
দ্বিতীয় পর্ব
তৃতীয় পর্ব


১৬.

প্রায় দুই বছর পর মামার বাসায় এসেছে তৃণা। বাসাটাকে এখন মামার বাসা না বলে নাবিল দাদার বাসা বলাই ভাল। নীতুর মৃত্যুর পর আজিমপুরের বাসা ছেড়ে দিয়ে জামসেদ চৌধুরী কল্যাণপুরের একটা ভাড়া বাসায় উঠেছিলেন। তার কয়েক মাস পরেই নাবিলের একটা চাকরী হয়। চাকরিতে দ্রুত উন্নতির পথে থাকা দাদার বিয়েও হয়ে যায় ফুটফুটে নিশাত ভাবীর সাথে। বলা যায়, নিশাত ভাবীই বদলে দিয়েছে নাবিলের ভাগ্যকে। মেয়েদের ব্যাপারটাই কেমন অন্যরকম। কোন কোন মেয়ে জানে গড়তে, আর কোন কোন মেয়ে জন্মেছেই শুধু ভাঙ্গার জন্য! দাদা এখন মামা-মামী আর নিশাত ভাবীকে সহ উত্তরার একটা ফ্ল্যাট বাড়িতে থাকে। এই বাড়িতে আনন্দের সব উপকরণ আছে, শুধু নীতু নেই! নীতুর কথা মনে পড়লেই তৃণার বুক একটা হাহাকারে ভরে উঠে। লোকলজ্জার ভয়ে নীতুর কেইসটা নিয়ে মামা খুব একটা বেশি নাড়াচাড়া করেননি। আহারে! বড় মায়াবতী মেয়ে ছিল নীতু! বড্ড বোকা!

তৃণার বেড়াতে আসা উপলক্ষ্যে নিশাত বিশাল আয়োজন করে ফেলেছে। এত আয়োজন দেখে তৃণার বেশ লজ্জা করছে।

“ভাবী! এতকিছু রান্না করার কি দরকার ছিল? আমি কি গেষ্ট নাকি?”

“আহা! আমার ননদ এই প্রথম আমাদের নতুন বাসায় এল। আমার কি একটু শখ আহ্লাদ নাই?”

“দাদা অফিস থেকে কখন ফিরে ভাবী?”

“ও ফিরেছে তো তৃণা। বাসায় চা পাতা নাই। আনতে পাঠালাম।“

ঠিক সেই মুহূর্তে কলিংবেল বেজে উঠল। পাখির মত দরজার দিকে উড়ে গেল নিশাত। তৃণা সেদিকে তাকিয়ে মৃদু হাসল। নিশ্চয় দাদা এসেছে। তার দুরন্ত নিশাত ভাবীটা এখনো নতুন বউদের মত আচরণ করে।

দাদাকে দেখে তৃণার মনটা ভাল হয়ে গেল। কি সুন্দর লাগছে দাদাকে দেখতে! বহুদিন আগে দেখা উদভ্রান্ত চেহারা একেবারে মুছে গেছে মুখ থেকে।

“তোমার দাদার দিকে তাকিয়ে কি দেখ তৃণা? হিহিহি”

“দাদা আগের চেয়ে অনেক হ্যান্ডসাম হয়ে গেছে ভাবী। সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে। এটা তোমাকে দেখে আন্দাজ করছে পারছি।“

“বকুলের সাথে প্রেমের সময় ও কি তোমার দাদা এরকম হ্যান্ডসাম ছিল? হাহাহা।“ প্রাণখোলা হাসি হাসল নিশাত।

নাবিলও হাসল। বকুলের সাথে আগের সম্পর্কটা নিয়ে নিশাত প্রায়ই মজা করে। ভালোই লাগে শুনতে। তৃণা মুগ্ধ দৃষ্টিতে নাবিল আর নিশাতের হাসিমাখা মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। তাদের দুজনকে দেখে মনে হচ্ছে জীবন কত-ই না সুন্দর! বিয়ের পর তৃণার জীবন ও কি এভাবে বদলে যাবে? তৃণা ছোট্ট একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল।

