কোন ঋতু ছিল না , তখন আর
একটাই ঋতু ছিল, সুখ ছিল তার নাম !
বাগিচায় রঙিন ফুল- অলিতে ছিল মুখর
পাখির কলরবে নীরবতা ছিল নীরব !
কোন বালাই ছিলো না দুখের
সুখ ঋতুর বাতাসে বসন্তের ঘ্রাণ ছিলো প্রখর
হৃদয় তাজা হতো পলাশ শিমূলের টানে
বাসন্তিক রঙ ছিল রোদের পালকে
স্বর্গের নহর বইতো পলে পলে !
গোধূলি তার শেষ রেখা টানতো
হাজার রঙের স্বপ্ন ছড়িয়ে ,
দিনের সুরভি লুকাতো রাতের গহীনে
নববধুরা হারাতো অদেখা সুখের মিছিলে !
তীরে ঘেঁষা কাশবনেরা আমায় নিয়ে করতো উল্লাস
নদীরা থাকতো প্রমত্তা বারোমাস ,
বোশেখ শেষে ভেঙ্গে যেতো তার বাঁধ
প্লাবিত হতো মাঠ-ঘাট কৃষানের অবারিত প্রান্তর
কিষাণির ঠোঁটে ঝরতো ফসল তোলার উচ্ছ্বাস
তখন বাতাসে মিশে থাকতো হেমন্তিকার সুবাতাস।
সন্ধ্যা নামতো ঝোনাকি পাখার ভরে ;
তখন চাঁদের ভেলায় করে বাঁধ ভাঙা জোয়ার আসতো
সেই জোয়ারে ভাসতো উন্নাসি মন
রূপকথার মাঝি নিঃশব্দে পালাতো আমায় নিয়ে
তার ছিল মন মাতানো পালতোলা নাও
আর এক সাগর ছিলো গহীন !
নিস্তব্ধ রাতে দূরবনে বাঁশি বাজাতো রঙিলা রাখাল
সেই সুরের মাদকতায় রমণীরা রাত কাটাতো নিদ্রাহীন
-তার হাত ধরে পথ হারাবার লোভে,
কিন্তু সে বাঁশিওয়ালা বাঁশি বাজাতো চাঁদের সেই রূপসীকে
ধরায় নামিয়ে আনার তরে ।
পৃথিবীর রমণীতে তার কোনো লোভ ছিলো না
তাই কারো সুখের ঘর ভাঙতো না ,
জোছনার পসরায় তখন সেখানে স্বর্গের হাঁট বসতো
আর বিনে পয়সায় সুখ কিনা যেতো !
কিন্তু সেই সুখ ঋতুটা বহুদিন হল
লুকিয়ে পড়েছে আমার শৈশবের অন্তরালে
কালের গর্ভে লীন হতে হতে ঢুকে পড়েছে ঐ কৃষ্ণ-গহ্বরে ।।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুন, ২০১৮ রাত ৮:৩৭