“দাদা, ভাবী—শোন, তোমরা তো সবই জানো। মামা-মামীকে মা জানিয়েছেন। ফরমালিটিস করবনা। তাও আমার বিয়ের কার্ড দিয়ে যাচ্ছি। চলে এস দাদা ১৪ তারিখ সবাইকে নিয়ে। ভাবী, আমার কিছু টুকিটাকি কেনাকাটা আছে। তোমাকে নিয়ে একদিন বের হব। কবে সময় দিতে পারবে পরে ফোন করে জানিও।“

“আচ্ছা তৃণা। আমি শুক্রবারে ফ্রী মোটামুটি। অফিস ছুটি। আজকে রাত্রে খেয়ে যাও!”

“না ভাবী, মায়ের ওখানে রাতে খাব। দাদা, তোমার কাছে বকুল বুবুর ফোন নাম্বার বা ঠিকানা আছে? তাঁকে একটা কার্ড দিতে ইচ্ছা করছে।“

নিশাত ভাবী চোখ টিপে বলল, “দাঁড়াও তৃণা, বকুলের শ্বশুড়বাড়ির ঠিকানা আমার কাছে আছে। বকুল বুবুর কাছে তোমার দাদার কোন পুরোনো চিঠিপত্র থাকলে নিয়ে এস তো! দেখব তোমার দাদা কেমন রোমান্টিক ছিল আগে!”

তৃণা নাবিলদের বাসা থেকে বের হল বিকালের দিকে। উত্তরার “ক্যাফে আইল্যান্ড” রেস্তোরার সামনে গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল আলম। তৃণাকে দেখে গাড়ি এগিয়ে এল। তৃণা উঠে পড়ল গাড়িতে।

“এখন কোথায় যাবে তৃণা?”

“বকুল বুবুর শ্বশুরবাড়ির ঠিকানা নিয়ে এলাম। কাঁটাবনের কাছে। ভাবছি মা-র বাসায় যাওয়ার আগে বকুল বুবুকে একটা কার্ড দিয়ে আসি। কি বলেন আপনি?”

“আমার কোন সমস্যা নাই তৃণা। রূপবতী একটা মেয়েকে সাথে নিয়ে ঘুরতে কার না ভাল লাগে! হাহাহা।“

“নাহ! বিয়ের পরে ঘুরাঘুরি করাই ভাল। নাহলে লোকে খারাপ বলে। আর তাছাড়া আমি মোটেই রূপবতী না, দেখতে খারাপ।“

আলম তৃণার ছেলেমানুষী কথা শুনে একটা অট্টহাসি দিল। মাঝে মাঝে আলমের মনে হয় তৃণার মাঝে একটা বাচ্চা মেয়ে আটকা পড়ে আছে। আলমের সাথে তৃণার বিয়ে সেপ্টেম্বরের চৌদ্দ তারিখ। পারিবারিক ভাবেই বিয়ে ঠিক করেছেন তৃণার মা। তৃণা পড়াশোনা শেষ করে ঢাকায় সেটেলড হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আলম পেশায় একজন ইঞ্জিনিয়ার। তৃণার সম্মতিতেই বিয়ে হচ্ছে। আলমকে ভালোই লেগেছে তার।

“তৃণা গান শুনতে চাও? গাড়িতে অনেক ভাল গান আছে।“

“রবীন্দ্রসংগীত আছে? খেলাঘর বাঁধতে লেগেছি গানটা?

“আছে মনে হয়। দেখি!”

গাড়িতে গান বাজছে। তৃণার প্রিয় গান। খেলাঘর বাঁধার গান। তৃণার চোখে জল। সে তীব্র আবেগে চোখ বন্ধ করল। গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ল অশ্রুরেখা। আলম তৃণার দিকে তাকাল। তারপর ষ্টীয়ারিং এ এক হাত রেখে অন্য হাত দিয়ে তৃণার হাত স্পর্শ করে বলল, “ছিঃ তৃণা! কাঁদতে নেই! আমাকে নিয়ে তুমি অনেক সুখী হবে, মেয়ে!” কান্নার দমকে কেঁপে উঠল তৃণা। ঠিক এভাবেই একদিন সাজ্জাদ তার হাত স্পর্শ করে বলেছিল, “ছিঃ কাঁদেনা মিস হরিণী! আমাকে ছাড়াই তোর বাকি জীবনটা ভালভাবে কেটে যাবে, দেখিস!”

বহুদিন আগে একজনের হাতের স্পর্শে ছিল আশ্বাসভঙ্গের কথামালা, আর আজ প্রায় দুই বছর পরে আরেকজনের হাতে তৃণা পেল আশ্বাসের ছোঁয়া। সে আশ্বাস নতুন এক খেলাঘর গড়ার, নতুন কোন খেলার জনকে নিয়ে!

১৭.

বকুল বুবু তৃণাকে দেখে প্রচন্ড রকম উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়ল। সে কি করবে ঠিক বুঝে উঠতে পারছেনা। সেই পিচ্চি তৃণার নাকি বিয়ে! তৃণা তাকে বিয়ের কার্ড দিতে এসেছে! বকুল বুবুর আনন্দমাখা মুখ দেখে তৃণার ও ভাল লাগছে ভীষণ। বকুল বুবু হড়বড় করে কথা বলেই যাচ্ছেন। তৃণা অর্ধেক কথাই শুনছে না। সে তাকিয়ে আছে আলোকিত এক মুখের দিকে। মুখটা দ্রুত বলে যাচ্ছে কথা, “তৃণা রে, নীতু মরে যাওয়ার পর আমার এত্ত মন খারাপ হল বুঝলি। আমার বাবুর তখন এক মাস বয়স। ওকে রেখে কি করে আজিমপুরে যাই বল? তারপরও তোর দুলাভাই বলল, যাও দেখে আস। তোমাদের এতদিনের পরিচয়! তোর দুলাভাই অনেক ভাল মানুষ বুঝলি তৃণা? আর দশটা পুরুষ মানুষের চেয়ে অনেক ভাল। আমার মেয়েটাও হয়েছে সেইরকম বাপ ভক্ত। এই যে আজকেও বাপের সাথে বাইরে গেল। তুই আসার একটু আগেই ওরা বের হল। একদিন পাজি মেয়েটা কি করল শোন, তোর দুলাভাই খাটে বসে আছে...”

“বকুল বুবু, একটু থাম। জামাইয়ের গুণগাণ করতে করতে তো পাগল হয়ে যাবা। আমার হবু জামাই ও গাড়ি নিয়ে বাইরে বসে আছে। আমাকে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে হবে।“

“সেকী! জামাই মানুষ! আর তুই কিনা বাইরে বসিয়ে রাখলি? কোথায় বসে আছে? ডেকে নিয়ে আসি চল!”

“আরে না না। দরকার নাই বুবু। ও তো এখনো জামাই হয়নি। বিয়ের পরে তোমাদের বাসায় একবেলা খেয়ে যাব ওকে নিয়ে। এখন উঠি। আচ্ছা শোন...?”

“কিরে?”

“ইয়ে, বুবু তোমার কাছে কি নাবিল দাদার আগের কোন চিঠি ছিল? না...মানে এমনি...আমাদের নিশাত ভাবী খুব মজার মানুষ তো! উনি মজা করে চাচ্ছিলেন। থাকলে দিও তো দু’একটা!”

বকুলের মুখ হঠাৎ থমথমে হয়ে গেল। সে কঠোর গলায় বলল, “না ঐসব কিছু নাই।“

“আচ্ছা, আসি বুবু। বিয়েতে এসো কিন্তু! তুমি আসলে আমার ভাল লাগবে।“

তৃণা বের হয়ে যাবে ঠিক এমন মূহুর্তে বকুল আবার তৃণাকে ডাকল, “তৃণা শোন একটু। কিছুক্ষণ বস। নাবিলের একটা চিঠি মনে হয় আছে আমার কাছে। নিয়ে যা। ওর বঊকে দিস।“

তৃণা অবাক চোখে বকুলের দিকে ফিরে তাকাল। বকুল ততক্ষণে ঘরের ভেতর ঢুকে গেছে চিঠি আনতে।

নাবিলে চিঠিটা হাতে পেয়ে তৃনা একটু উশখুশ করতে লাগল। ওর খুব ইচ্ছা করছে চিঠিটা খুলে দেখতে। একসময় সে যখন মামার বাড়িতে ছিল, দাদার বহু চিঠি সে বকুল বুবুর হাতে পৌছে দিয়েছে। অনেক চিঠি খুলে পড়েও ফেলত। এই চিঠিটা কি সেই খুলে পড়ে ফেলা চিঠিগুলোর একটা? চিঠি পড়ে ফেলত দেখে বকুল বুবুর হাতে কতই না কানমলা খেয়েছে তৃণা একসময়! সেই দিনগুলো! ভালোবাসা আর মায়ায় জড়ানো এক একটা দিন!

“তৃণা, শোন তোর ছটফটানি দেখতে বিরক্ত লাগছে। চিঠিটা খুলে পড়তে চাইলে পড়। আমার সামনেই পড়। ঐসব আগের ফিলিং টিলিংস এখন আর আমার নাই। অনেকদিন তো হল!”

তৃণা সাবধানে চিঠিটা খুলল। চিঠির কাগজটা একটু লালচে। পুরোনো বলেই বোধহয়!

“প্রিয় সোনামণি,

আজকে রাত্রে একটা স্বপ্ন দেখলাম। আমার আর তোমার বিয়ে হয়ে গেছে। স্বপ্ন নাকি সাদাকালো হয়। অথচ আমি পরিষ্কার দেখলাম তুমি লাল বেনারসী পরে বসে আছ। হাতে একটা ভারী সোনার বালা। অনেক সুন্দর লাগছিল তোমাকে দেখতে। বাস্তবের চেয়েও সুন্দর।

বিয়ের পর আমাদের বাবু হবে। একটা মেয়ে বাবু, আর একটা ছেলে বাবু। হেহে। মজা হবে না বল? বুঝতেই পারছি চিঠি পড়তে তোমার লজ্জা লাগছে। তাই আর কথা না বাড়াই। আমি আমাদের মেয়ে বাবুর জন্য একটা নাম ঠিক করেছি। ছেলেবাবুর জন্য কোন নাম ঠিক করিনাই। ওটা তুমি ঠিক করবে। আমাদের চমৎকার একটা সংসার হবে, সোনামণি!

ওহো! মেয়ে বাবুর নাম-ই তো বলা হলনা। আমরা আমাদের মেয়ে বাবুর নাম রাখব “রূপকথা।“ কেন রূপকথা নাম রাখব জান? কারণ, আমাদের ভালোবাসার গল্পটাতো রূপকথার মত-ই সুন্দর, তাইনা?

ভালবাসি তোমাকে! অনেক বেশি ভালোবাসি!

ইতি,
তোমার হাবলুস”


চিঠি পড়া শেষ করে তৃণা কিছুটা ইতস্তত করে জিজ্ঞেস করল, “বকুল বুবু দেখেছ! কত ভুলো হয়েছি। তোমার মেয়েটার নামই জানতে চাইনি।“

বকুল ফ্যাকাসে ভাবে হাসল। তারপর ধীর গলায় বলল, “আমার বাবুটার নাম আফিফা তাবাসসুম। ডাকনাম ফিহা।“

তৃণা দেখল বকুল বুবুর চোখ জলে টলমল করছে। সে গাঢ় গলায় বলল, “ফিহা মণিকে আমার আদর দিও বকুল বুবু।“

বকুল বুবুর চোখের জল টুপ করে ঝরে পড়ার আগেই তৃণা বকুল বুবুর বাসা থেকে বের হয়ে রাস্তায় নেমে এল। নিয়নবাতির আলোয় ঝলমলে শহরে সেদিনের চাঁদনি পসর রাতটা ঢেকে গেছে। ঠিক যেভাবে ফিহার আলোয় ঢেকে গেছে বকুল বুবুর বহু বছর আগেকার আবেগের রূপকথা!

১৮.

এক ঘন্টা হল প্লেন ছেড়ে দিয়েছে আমেরিকার উদ্দেশ্যে। তিতলী প্লেনের সিটে হেলান দিয়ে গভীর ঘুমে। সাজ্জাদ আর তিতলীর বিয়ে হয়েছে আজ প্রায় দুই বছর হল। অথচ এখনো সাজ্জাদের বিশ্বাস হয়না এই অসামান্য রূপবতী বালিকাটা একান্ত-ই তার! তিতলীর হাত ধরেই সাজ্জাদের জীবনে এসেছে সাফল্য। সাজ্জাদ পেয়েছে আমেরিকায় পড়াশোনার সুযোগ। ভাগ্যবিধাতা মুখ তুলে চেয়েছে সাজ্জাদের দরিদ্র পরিবারের দিকে।

সাজ্জাদ গভীর মমতা আর ভালোবাসা নিয়ে তিতলীর দিকে তাকাল। আজকে তারা বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে অনেকদূরের দেশে। “প্রিয় বাংলাদেশ! ভালো থেক”। মনে মনে বলল সাজ্জাদ। তারপর চোখ বন্ধ করল। কি আশ্চর্য! চোখের সামনে মায়ের মুখ ভাসছেনা, ছোট বোনের মুখ ভাসছেনা—অথচ বহুদিন পর বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় ভেসে উঠছে তৃণার মুখ! কেমন আছে তৃণা? সাজ্জাদের প্রিয় মিস হরিণী! সাজ্জাদ বন্ধ চোখেই দেখল, তৃণা গভীর মমতায় তার শার্টে একটা একটা করে বোতাম লাগিয়ে দিচ্ছে পিন দিয়ে। আরো পুরোনো কিছু ছবি ভেসে উঠছে বন্ধ চোখে। তৃণার হাতে কিছু টাকা। তীব্র ভালোবাসায় তৃনা সাজ্জাদকে বলছে, “টাকাগুলো রেখে দাও সাজ্জাদ। হাতখরচ লাগবে না?” সাজ্জাদ ছটফট করে চোখ খুলে ফেলল। তৃণার সাথে কিছুটা অবিচারই হয়ত করেছিল সে। কিন্তু জীবনে বড় হতে হলে কিছু আবেগকে খুব শক্ত হাতে ঠেলে ফেলে দিতে হয়—এটাও বুঝেছিল সাজ্জাদ। সে ভালোবাসে তিতলীকে, সত্যি ভালোবাসে। আর কাউকে না! অনেক ভাল একটা মেয়ে এই রূপবতী বালিকা! তিতলী! সাজ্জাদের তিতলী বেগম!

প্লেন উড়ে যাচ্ছে সাদা তুলোর মেঘের মাঝখান দিয়ে। সাজ্জাদ ঘুমন্ত তিতলীর নিষ্পাপ মুখের দিকে পরম মায়ায় তাকাল। এই মায়াবতী বালিকাকে নিয়েই সে গড়বে তার স্বপ্নের খেলাঘর! এই খেলাঘরের সিংহাসনে তিতলী সাজ্জাদের নতুন খেলার জন। মাঝে মাঝে হয়ত ‘মিস হরিণী’ তৃণার স্মৃতি এসে হানা দিবে। দিক না! ক্ষতি কি? মানুষের জীবনটাই তো এক বিচিত্র খেলাঘর!

(সমাপ্ত)
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:৪৪
৫১টি মন্তব্য ৫০টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×